বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় থাকতে চান না বিল গেটস
আবারও নিজের সব সম্পত্তি বিলিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন বিলিয়নিয়ার ও মাইক্রোসফট এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। গেটস জানিয়েছেন, একদিন তিনি বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকা থেকে বাদ পড়বেন।
সম্প্রতি নিজের মানবসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের তহবিলে ২০ বিলিয়ন ডলার দান করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিল গেটস। বিশ্বের চতুর্থ ধনী ব্যক্তি বলেছেন, নিজের সম্পদ সমাজের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার 'বাধ্যবাধকতা' রয়েছে তার।
এর আগে ২০১০ সালেও সম্পত্তি বিলিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন বিল গেটস। কিন্তু এরপর থেকে তার সম্পদের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে। ফোর্বস ম্যাগাজিন জানিয়েছে, এই মুহূর্তে বিল গেটসের মোট সম্পদের মূল্য ১১৮ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু জুলাইয়ে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনে মোটা অংকের টাকা দান করার পর তার মোট সম্পদ উল্লেখযোগ্য হারে কমবে।
টুইটার থ্রেডে বিল গেটস জানান, মহামারি, ইউক্রেন সংকট ও জলবায়ু সংকট মিলিয়ে বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন তাদের বার্ষিক খরচ ৬ বিলিয়ন ডলার থেকে ৯ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করবে।
তিনি আরও বলেন, "ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমি আমার সম্পদ এই ফাউন্ডেশনে দিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এভাবে আমার সম্পদ কমতে থাকবে এবং বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তালিকা থেকে আমার নাম বাদ পড়বে।"
বিল গেটস টুইটারে বলেন, "আমার একটি বাধ্যবাধকতা আছে যে, আমার সম্পদ সমাজকে এমনভাবে ফেরত দিতে হবে যা মানুষের দুঃখকষ্ট কমানো ও জীবনমান উন্নত করার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে। আমি আশা করি, অন্যান্য যাদের এরকম প্রচুর সম্পদ রয়েছে, তারাও এই মুহুর্তে এগিয়ে আসবেন।
গেটস ফাউন্ডেশন বিভিন্ন দেশে রোগ নির্মূল, যেমন- ম্যালেরিয়া, শিক্ষার উন্নতি এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করে। ২০২০ সালে গেটস ফাউন্ডেশনকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দাতা সংস্থা হিসেবে মনে করা হয়। সেসময় সংস্থাটির সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪০.৮ বিলিয়ন ডলার এবং ওয়ারেন বাফেটের মতো বিলিয়নিয়ার বিনিয়োগকারীও এর সাথে যুক্ত ছিলেন।
যদিও গেটস ফাউন্ডেশনের ভালো কাজের তালিকাটা বেশ লম্বা, কিন্তু ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় পরিচালিত একটি সংস্থা যা বিশ্বব্যাপী প্রভাব ফেলতে সক্ষম, তাদের নীতি-নৈতিকতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।
বিল ও মেলিন্ডা গেটসের প্রতিষ্ঠিত এই দাতা সংস্থাটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বৃহত্তম বেসরকারী দাতা। ২০১৮ সালে বার্ষিক অনুদানের অংকে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে এটি। কিন্তু সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন অনুদান বন্ধের হুমকি দেওয়ার পরে এই বিষয়ে উদ্বেগ আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
১৯৯৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বিশ্বের শীর্ষ ধনী ছিলেন বিল গেটস। পরবর্তীতে আবার ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এ অবস্থান ধরে রাখেন এই মার্কিন ধনকুবের। ২০১৭ সালে গেটসকে পেছনে ফেলে শীর্ষস্থান দখল করেন আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস এবং ২০২২ সালে বিশ্বের শীর্ষ ধনী হন টেসলার প্রধান কার্যনির্বাহী ইলন মাস্ক।
সূত্র: বিবিসি