রাশিয়াকে পাশ কাটিয়ে উজবেকিস্তান-কিরগিজস্তানের সঙ্গে চীনের রেলপথ চুক্তি স্বাক্ষর
কিরগিজস্তান ও উজবেকিস্তানের সঙ্গে রেলপথ নির্মাণের এক দীর্ঘ-প্রত্যাশিত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে চীন। এই চুক্তি সফল হলে, নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা রাশিয়াকে বাইপাস করেই (বাদ দিয়ে) ওই অঞ্চল থেকে ইউরোপের দিকে যাওয়া-আসার সংক্ষিপ্ত রাস্তা তৈরি হবে।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, উজবেকিস্তানে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের এক ফাঁকে গেলো ১৪ সেপ্টেম্বর তিন সরকারের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশনের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের এ তথ্য নিশ্চিত করেছে কিরগিজস্তান এবং উজবেকিস্তানের পরিবহন ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
বহু বছর ধরে ঝুলে থাকা ত্রি-দেশীয় এই চুক্তি অবশেষে স্বাক্ষরিত হলো। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং পরিবর্তিত নতুন বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি, এই চুক্তিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
চুক্তি স্বাক্ষরের সময় চীন বলেছে, আগামী ২০২৩ সালের প্রথমার্ধের মধ্যেই সম্পন্ন হবে রেলপথ নির্মাণের কাজ। চীন এবং উজবেকিস্তানে বিদ্যমান রেলপথগুলোকে সংযুক্ত করার জন্য ইতোমধ্যেই সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পরিকল্পনা করছে দেশগুলো, যা এই প্রকল্পকে বাস্তবতার দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেলো।
কিরগিজস্তানের পরিবহন ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গবেষণার খরচ সমানভাবে ভাগ করা হবে।
রেলপথটি শুরু হবে কিরগিজস্তানের তুরুগার্ট থেকে; এখানে চীনের একটি সড়ক ক্রসিং ইতোমধ্যেই রয়েছে। তুরুগার্ট থেকে উত্তরে আরপা ও মাকমাল হয়ে জালাল-আবাদ পর্যন্ত আসবে পথটি, যেখানে এটি উজবেকিস্তানের রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত হবে।
মাকমাল এলাকায় সোনার খনি রয়েছে। এই খনি চীন ও কিরগিজস্তানের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ মালিকানা রয়েছে চীনের। তাই নিঃসন্দেহে এই রেল সংযোগ তিন দেশের জন্য হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কিরগিজ পরিবহন মন্ত্রী এরকিনবেক ওসোয়েভকে উদ্ধৃত করে দ্য ইকোনমিস্টের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৮০ কিলোমিটার এই পথটি নির্মাণের খরচ ধরা হয়েছে ৪.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সরাসরি বিনিয়োগ বা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এই অর্থায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
যেহেতু পাড়াহী এলাকায় রেলপথ নির্মাণ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং, তাই এর নির্মাণ খরচ ও সময় বেশি লাগবে বলে জানানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত ধারণা করা হচ্ছে, পুরো পথে ৯০টি টানেল নির্মাণের প্রয়োজন হতে পারে।
দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনকেও নতুন সংযোগপথে প্রবেশ করতে ১৬০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করতে হবে।
নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হলে, নতুন এই পথ দক্ষিণে তুর্কমেনিস্তান হয়ে ইরান এবং ইউরোপের প্রবেশদ্বার তুরস্ক পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।
- সূত্র: অয়েল প্রাইস ডট কম