পাহাড়ি নদী তিস্তা: এবারও কিছু হলো না!
ঐ পাহাড়ি মেয়ে বা নদীটির জন্ম হয়েছে উত্তর সিকিমের হিমালয় পর্বতমালায়। হিমালয়ের পাউহুনরি, জেমু হিমবাহ, গুরুদোংমার হ্রদ ও ছো লামো হ্রদ থেকে ওর জন্ম। প্রায় ৪, ৪৮০ বর্গ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীটি ভারতের সিকিম ও পশ্চিম বাংলা হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে আর সবশেষে মিশেছে বঙ্গোপসাগরের মোহনায়।
তার খরস্রোতা, পাহাড়ি পথে এই হিমালয় দুহিতা ভারতের মঙ্গন, গ্যাংটক, প্যাকিয়ং, কালিম্পং, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কুচবিহার জেলা পার হয়ে আমাদের রংপুর জেলার দহগ্রাম ছুঁয়ে লালমনিরহাট শহর হয়ে নীলফামারি জেলা পার হয়েছে আর গাইবান্ধার ফুলছড়ি এবং কুড়িগ্রাম জেলায় এসে হয়ে উঠেছে একান্তই বাংলাদেশের 'তিস্তা।
'তিস্তার বন্দনা তাই আমরা পাই ওপারের ঔপন্যাসিক দেবেশ রায় বা এপারের কথাশিল্পী ও নাট্যকার সৈয়দ শামসুল হকের কলমে। তিস্তা তাই ভারত ও বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া এক অভিন্ন নদীপ্রবাহ। কিন্তু বাংলাদেশ কি পাচ্ছে এই নদীর প্রবাহে তার বৈধ অধিকারটুকু? আন্তর্জাতিক নদী আইনের আওতায় আমাদের প্রাপ্য কি আমরা পাচ্ছি?
সম্প্রতি নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ভারত-বাংলাদেশ দ্বি-পাক্ষিক সম্মেলনে দুই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ রাষ্ট্র তথা সরকারপ্রধান একত্রিত হয়েছেন আলোচনায়। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বি-পাক্ষিক আলোচনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে আমরা অনেকেই যখন আশা করেছি তিস্তার নদীপ্রবাহে দেশ হিসেবে আমাদের ন্যায্য হিস্যা পাব বলে, ঠিক সে সময় খানিকটা বিপন্ন বিস্ময়েই অন্তর্জাল বা সামাজিক মাধ্যমে গত কয়েক বছর ধরে ভাষিক সূত্রে এক হওয়া দুই বাংলার মিলনক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেন তিস্তার প্রবাহে তার অংশ না পায়, সেই লক্ষ্যে কিছু বাংলাদেশ-বিদ্বেষী প্রচার চোখে পড়েছে।
যে বা যারা এই প্রচারে অংশ নিয়েছেন, অদ্ভুত ভাবে সেই অংশটি নিজেদের 'অসাম্প্রদায়িক' বলে দাবি করেন, দুই বাংলার মিলন ও সম্প্রীতির কথাও বলেন বেশ জোরে-শোরে। সেই মহলটিই কখনো বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা আবার কখনো 'কেন্দ্রে বিজেপি সরকার' ইত্যাদি অজুহাতে বাংলাদেশের তিস্তা নদীর প্রবাহে তার প্রাপ্য অংশীদারিত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। পৃথিবীর কোন রাষ্ট্রেই সংখ্যালঘু নির্যাতন কাম্য নয়, তার প্রতিবাদ দ্বি-পাক্ষিক স্তরে এবং রাষ্ট্রীয় বা কূটনৈতিক পর্যায়ে হতে পারে।
তাই বলে একটি দেশকে আন্তর্জাতিক নদী আইন লঙ্ঘন করে তার প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করতে হবে? আর ভারতের কেন্দ্রে বিজেপি সরকার না খোদ সীতারাম ইয়েচুরির নেতৃত্বে মার্ক্সবাদী সরকার, সেটা যতটা না বিবেচ্য, তার চেয়েও বেশি বিবেচ্য কিন্তু রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নদী আইনের আওতায় তার প্রাপ্য পাচ্ছে কি পাচ্ছে না! একই কথা বাংলাদেশের সাথে দেনা-পাওনার প্রশ্নে ভিন্ন কোন রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। সেটা বাংলাদেশে কোন বাম সরকার ক্ষমতায় আসুক বা ইসলামী দল ক্ষমতায় আসুক না কেন!
তিস্তা নদী প্রবাহের প্রাপ্য অর্জনে বাংলাদেশ এপর্যন্ত যত বঞ্চণা সহ্য করেছে:
জেনেভায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে অতীতে কর্মরত থেকেছেন ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ব্যারিস্টার হারুণ উর রশীদের এক বিশ্লেষণমূলক কলাম থেকে জানা যায় উপত্যকা থেকে উদ্ভুত নদী তিস্তায় সিকিম প্রাদেশিক সরকার ইতোমধ্যেই পাঁচটি বাঁধ স্থাপন করেছে এবং তিস্তার উপরভাগে আরো ৩১টি বাঁধ নির্মাণ করছে। এরপর এই পাহাড়ি নদী ভারতের পশ্চিম বাংলার ঢালে যেখানে নেমে এসেছে, সেখানেও ভারত গজালডোবায় একটি বাঁধ নির্মাণ করেছে।
ফলে এই নদীর ৮৫ শতাংশ প্রবাহই একটি সংযোগকারী খালের মাধ্যমে মহানন্দা নদীর উপরভাগের মাধ্যমে বিহারের মেইচি নদীতে গিয়ে পড়ে এবং এই মেইচি নদী আবার ফুলহার নদী হয়ে ফারাক্কা বাঁধের কাছে গঙ্গার উপরিভাগের প্রবাহে গিয়ে পৌঁছায়।
এই সব বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ভারতের রয়েছে নিজ রাষ্ট্রের প্রায় ৯.২২ লাখ হেক্টর জমিতে সেচের পরিকল্পনা এবং সেই লক্ষ্যে তিস্তা থেকে ক্রমাগত পানি প্রত্যাহার করা হয়েছে। ভারতের এই সেচ পরিকল্পনার কারণে তিস্তা অববাহিকায় বসবাসরত দুই কোটি দশ লাখ বাংলাদেশীর জীবন-জীবিকা বিপন্ন হয়েছে যদিও পশ্চিম বাংলার তিস্তা অববাহিকায় বাস করে মাত্র আশি লাখ এবং সিকিমের তিস্তা সংলগ্ন জনপদে বাস করে মাত্র পঞ্চাশ হাজার মানুষ (তিস্তা ওয়াটার শেয়ারিং: সাম হার্ড ফ্যাক্টস, ব্যারিস্টার হারুণ অর রশীদ, অক্টোবর ১১, ২০১৪- দ্য ডেইলি স্টার)।
গত আট বছরে উপরোল্লিখিত অবস্থার আরো অবনমন হয়েছে। গজালডোবায় প্রদত্ত বাঁধের কারণে তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশে পানি প্রবাহ ২০০ কিউসেক (প্রতি সেকেন্ডে কিউবিক মিটারের হিসাবে) থেকে ৪০ কিউসেকেরও নিচে চলে এসেছে। এছাড়া ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তিস্তার উপরিভাগ ও এর শাখা নদীগুলোয় আরো পনেরোটি স্থাপণা তৈরি করতে চাইছেন (দ্য মিরাজ অফ তিস্তা ট্রিটি, এস নজরুল ইসলাম, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২- দ্য ডেইলি স্টার)।
মূলত, ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় সেদেশের কেন্দ্রীয় সরকার প্রাদেশিক সরকারগুলোর ইচ্ছা বিরোধী কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনা বলেও বাংলাদেশ তিস্তা নদীর প্রশ্নে একেবারেই কোন ছাড় পাচ্ছে না। গজালডোবা বাঁধের মাধ্যমে তিস্তার বলতে গেলে পুরো প্রবাহধারাই পশ্চিম বাংলার সেচ কাজে ব্যবহৃত হয় বলে কোন একটিও খরা বা গ্রীষ্ম মৌসুমে বাংলাদেশ বলতে গেলে কোন পানিই পায় না।
পশ্চিম বাংলার সেচ কাজের এই স্বার্থ সেখানকার প্রাদেশিক সরকার রক্ষায় বদ্ধপরিকর বলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সম্পর্কোন্নয়নে আগ্রহী হলেও প্রাদেশিক সরকারের স্বার্থ বা মতামত উপেক্ষা করে নিজ উদ্যোগে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অপারগ। যেমন, সেই ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরেই বিবিসির সাথেএক ইন্টারভিউয়ে পশ্চিম বাংলার প্রাদেশিক আইন পরিষদের এক বিধায়ক আবু হাশেম খান চৌধুরী বলেছিলেন যে ভারত তিস্তার প্রবাহের ৭৫ শতাংশ ও বাংলাদেশ ২৫ শতাংশ পাবে।
তিনি আরো বলেছিলেন, 'বর্তমানে আমরা তিস্তার প্রবাহের মাত্র ৩৯ শতাংশ পাচ্ছি। চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে আমরা ৭৫ শতাংশ পাব। সেটা সেটা খুব উপকারে আসবে।' বাংলাদেশকে তিস্তার পানি দিলে পশ্চিম বাংলার 'কৃষি' বিপন্ন হবে এই মর্মে কেন্দ্রীয় সরকারকে আবু হাশিম চৌধুরী একটি চিঠিও লিখেছিলেন। যদিও পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কল্যান রুদ্রের নেতৃত্বে তিস্তার প্রবাহ-বণ্টন বিষয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি নিযুক্ত করেছিলেন, সেই কমিটির সুপারিশমালা বাংলাদেশের পক্ষে যাওয়ায় পরবর্তী সময়ে বস্তাবন্দী রয়ে গেছে (তিস্তা ওয়াটার শেয়ারিং: সাম হার্ড ফ্যাক্টস, ব্যারিস্টার হারুণ অর রশীদ)।
আন্তর্জাতিক নদী আইনের আওতায় বাংলাদেশ কী করতে পারে? একুশ শতকে নদী বা সমুদ্রসীমা দেশ বা রাষ্ট্রসমূহের ভেতর অন্যতম দ্বন্দের কারণ হবে বলে বহু আগে থেকেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলে আসছেন। একাধিক রাষ্ট্রের ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে এমন নদীর সংখ্যা এশিয়া মহাদেশেই বেশি। এসব নদীর আন্তর্জাতিক সীমানা নির্ধারণ বা নদী প্রবাহের বণ্টন বিষয়ে সব মিলিয়ে প্রায় ৪০০টির মত আন্তর্জাতিক চুক্তি রয়েছে।
১৯৭২ সালে ভারত-বাংলাদশে মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার প্রেক্ষিতে 'ইন্দো-বাংলা দ্য জয়েন্ট রিভার কমিশন' বা 'ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন' গঠিত হয়েছিল। এই কমিশন দুই দেশের নদী বিষয়ক অভিন্ন স্বার্থ দেখার প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হবার প্রেক্ষিতে ১৯৯৬ সালে গঙ্গার প্রবাহ বণ্টন বিষয়ক দুই দেশের ভেতর এক দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
আন্তর্জাতিক নদী আইনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হচ্ছে: 'পৃথিবীর কোন রাষ্ট্রেরই তার নিজস্ব এলাকা এমনভাবে ব্যবহারের অধিকারের কোন অনুমতি নেই যা অন্য রাষ্ট্রের ভূ-খন্ডকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।' এখানে ভূ-সীমানার ভেতর জলরাশি বা জল-সীমানাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
১৯৪৯ সালে 'কর্ফূ চ্যানেল কেস'-এ 'ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস (আইসিজে)' বা আন্তর্জাতিক আদালত একটি রাষ্ট্রের ক্ষতি করতে পারে এমন কোন কাজই অন্য কোন রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় করতে পারে না বলে মত প্রকাশ করে। এছাড়াও 'গাবচিকোভো নাগিমারো' মামলা এবং 'পাল্প মিলস' কেসের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আদালত দুই রাষ্ট্রের অভিন্ন নদী বা জলপ্রবাহ কিভাবে পারষ্পরিক স্বার্থ ও অধিকারের কথা মাথায় রেখে ব্যবহার করতে হবে সেবিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করে।
১৯৯৭ সালে গৃহীত 'ইউএন ওয়াটার শেয়ারিং কনভেনশন'-এর অনুচ্ছেদ ৫-এ বলা হয়েছে যে, 'একই নদী একাধিক রাষ্ট্রসমূহের ভেতর দিয়ে বয়ে গেলে সেই অভিন্ন নদীপথ রাষ্ট্রগুলো ন্যায়পরতার সাথে ও যৌক্তিকভাবে ব্যবহার করবে। রাষ্ট্রসমূহ এই আন্তর্জাতিক নদীপ্রবাহসমূহের ব্যবহার, উন্নয়ন ও নিরাপত্তার স্বার্থে যৌক্তিক ও ন্যায়ানুগ পন্থায় কাজ করবে।'
জাতিসংঘের এই কনভেনশন বা সনদের অনুচ্ছেদ ৭-এ আরো বলা হচ্ছে: 'অভিন্ন নদীপ্রবাহের আওতাধীন রাষ্ট্রগুলো যার যার ভূ-সীমানায় প্রবাহিত নদীপথ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অন্য রাষ্ট্রের কোন ক্ষতি না করে এমন যাবতীয় যথাযোগ্য পন্থা অবলম্বন করবে।'
দুঃখজনকভাবে তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের ভেতর বেশ কয়েকবারই আলোচনা হলেও কোন ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত এপর্যন্ত গৃহীত হয়নি। ১৯৮৩ সালের জুলাই মাসে ভারত ও বাংলাদেশ একটি এ্যাড হক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল যার আওতায় তিস্তার প্রবাহে ভারত ৩৯ শতাংশ এবং বাংলাদেশ ৩৬ শতাংশ অধিকার পাবে বলা হলেও বাস্তবে সেই চুক্তি কখনোই কাজে আসেনি।
২০১০ সালে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন ২০১১ সাল নাগাদ তিস্তা নদীর প্রবাহ বণ্টন বিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করবে এই মর্মে দু'দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং একটি খসড়া চুক্তিও প্রস্তÍত করা হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী উভয় দেশই নদীর প্রকৃত প্রবাহের ৪০ শতাংশ পাবে এবং বাকি ২০ শতাংশ 'প্রাকৃতিক প্রবাহ' হিসেবে সংরক্ষিত হবে বলে বলা হয়েছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতায় সেই চুক্তিও আলোর মুখ দেখতে পায়নি।
এর আগে ১৯৭৭ সালে মোরারজি দেশাই সরকারের সাথে পাঁচ বছর মেয়াদী 'দ্য গ্যাঞ্জেস ওয়াটার এগ্রিমেন্ট' এবং ১৯৯৬ সালে দেব গৌড়ার নেতৃত্বাধীন 'ইউনাইটেড ফ্রন্ট কোয়ালিশন' সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় 'গ্যাঞ্জেস ওয়াটার ট্রিটি' স্বাক্ষরিত হয়।
তিস্তার প্রবাহে বাংলাদেশের অধিকার মৌলিক ও অবিভাজ্য। অতীতে ভারত-পাকিস্থানের ভেতর কৃষেণগঙ্গা নদীর প্রবাহ নিয়ে দ্বি-পাক্ষিক সমস্যা যেমন তৃতীয় পক্ষ হিসেবে বিশ্ব ব্যাংকের উপস্থিতিতে স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তেমনি আন্তর্জাতিক আদালত ও আন্তর্জাতিক নদী আইনের সাহায্যে বাংলাদেশ তার নিজস্ব নদী সম্পদের ন্যায্য অধিকার চাইতেই পারে।