৩২ মিলিয়ন ডলার বাজেটের ছবি; আয় মাত্র ১ লাখ ডলার; বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফ্লপ; কেনেনি কোনো ওটিটি প্ল্যাটফর্মও
বিশাল বাজেটে তৈরি সিনেমা। কিন্তু এত বাজেভাবে তৈরি যে বেশিরভাগ প্রধান এলাকায় ডিস্ট্রিবিউটরই পায়নি। ছবিটিকে প্রোপাগান্ডা আখ্যা দেওয়া হয়েছে। নির্মাণ শেষে যে 'পণ্য' হয়ে উঠেছিল, তার ফলে এই ছবিটিকে 'ত্যাজ্য' করেছিলেন খোদ পরিচালকই। এমন ঘটনা বিশ্বে বিরলই। একে ধরা হয় বক্স অফিসে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফ্লপ সিনেমা।
চলচ্চিত্রের ইতিহাসে বক্স অফিসে সবচেয়ে ব্যর্থ সিনেমার অপবাদটি জুটেছে ২০১৪ সালে নির্মিত স্পোর্টস ড্রামা ঘরানার 'ইউনাইটেড প্যাশনস'-এর কপালে।
ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা-র যাত্রা কীভাবে শুরু হলো, তা নিয়ে আবর্তিত হয়েছে ইংরেজি ভাষার সিনেমাটির গল্প। এ ছবির নির্মাণ ব্যয়ের ৯০ শতাংশ দিয়েছিল ফিফা।
কিন্তু ২৯-৩২ মিলিয়ন ডলার বাজেটে নির্মিত সিনেমাটি যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তির প্রথম সপ্তাহে মাত্র ৯১৮ ডলার আয় করে। বিদেশের বাজারেও ছবিটি বেশিরভাগ জায়গায় ব্যর্থ হয়।
রাশিয়া ও আশপাশের দেশগুলো থেকে ছবিটি সব মিলিয়ে কোনোমতে ১ লাখ ডলারের কিছু বেশি আয় করতে পারে। অনেক বাজারে তো 'ইউনাইটেড প্যাশনস' ডিস্ট্রিবিউটরই পায়নি।
'ইউনাইটেড প্যাশনস'-এর কপালে কেন এই দুর্গতি
ফিফার দুর্নীতি, গোপন চুক্তি ও জাল-জালিয়াতির সমস্ত অভিযোগ এড়িয়ে গিয়ে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের নায়ক হিসেবে উপস্থাপনের জন্য 'ইউনাইটেড প্যাশনস' সমালোচনার শিকার হয়। এছাড়া সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০১৫ সালের দুর্নীতির কেলেঙ্কারির সময়, যে সময় ফিফার প্রেসিডেন্ট সেপ ব্লাটারসহ অনেক শীর্ষ কর্মকর্তা পদত্যাগে বাধ্য হন।
সমালোচকরা ছবিটিকে 'প্রোপাগান্ডা' আখ্যা দেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান একে 'সিনেম্যাটিক বিষ্ঠা' বলে উল্লেখ করে। 'ইউনাইটেড প্যাশনস' রটেন টম্যাটোসে ০ (শূন্য) শতাংশ রেটিং পেয়েছে—অর্থাৎ একটিও ইতিবাচক রিভিউ জোটেনি ছবিটির ভাগ্যে।
'ইউনাইটেড প্যাশনস'-এ সেপ ব্লাটারের চরিত্রে অভিনয় করা টিম রথ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি ছবিটির চিত্রনাট্যে ফিফার দুর্নীতি না থাকা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন।
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'আমি তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, "দুর্নীতি কোথায়? পিঠে ছুরি মারা, গোপন চুক্তি—এসব কোথায়?"'
পরিচালক ফ্রেডেরিক অবার্টিনও সমালোচনার শূলে বিদ্ধ হন। তবে তিনি সিনেমাটিকে 'ত্যাজ্য' করে দেন। দ্য হলিউড রিপোর্টারকে অবার্টিন বলেন, তিনি 'প্রোপাগান্ডামূলক ছবি' ও 'কোস্টা-গাভ্রাস/মাইকেল মুর সিনেমার' মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু প্রজেক্টটি ফিফার প্রতি পক্ষপাতমূলক হয়ে পড়ে।
'ইউনাইটেড প্যাশনস' কোনো ওটিটি প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যায় না। নেতিবাচক প্রচারণার কারণে কোনো প্ল্যাটফর্ম সিনেমাটির ডিজিটাল স্বত্ব কিনতে আগ্রহও দেখায়নি।