আমাদের বেহিসাবি জীপনযাপন ও মনের ভেতরের ভয়
সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হয়েছি বলে সংসারের অভাব-অনটন, চাহিদা, অপ্রাপ্তি, ভাগাভাগি করার মতো বিষয়গুলোর সাথে পরিচিত। সবার যা আছে, আমাদের তা নাও থাকতে পারে, সবাই যা খায় আমরা তা নাও খেতে পারি, সবাই যেভাবে টাকা পয়সা খরচ করতে পারে, আমরা সেভাবে টাকা নাও খরচ করতে পারি, এটাই আমাদের মগজে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
এরকম একটা সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশে বড় হয়েছি বলে আমরা অনেকেই সংসারের অভাব অভিযোগকে মোকাবিলা করতে শিখেছি। সেইসাথে বিলাসী জীবনকেও কতটা এড়িয়ে চলা যায়, তাও শেখার চেষ্টা করেছি।
কিন্তু এরপরেও কখন যে আমরা নিজেদের অজান্তে বা ইচ্ছাতেই সংসার খরচ অনেকটাই বাড়িয়ে ফেলেছি, তা খেয়ালই করিনি। নব্ব্ইয়ের দশক থেকেই দেশের অর্থনীতিতে নানা ধরneর কাঁচা পয়সা ঢুকতে শুরু করায় আমাদের অনেকেরই আয়ের দরজা খুলে গিয়েছিল। গার্মেন্টস শিল্প, প্রবাসী আয়, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, ব্যাংকিং খাতের প্রবৃদ্ধি, শিল্পায়ন, কৃষি বিপ্লব, চিংড়ি, চামড়া থেকে আয়, এনজিও খাত, কর্পোরেট আয় এবং কালো টাকার উত্থান আমাদের জন্য সৌভাগ্য হয়ে এলো।
আগের প্রজন্মের চাইতে আমাদের আয় বাড়লো, জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লো দেশের প্রবৃদ্ধিও বাড়তে শুরু করলো। নিম্নবিত্তের জীবন বাদ দিয়ে মধ্যবিত্ত হলাম অনেকে। আবার অনেকেই এক লাফে উচ্চবিত্ত বা অধিক উচ্চবিত্ত হয়ে উঠলাম। চোখের সামনে এই শহরে আমাদের অনেকেরই বাড়ি, গাড়ি ও সম্পদ হলো।
এখন উপলব্ধি করি, যে বয়সে আমরা টাকা আয় করে শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি, সেইবয়সে আমাদের অনেকেরই দাদা বাবারা উদয়াস্ত খেটেই সংসার চালিয়েছেন। তাদের কারো কারো স্বচ্ছলতা থাকলেও, তা নিয়ে প্রতিযোগিতা ছিল না। তারা আমাদের মতো করে ইঁদুর দৌঁড়েও অংশ নেননি। তাদের বাড়ি গাড়ি, শান-শওকত যতোটা না ছিল, তার চেয়েও বেশি ছিল শিক্ষা, রুচি ও ঐতিহ্য। সন্তানকে পড়াশোনা শেখানো ছাড়া আর কোন উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল বলে মনে করতে পারিনা।
এই আমিই কর্মজীবনে প্রবেশের আগে জানতাম একটা ডিম ভেজে তিন টুকরা করে খেতে হয়। একটা মুরগি রান্না হলে সংসারের ৮ সদস্যের মধ্যে সেটা ভাগ হবে। বাসায় যা রান্না হবে তাই সবাইকে হাসিমুখে খেতে হবে। ঈদ ছাড়া তেমনভাবে কোন জামা কাপড় জুতা কিনে দেওয়া হবে না।
বৃহত্তর পরিবারে হয়তো দু'একজনের গাড়ি ছিল বা ঢাকায় বাড়ি ছিল। কোন গাড়িওয়ালা কেউ আমাদের বাসায় বেড়াতে এলে প্রতিবেশিরা উঁকি দিয়ে দেখতেন। সরকারি স্কুল-কলেজে স্বল্প টাকায় পড়াশোনা, বড়দের পুরোনো বই ছোটরা পড়বে, বড় ভাইবোনদের পুরোনো কাপড় ছোটদের গায়ে উঠবে, এটাই ছিল প্রচলিত নিয়ম। কোন বাড়তি পয়সা বা আহলাদ ছিল না বললেই চলে।
অথচ সেই আমিই আমার সন্তানকে এর চেয়ে বেশি কিছু দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যেমন একটা ডিম, এক গ্লাস দুধ, প্রতিদিন মাছ, মাংস, নতুন নতুন জামা কাপড়, ছোটখাট খেলনা এইসব। কারণ তখন আমাদের আয় ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা বেড়েছে, হাতে এসেছে গাড়ি, বাড়ি, জমি। সংসারের প্রয়োজন মিটলো বলে, বাড়লো বিলাসী খরচ।
আমাদের অনেকেরই আত্মা হয়ে গেল অতৃপ্ত। কাপড়-চোপড়, জুতা, কসমেটিকস, সাবান-সস সবখাতেই খরচ বাড়ালাম। যাকে আমাদের মা মনে করতেন 'অপব্যয়'। কারণ তাদের নির্ধারিত আয়ের জীবনে এরকম খরচ করার কথা তারা ভাবতেও পারতেন না। তাদেরকে একটা সংসার টিপে টিপে চালাতে হতো। বাড়তি আয়, কোটি টাকার সম্পদ, ঘুষের টাকা, কালো টাকা কিচ্ছু ছিল না।
এমনকি সেসময়ের ধনীরাও একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে জীবনযাপন করতেন। তাদের ব্যবহৃত গাড়ি, বাড়ি, পোশাক পরিচ্ছদ কোনটাই আজকালকার ধনীদের মতো চটকদার ও উজ্জ্বল ছিল না। সময় বদলেছে, বদলেছে আমাদের চাওয়া পাওয়া, জীবনবোধ। এখন সন্তানেরা চাঁদ চাইলে বাবা মা সেটাও দেওয়ার চেষ্টা করেন। আর ডিম-মুরগি, পিজ্জা, বার্গার, কোক-ফানটা, বিফ-মাটন, কাপড়-চোপড়, খেলনাগাড়ি, মোবাইল, আইপ্যাড, ল্যাপটপ সবই আজকালকার অসংখ্য শিশুর হাতের মুঠোয়।
চলমান এই বেহিসাবি জীবন করোনাকালে কেমন যেন থমকে গেল। চোখের সামনে দেখলাম আয় সংকোচ হতে, চাকরি হারিয়ে নিঃস্ব হতে, শহর থেকে গ্রামে ফিরে যেতে, স্কুল বন্ধ হয়ে যেতে। ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো হাওয়া হয়ে গেল। মানুষ বেকার হয়ে পড়লো, ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেল।
এরপর থেকেই বৈশ্বিক সংকট বাড়তে লাগলো। বাংলাদেশতো বটেই, বিশ্বের বড় বড় দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়তে শুরু করেছে। আমাদের অবস্থা এখন এমন যে, আমরা যারা কষ্ট করে টাকা আয় করে নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত হয়েছিলাম বা যারা মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত হয়েছিলাম, তারা ফাপড়ে পড়েছি সবচেয়ে বেশি। অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের মধ্যবিত্ত মানুষরা নিম্নবিত্ত এবং নিম্নবিত্তরা দরিদ্র মানুষে পরিণত হচ্ছেন।
সবকিছু দেখে মনের মধ্যে কেমন যেন একটা ভয় ঢুকে গেছে, এই ভয় কতটা যৌক্তিক তা বুঝতে পারছি না, কিন্তু এড়াতেও পারছিনা। সেই শৈশব-কৈশোরে আমরা যদি বাড়তি কোন ব্যয় করতাম কিংবা খাবার-দাবার নিয়ে বায়না করতাম বা কোন খাবার জিনিস নষ্ট করতাম, তখন অবধারিতভাবে আব্বার কাছে পঞ্চাশের মন্বন্তরের অসহনীয় কষ্টের গল্প শুনতে হতো।
১৯৪৩ সালে বাংলাদেশে যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, তাকেই বঙ্গাব্দ অনুযায়ী পঞ্চাশের মন্বন্তর বলা হয়। আব্বা বলতেন শুধু ভাতের মাড় নেওয়ার জন্য গ্রামে তাদের বাড়ির দরজায় দুইবেলা কংকালসার মানুষ এসে দাঁড়াতো। ভাত আর মিষ্টি কুমড়া খেয়ে সেই সময় দিন কেটেছে আব্বাদের। গ্রামে মানুষ না খেতে পেয়ে মরে পড়ে থাকতো। কচু, লতাপাতা, শাক কিচ্ছু পাওয়া যেতো না। তিনি বলতেন সেইসব দিনের কথা ভেবে আমরা যেন স্বভাবে বিলাসী না হই।
সেই দুর্ভিক্ষও কিন্তু মনুষ্য সৃষ্ট ছিল। আজকের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যেমন পুরো বিশ্বকে ধরে টান মেরেছে, অর্থনীতিকে পর্যুদস্ত করে তুলেছে ঠিক তেমনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছিল ঐ দুর্ভিক্ষের পেছনে। জাপানি সেনাবাহিনীর হাতে বার্মার পতন হলে সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ চাল আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া যুদ্ধরত সেনাবাহিনীর সদস্যদের জন্য অতিরিক্ত খাদ্যশস্যের চাহিদা, মুনাফাভোগীদের দৌরাত্ম্য এবং সরকারি অব্যবস্থাপনা এই দুর্ভিক্ষের অন্যতম কারণ।
প্রায় ৮০ বছর পরে এসে কেন হঠাৎ আব্বার মুখে শোনা পঞ্চাশের মন্বন্তরের কথা মনে হলো? হয়তো খামোখাই বা কোন ভয় থেকে মনে হলো। যদিও জানি তখনকার বিশ্ব পরিস্থিতি ও আজকের বিশ্বের অর্থনীতি, সমাজনীতি, ভূমিনীতি, রাজনীতি এবং প্রযুক্তিগত নীতি এক নয়। কিন্তু দারিদ্র্য ও ক্ষুধার ছবি কিন্তু এক।
ধনী মানুষের মতো, ধনী দেশগুলোরও কিছু পলিসি আছে, সেই পলিসি হচ্ছে টান মারা বা ছিনিয়ে নেয়া পলিসি।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় একটি নিবন্ধে দেখলাম সেই ছিনিয়ে নেয়া পলিসির কথাই বলা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ১০ কোটির বেশি মানুষের ওপর ইউরোপে বাড়তি জ্বালানি চাহিদার প্রভাব পড়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ, জ্বালানির আকাশচুম্বী দাম এবং রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে পূর্ব এশিয়ার জন্য বরাদ্দকৃত গ্যাস এখন আগ্রাসীভাবে ইউরোপে সরবরাহ করা হচ্ছে।
নিবন্ধে বলা হয়েছে 'ইউরোপ যেখান থেকে পারছে সেখান থেকেই গ্যাসের প্রতিটি কণা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।'
ইউরোপীয় ডিলাররা ভবিষ্যতের জন্য মজুদ খুঁজছেন বলে জানা গেছে। তারা শুধু এখনকার জন্যই নয়, ভবিষ্যতের জন্যও কিনে রাখছে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের ক্রয়ক্ষমতা উন্নয়নশীল দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। সুতরাং বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্থানের মতো দেশগুলোর ওপর স্পষ্ট কড়াঘাত নেমে আসছে'।
বাংলাদেশে আমরা যখন লোডশেডিংকে ভুলতেই বসেছিলাম, ঠিক সেইসময় দেশজুড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের পর নতুন করে ভাবতে হচ্ছে দেশের এত গ্যাস, এত বিদ্যুৎ গেল কই? বিদ্যুৎ, জ্বালানি, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, দুর্নীতি, কালো টাকার পাহাড়ের খোঁজ, বেহিসেবী সরকারি ব্যয় সবকিছু জানার পরেও সাধারণ মানুষ চুপ করে ছিল।
কিন্তু যখন দেশের বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে আঁধার নেমে এলো, তখন সত্যিই একটা গাঢ় আশংকা চেপে বসলো মানুষের মনে।
তাহলে কি আমরা আবারও সেই কষ্টকর হিসেবী যুগে ফেরত যাচ্ছি? সরকারি নথি অনুযায়ী দেশের গ্যাসচালিত ৭৭টি ইউনিটের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি ইউনিটে জ্বালানি ঘাটতি ছিল বলেই গত ৫ অক্টোবর বাংলাদেশের ৭৫ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ অঞ্চলজুড়ে গ্রিড বিপর্যয় দেখা দেয়। (রয়টার্স)
প্রচুর দাম দিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও গ্যাস ব্যবহার করে আমরা যারা মোটামুটি সুখের জীবনে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি, তারা কি পারবো হারিকেন, কুপি বা মোমবাতির জীবনে ফিরে যেতে? লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি ইতোমধ্যেই সাধারণ মানুষকে কুপোকাত করে ফেলেছে। আর কতটা সহ্য করতে পারবে মানুষ, কিভাবে পারবে বুঝতে পারছি না।
ঠিক এরকম একটা ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে যখন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বলেন যে আপনারা সঞ্চয় করুন, তখন তা আমাদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ফেলেছে। বাংলাদেশ যাতে কখনোই দুর্ভিক্ষ ও খাদ্যের অপ্রতুলতার মতো কোনো পরিস্থিতির মুখোমুখি না হয় সে জন্য শেখ হাসিনা দেশবাসীকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহবান জানিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আবারও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং একে কেন্দ্র করে অবরোধ প্রসঙ্গ টেনে তিনি একথা বলেন।
আগামী বছর বিশ্ব একটি ভয়াবহ খাদ্য সংকটের দিকে যেতে পারে বলে বিশ্বের নেতাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি মনে করেন না যে যুদ্ধ এত তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ অস্ত্র বিক্রির কারণে যুদ্ধ চালিয়ে রাখতে পারলে কিছু দেশ লাভবান হয়।
পঞ্চাশের মন্বন্তরের গল্প শুনেছি, ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ নিজেই দেখেছি। ছোট ছিলাম বলে পরিস্থিতি সেইভাবে বুঝিনি। কিন্তু মানুষ যে খেতে না পেরে মারা যাচ্ছে, পথের ধারে ক্ষুধাপীড়িত মানুষের সারি, বাসায় খাদ্যাভাব, পত্রপত্রিকার ছবি সব মনে আছে। আব্বার ৫০ এর মন্বন্তরের সাথে এর খুব একটা অমিল ছিল না।
বড় হয়ে জেনেছি, ১৯৭৪ এ কয়েক লক্ষ মানুষ অনাহারে ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন। ৭০ দশকে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। বাংলাদেশের মত একটি নতুন রাষ্ট্রের পক্ষে তাদের অবকাঠামো ও বাজার নিয়ে এটি সামাল দেয়া সম্ভব হয়নি। সেইসাথে দুর্নীতি, প্রবল বন্যা, আন্তর্জাতিক রাজনীতি, চাষাবাদের ক্ষতি দেশকে মহা দুর্ভিক্ষের মুখে এনে দাঁড় করিয়েছিল। প্রান্তিক মানুষ, শ্রমিক এবং ভূমিহীনরা সবচেয়ে বেশি ভয়াবহতার শিকার হয়েছিলেন।
১৯৭৪ এর দুর্ভিক্ষ নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন, তারা বলেছিলেন খাদ্যের প্রাপ্যতার ব্যর্থতার কারণে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হয়নি, বরং বিতরণ ব্যর্থতার কারণে হয়েছিল। তখনও একদল মানুষ 'বাজারে খাবারের উপরে আধিপত্য স্থাপন করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্র ২.২ মিলিয়ন টন খাদ্য সহায়তা বন্ধ করে রেখেছিল, কারণ তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পরিষ্কারভাবে বলেছিলেন কিউবায় বাংলাদেশের পাট রপ্তানির নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত খাদ্য সহায়তা দিতে কথা দিতে পারবে না।
আমেরিকার চাপের কারণে যখন বাংলাদেশ কিউবায় পাট রপ্তানি করা বন্ধ করে, তখন তা 'দুর্ভিক্ষের জন্য দেরি হয়ে গিয়েছিল।' সেদিনের সেই পরিস্থিতির সাথে বর্তমান পরিস্থিতির মিল খুঁজে পাওয়া খুব একটা কঠিন নয়।
যাদের হাতে অনেক সাদা বা কালো টাকা, যাদের বিদেশি ব্যাংকে সঞ্চিত পুঁজি আছে, যাদের সেকেন্ড হোম আছে, তাদের জন্য বা তাদের সন্তানদের জন্য আগামী দিনগুলো হয়তো কোন অশনি সংকেত নিয়ে আসছে না। কিন্তু এই আমরা যারা অতি সাধারণ জীবনযাপন করে বড় হয়েছি, বড় হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি, সংসার খরচ দিনে দিনে বাড়িয়েছি, আজকে তারাই আর লাগাম ধরে রাখতে পারছি না। দেখতে পারছি এই দেশমাতৃকাও, অগণিত সাধারণ মানুষের সাথে ক্ষতির মুখে পড়েছে। আসলে 'আমাদের সাধ্যের বাইরে যে সাধ, তা কালে পূরণ হবার নয়। সাধ্যের মধ্যেই আছে সকল সত্য।'
- লেখক: সিনিয়র কো-অর্ডিনেটর, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন