শাহরুখের সবচেয়ে বড় ফ্লপ ছিল সবচেয়ে বড় বাজেটের সিনেমাও, ৩ সুপারস্টার মিলেও বাঁচাতে পারেননি
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2024/11/02/mv5byzllmmvhmjuty2uwys00mwy2lthhzgmtmdhhntfizjcymzi0xkeyxkfqcgc._v1_.jpg)
শুধু বলিউড নয়, ভারতেরই সবচেয়ে বড় তারকা শাহরুখ খান। চার বছর বিরতি নিয়ে ২০২৩ সালে বড় পর্দায় ফিরে এসেই দুটি বড় ব্লকবাস্টার—'পাঠান' এবং 'জওয়ান'—উপহার দিয়েছেন বলিউডের বাদশাহ। গত তিন দশক ধরে আর কোনো অভিনেতা তার সুপারস্টারডমকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি।
আদিত্য চোপড়ার 'দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে' (ডিডিএলজে) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে শাহরুখের ভাগ্যের মোড় ঘুরে যায়। ১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া এ ছবি দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন বক্স অফিসের রাজা।
১৯৯৫ সালে শাহরুখের মোট সাতটি চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছিল। এর মধ্যে 'ডিডিএলজে', 'করণ অর্জুন'-এর মতো ব্লকবাস্টার যেমন ছিল, তেমনি ছিল 'জমানা দিওয়ানা' ও 'গুড্ডু'র মতো ফ্লপও।
তবে ওই বছরে বিশাল বাজেটে নির্মিত তার আরেকটি ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পরে। সেটিই তার সবচেয়ে বড় ফ্লপ সিনেমা। আর ওই ছবি ছিল সে সময়ে ভারতের সবচেয়ে ব্যয়বহুল চলচ্চিত্র।
শাহরুখের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ফল্প ছবিটির নাম 'ত্রিমূর্তি'। এর পরিচালক মুকুল এস আনন্দ।
১১ কোটি রুপি বাজেটে তৈরি 'ত্রিমূর্তি' ছিল সে সময় ভারতের সবচেয়ে ব্যয়বহুল চলচ্চিত্র। বাজেটের দিক থেকে ছবিটি 'আজুবা' ও 'শান্তি ক্রান্তি'-কে পেছনে ফেলে। ত্রিমূর্তি এ রেকর্ড ভাঙে ১৯৯৬ সালে মুক্তি পাওয়া কমল হাসানের ১৫ কোটি রুপি বাজেটের 'ইন্ডিয়ান'।
বক্স অফিসে শাহরুখ খানের 'ত্রিমূর্তি' বড় হতাশার নাম দাঁড়ায়, আয় করে মাত্র ৮ কোটি রুপি। যদিও 'ত্রিমূর্তি' রেকর্ড ওপেনিং দিয়েছিল। প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্র হিসেবে একদিনে ১ কোটি রুপি আয় করে ছবিটি। কিন্তু খারাপ রিভিউর কারণে প্রথম সপ্তাহান্তের পরেই ছবিটির আয় পড়ে যায়। তিন সুপারস্টার মিলেও উদ্ধার করতে পারেননি 'ত্রিমূর্তি'কে।
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2024/11/02/lrwi9i9v4vhb1.jpg)
শাহরুখ ছাড়াও জ্যাকি শ্রফ, অনিল কাপুর, প্রিয়া টেন্ডুলকার ও মোহন আগাসে এই অ্যাকশন থ্রিলার ঘরানার ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। উল্লেখ্য, অনিল কাপুরের চরিত্রে প্রথমে সঞ্জয় দত্তকে নেওয়ার কথা পাকা হয়েছিল। তাকে নিয়ে শুটিংও শুরু হয়। কিন্তু সঞ্জয় দত্ত বেআইনি অস্ত্র মামলায় কারাগারে যাওয়ার পর প্রজেক্টটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে প্রযোজক সুভাষ ঘাই অনিল কাপুরকে নেন সঞ্জয়ের বদলে। তারপর ফের চলচ্চিত্রটির শুট করা হয়। ছবি মুক্তির তারিখও এক বছর পিছিয়ে যায়। একাধিকবার পেছানোর পর অবশেষে ১৯৯৫-এর ২২ ডিসেম্বর ছবিটি মুক্তি পায়। কিন্তু প্রোডাকশনে বিলম্ব হওয়ায় ছবিটির বাজেট বেড়ে যায়, সেইসঙ্গে কমে যায় ছবিটি নিয়ে আলোচনা ও দর্শকের আগ্রহ।
চলচ্চিত্র নির্মাতা মুকুল আনন্দ ১৯৮৩ সালে গুজরাতি চলচ্চিত্র 'কানকু নি কিমাত' দিয়ে অভিষেক করেন। এর পরের বছর তিনি বলিউডে প্রবেশ করেন। 'হাম', 'অগ্নিপথ' ও 'খুদা গওয়াহ'সহ আরও নয়টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন তিনি। ওই সবগুলো ছবিতে ছিলেন অমিতাভ বচ্চন। 'ত্রিমূর্তি' ছিল তার সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্র। দুঃখের বিষয়, এটিই পরিচালক হিসেবে তার সর্বশেষ চলচ্চিত্র ছিল।
আরও দুটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করার সালমান খান ও সঞ্জয় দত্তকে নিয়ে 'দাস' নামে একটি ছবি নির্মাণে হাত দেন মুকুল আনন্দ। কিন্তু ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বরে হার্ট অ্যাটাকে মুকুল আনন্দ মারা গেলে এ ছবির কাজ অসমাপ্তই থেকে যায়।