ঘুমের অনিয়ম হৃৎপিণ্ডের জন্য ক্ষতিকারক: গবেষণা
রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে তার ছোটখাটো তাৎক্ষণিক প্রভাব পরদিন সকালে টের পাওয়া যায়। কিন্তু সম্প্রতি নতুন এক গবেষণা জানিয়েছে, ঘুমের অনিয়ম হলে দীর্ঘমেয়াদে তা-তে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। খবর সিএনএন-এর।
গত বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জার্নাল অব দ্য আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন-এ ওই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। কম ঘুমানো ও অনিয়ম করে ঘুমানো এবং তার সঙ্গে ধমনীর গায়ে চর্বি, কোলেস্টেরল ইত্যাদি জমার (অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস) সম্পর্ক নিয়ে এটা প্রথম অনুসন্ধানগুলোর একটি।
এর আগের বিভিন্ন গবেষণায় ভালো ঘুম না হওয়া, ঘুমের পরিমাণ ঠিক না থাকা, ভেঙে ভেঙে ঘুম আসা ইত্যাদির সঙ্গে হৃদরোগ ও হৃদরোগের কারণে মৃত্যুর সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিসের সঙ্গে ঘুমের সম্পর্ক নিয়ে খুব বেশি তথ্য অতীতে জানা যায়নি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য থেকে গড়ে ৬৯ বছর বয়সী ২,০০০-এর বেশি মানুষকে ২০০০ থেকে ২০০২ সালের মধ্যে দীর্ঘকালীন এ গবেষণার জন্য নির্বাচন করেন গবেষকেরা।
২০১০ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে এসব অংশগ্রহণকারীদের ঘুমের পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা হয়। একই সময়ে তাদের হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যও নিয়মিত পরীক্ষা করা হয়।
গবেষকেরা দেখতে পান, যাদের ঘুমের ব্যাপ্তিকাল অনিয়মিত ছিল, তারা — যাদের ঘুমের পরিমাণ পর্যাপ্ত ছিল, তাদের তুলনায় — ১.৪ গুণ বেশি হৃদরোগের ঝুঁকিতে ছিলেন।
ন্যাশভিলের ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার-এর সহকারী অধ্যাপক ও গবেষণাটির প্রধান লেখক কেলসি ফুল বলেন, 'এসব ফলাফল এটাই ইঙ্গিত করে যে, নিয়মিত ঘুম হলে বা প্রতিরাতে ঘুমের পরিমাণ কাছাকাছি হলে তা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।'
শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ফাইনবার্গ স্কুল অব মেডিসিন-এর প্রিভেন্টিভ মেডিসিন বিভাগের চেয়ার ড. ডোনাল্ড লয়েড-জোন্স বলেন, 'হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য ঘুম গুরুত্বপূর্ণ।'
নিয়মিত বিশ্রাম না করলে হৃৎপিণ্ড ও সংবহনতন্ত্র সবসময় চাপে থাকে বলেও জানান লয়েড-জোন্স। তিনি এ গবেষণার অংশ ছিলেন না।
এ গবেষণায় যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাদের কারও অতীতে হৃদরোগের ইতিহাস নেই। এ বিষয়টিও মাথায় রাখার কথা জানান লয়েড-জোন্স।