‘বৈষম্যের বিচারে শীর্ষ ৩৩ শতাংশ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ’
সেন্টার ফর গভার্নেন্স স্টাডিজ আয়োজিত 'বাংলাদেশের ৫০ বছর' শীর্ষক আলোচনায় সোমবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান। তার বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো:
সুশাসন চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি এবং নির্বাহী পরিচালক, তিন বীর মুক্তিযোদ্ধা বীর বিক্রম লে. ক. (অব.) জাফর ইমাম, বীর বিক্রম মেজর জেনারেল ( অব.) গোলাম হেলাল মোর্শেদ খান, বীর প্রতীক মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম ও উপস্থিত সুধীবৃন্দ। আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।
মুক্তিযুদ্ধের সময় যে বীর সেনানীদের সঙ্গে কাজ করেছিলাম তাদের অনেকের সঙ্গে বহুদিন পরে দেখা হওয়ায় খুব ভালো লেগেছে। এখানে আপনাদের উপস্থিতিতেও আমি খুবই আশান্বিত। আমি সুশাসন চর্চা কেন্দ্রের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
আমি প্রথমেই একটা প্রস্তাব রাখতে চাই। আজকের আলোচনায় একটা বিসাদৃশ্য পরিস্থিতি লক্ষ্য করছি। আমাকে যিনি পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। তিনি ইংরেজি ভাষায় বলছেন। আর আমি বাংলায় বলছি। এটা একটা সুস্পষ্ট বিসাদৃশ্য।
এর কারণটাও আমি বলতে পারি। আমি একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াই। সেখানে শিক্ষার মাধ্যম ইরেজি। আমাদেরকে ইংরেজিতে বক্তব্য দিতে হয়। বাংলায় বক্তব্য দিলে আমাদের চাকুরি চলে যায়।
তার কারণ অবশ্য আছে। বাংলা ভাষা উচ্চশিক্ষার বাহন হওয়ার উপযুক্ত এখনও হয়নি। কথাটা বুঝতে হবে। বাংলা ভাষা ঠিকই উপযুক্ত আছে। তবে জ্ঞানের বিকাশ হচ্ছে। প্রতি বছর হাজার হাজার নতু্ন বই প্রকাশ হচ্ছে। সেই বই যদি বাংলায় অনুদিত না হয়, তাহলে সেই জ্ঞান ব্যবহার করা যাবে না। এই কারণে আমাদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে পড়ানো হয়।
কিন্ত সরকারের কাছ থেকে আমরা এখন পর্যন্ত বাংলাকে যথাস্থানে প্রতিষ্ঠিত করার কোনো উদ্যোগ দেখতে পাই না।
বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদের বড় অংশ জুড়ে রয়েছে বাংলা ভাষা। বাংলা ভাষায় যারা বিশ্বাস করে না, তারা বাংলাদেশেও বিশ্বাস করে না। সুতরাং, অবশ্যই বাংলা ভাষাকে সম্মান দেখাতে হবে। কিন্ত আমরা তা পারিনি।
এটা করতে হলে সরকারের একটা উদ্যোগ দরকার। আর সেটা রাতারাতি করা সম্ভব হবে না। ১৫ থেকে ২০ বছরের একটা মহাপরিকল্পনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হলে সেটা সম্ভব। অন্যথায় সম্ভব নয়।
তবে আমি সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের কাছে একটা প্রস্তাব রাখতে চাই। তারা যখন শুধুমাত্র বাংলাদেশি শ্রোতাদের জন্য অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করবে, সেখানে সম্ভবত বাংলা ভাষা ব্যবহার বাঞ্চনীয়।
আর যদি সেটা আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়, যেখানে বিদেশি লোকজন অংশগ্রহণ করবেন, সেখানে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা যেতে পারে। আমি কেন্দ্রের পরিচালকদের বিবেচনার জন্য এই প্রস্তাব রাখলাম।
মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বীর মুক্তিযোদ্ধারা অনেক কিছু বলে গেছেন। আমি অস্ত্র নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করতে পারিনি। আমি কলম নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আমার দুর্ভাগ্য আমি এখন অসমর্থ। অথচ বীর মুক্তিযোদ্ধারা যারা সত্যি সত্যি অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করেছেন, আমার এই বন্ধুরা এখনও সত্যি সত্যি সমর্থ্য আছেন। আমি তাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।
জেনারেল ইবরাহিম বলে গেছেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি জনযুদ্ধ। এই যুদ্ধে যেমন সৈনিকরা অংশ নিয়েছে, যেমন পুলিশ অংশ নিয়েছে, বিডিআর অংশ নিয়েছে, তেমনি কৃষকরা অংশ নিয়েছে, করণিকরা অংশ নিয়েছে, সরকারি কর্মচারীরা অংশ নিয়েছে। সমাজের সব শ্রেণির লোকজন এতে অংশ নিয়েছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কোনো সামরিক অভ্যুত্থান নয়। এটা সাধারণ মানুষের জনযুদ্ধ। এটা মনে রাখলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল্যায়ন করা অনেক সহজ হবে।
মুক্তিযোদ্ধা হেলাল মোর্শেদ খান এবং জাফর ইমাম একটু আগে বলে গেছেন, ভারত আমাদের মুক্তি সংগ্রামে অংশ নিয়েছে। অবশ্যই ১৯৭১ সালে আমরা মুক্তিযুদ্ধে যে জয়লাভ করি, তাতে ভারতের অবদান রয়েছে। সেজন্যে কি ভারতের প্রতি আমাদের চিরকৃতজ্ঞ থাকা উচিত না?--- এ কথাটা ১৯৭১ সালে শুনা যেত না। এই প্রশ্নটা সাম্প্রতিক সময়ে উঠেছে।
আমি এই প্রশ্নের সোজা জবাব দিতে চাই। ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন লর্ড পামারস্টোন। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকার সময় দেশের স্বার্থ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছিলেন, 'চিরন্তন বন্ধু বলে কিছু নেই, চিরন্তন শত্রু বলেও কিছু নেই। আমাদের স্বার্থই চিরন্তন।'
এটা ভারতও জানে, বাংলাদেশও জানে। চিরন্তন কৃতজ্ঞতাবোধ বলে পৃথিবীর কোথাও কোনোকিছু নেই। এটা ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব না। জাতির সাথে জাতির বন্ধুত্ব। রাষ্ট্রের সাথে রাষ্ট্রের বন্ধুত্ব তখনি হবে, যখন আমাদের স্বার্থ অভিন্ন হবে। আর যদি আমাদের স্বার্থের সংঘাত থাকে, তাহলে চিরন্তন কৃতজ্ঞতাবোধ কোনো দিনই হবে না। ভারতের যে রাষ্ট্রনায়করা বাংলাদেশকে সাহায্য করেছিলেন, সেটা তারা ভালো করেই জানতেন।
১৯৭১ সালে আমার মিসেস ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। ভারতের তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তারা বলেছিলেন, তোমরা স্বাধীনভাবে বসবাস করো, আমরা সেটাই চাই। তারা কখনই এ কথা কল্পনা করেননি যে বাংলাদেশ কারও চিরপদানত হয়ে থাকবে, এটা কোনোদিনই সম্ভব না। এটা যারা মনে করছেন, তারা কল্পরাজ্যে বসবাস করছেন।
আজকে বাংলাদেশে ৫০ বছর পূর্তি হয়েছে। এ ৫০ বছরে আমার অনেক সাফল্য অর্জন করেছি। ১৯৭০ সালে বাংলাদেশের ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করত। এখন ২০ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে আছে। এটা একটা অকল্পনীয় অর্জন। তখন ভাবা যায়নি যে, বাংলাদেশ এ পর্যায়ে যেতে পারবে।
আমরা যদি সামাজিক সূচকসমূহ দেখি, অর্থনৈতিক সূচকসমূহ দেখি, অবশ্যই আমাদের গর্ব করার কারণ রয়েছে।
কিন্তু এখানে আমাদের দুটি জিনিস মনে রাখতে হবে। একটা হলো আমরা যে অর্জন করেছি সেই অর্জন ১৯৭১ সালে আমাদের অবস্থার তুলনায় এ অর্জন করেছি। কিন্তু দারিদ্র্য শুধু বাংলাদেশে কমেনি। পৃথীবীর সব দেশেই দারিদ্র্য কমেছে।
দারিদ্র্যের সীমা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে মাপা হয়। আন্তর্জাতিক পরিমাপে মাপলে বাংলাদেশের ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ মানুষ এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক পরিমাপেও ভুল রয়েছে। কারণ অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে মানুষের প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবার চাহিদা বাড়ছে। সেই অনুসারে পরিমাপ করলে বাংলাদেশে এখনও ব্যাপক দারিদ্র্য রয়েছে। এ সম্পর্কে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
দ্বিতীয়ত আমাদের যে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে, সেটা হলো আমরা অনেক সূচকেই উপরে উঠেছি। কিন্তু সব সূচকে সমানভাবে অগ্রগতি হয়নি। আমরা যেভাবে উপরে চলে এসেছি, যেকোনো সময় আবার পেছনে চলে যেতে পারি।
আপনাদের একটা উদাহারণ দেই। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির হিসাবে আমরা এক সময় সর্বনিম্ন সীমার উপরে চলে এসেছিলাম। তারপর আমরা আবার নিচে চলে যাই। এখন আবার উপরে উঠে এসেছি। অর্থাৎ উন্নতিতে উঠানামা হয়। এই উঠানামায় আমরা যেকোনো সময় নিচে চলে যেতে পারি।
আমরা চাই সবার খাবারের চাহিদা পূরণ হওক। ১৯৭১ সালে আমাদের দেশে মাথাপিছু যে খাবার সরবরাহ ছিল, এখন তার চাইতে খাবার উৎপাদন হচ্ছে অনেক বেশি। কিন্ত এই খাবার হজম করার জন্য পানীয় জলের প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের দেশে কি শতকরা ৮০-৯০ শতাংশ লোক সুপেয় পানি পাচ্ছে?
এক সময় সরকার খুব ঢাকঢোল পিটিয়ে বলেছে, বাংলাদেশে নাকি ৯৭ শতাংশ লোক সুপেয় পানি পাচ্ছে। আসলেই কি পাচ্ছে? আমি তো দেখতে পাচ্ছি না। আর্সেনিকসহ বিভিন্ন বিষের প্রভাব আর উপকূলীয় অঞ্চলে পানীয় জলের অভাব বিবেচনায় নিলে দেশের ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ সুপেয় পানি পাচ্ছে না। যে পানি দিয়ে তারা খাদ্য হজম করতে পারবেন। এটা তো দারিদ্র্য দূর করার পরিস্থিতি না।
সুতরাং দারিদ্র্য আমরা অনেক জায়গায় দূর করতে পেরেছি। অনেক জায়গায় দারিদ্র্য দূর করতে পারিনি। আমাদেরকে সুসমন্বিতভাবে এগুতে হবে এবং আমাদের যে দুর্বলতাগুলো রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।
বাংলাদেশ একটি আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্র। একটি চেতনাভিত্তিক রাষ্ট্র। বাংলাদেশর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চারটি স্থম্ভ রয়েছে। জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং গণতন্ত্র। এই চারটি স্থম্ভের উপর বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠিত।
এর মধ্যে জাতীয়তাবাদ আমরা অর্জন করেছি। আমার মনে হয় না বাংলাদেশের এই ভৌগলিক পরিসীমার পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা আছে। ভারত আমাদের এ ভূখণ্ড কখনই নেবে না। ভারত যদি আমাদেরকে নেয়, তাদের সর্বনাশ হয়ে যাবে। তারা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকতে পারবে না।
পাকিস্তানও আমাদেরকে আর নিতে পারবে না। যখন শোষণ সম্ভব ছিল, তখন তারা বাংলাদেশ দখলে রেখেছে। এ হিসাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ চূড়ান্তভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নাই।
আমাদের চিন্তার কারণ রয়েছে গণতন্ত্র নিয়ে, ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে। যদিও আমরা ধর্মনিরপেক্ষতা এবং গণতন্ত্রকে আলাদা স্তম্ভ করেছি, কিন্তু যে দেশে গণতন্ত্র নাই, সেই দেশে ধর্মনিরপেক্ষতা টেকসই ভিত্তিতে করা সম্ভব না।
এ অবস্থায় কিছুদিনের জন্য ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা করা যাবে। কিন্ত যখনই রাষ্ট্রে কোনো পরিবর্তন আসবে, তখনই দেখা যাবে এই ধর্মনিরপেক্ষতা ভঙ্গুর। কাজেই ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য গণতন্ত্রের প্রয়োজন আছে।
এখানেই হেলাল মোর্শেদ সাহেব বলে গেছেন যে গণতন্ত্রের বিভিন্ন ধরন রয়েছে, আর তিনি প্রশ্ন রেখে গেছেন যে আমরা কী ধরনের গণতন্ত্র চাই। আমি বলতে চাই যে আমাদের উদারনীতির গণতন্ত্র তথা লিবারেল ডেমোক্রেসি দরকার। ইলিবারেল গণতন্ত্র দিয়ে কোনো ধরনের উন্নতি হবে না।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমরা যে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি সেটা লিবারেল ডেমোক্রেসি। এ ধরনের গণতন্ত্রে শুধু নির্বাচন যথেষ্ট নয়। একে অন্যের মতামতে শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে, সিভিল সোসাইটির ভূমিকা থাকতে হবে, আইনের শাসন থাকতে হবে।
তবে এ ধরনের বিষয়গুলো বাংলাদেশে এখনও দুর্বল। গণতন্ত্রকে সুসংগত করতে হবে। আর সেটা করতে না পারলে এ দেশে কোনোভাবেই সুশাসন নিশ্চিত হবে না। আর সুশাসন নিশ্চিত না হলে দেশের মানুষের অধিকারও নিশ্চিত হবে না, আবার বিদেশি বিনিয়োগও আসবে না। অর্থাৎ, আমাদের অর্থনৈতিক উন্নতি ব্যাহত হবে। রাজনৈতিক অধিকার থেকেও দেশের মানুষ বঞ্চিত হবেন।
তবে এই গণতন্ত্র আর সুশাসন প্রতিষ্ঠা এতটা সহজ নয়। এর জন্য সাধনার প্রয়োজন আছে। প্রথমেই সব রাজনৈতিক দলগুলোকে গণতন্ত্রে বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত বাংলাদেশে এমন অনেক রাজনৈতিক দল রয়েছে, যারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে, আসলে অন্তরে গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না।
বাংলাদেশে আরেকটি বিষয় নিয়ে সচেতন থাকার দরকার আছে। আমরা সমাজতন্ত্রকে লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করেছি। তবে এই সমাজতন্ত্র ঠিক দ্রুপদী সমাজতন্ত্র নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যে সমাজতন্ত্র রয়েছে, সে সমাজতন্ত্র হলো, মানুষে মানুষে বিভেদ কমাতে হবে।
বাংলাদেশে মানুষে মানুষে বিভেদ আর বৈষম্য বেড়েই চলেছে। আমাদের কাছে যে সমস্ত হিসাব আছে তাতে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বের দেশগুলোর ৬৫ ভাগ দেশে আয় বৈষম্য বাংলাদেশের চেয়ে কম। বৈষম্যের বিচারে শীর্ষে থাকা ৩৩ শতাংশ দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ।
এখানে বৈষম্যটা বেড়েছে গত ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। এর একটা কারণ হলো দেশে প্রচণ্ড দুর্নীতি চলছে। কালো টাকা এবং সরকারের পৃষ্টপোষকতায় এই দুর্নীতি বাড়ছে। এই বৈষম্যের প্রতি আমরা দৃষ্টি না দিলে আবার বিভিন্ন ধরনের গণ্ডগোল দেখা দিতে পারে।
এ জন্যেই আমরা যদি দেশে শান্তি চাই, দেশের অব্যাহত অগ্রগতি চাই, তা হলে আমাদের এ সমস্ত সমস্যার দিকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত।
লেখক: বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা