চলে গেলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক নোবেল বিজয়ী জন গুডএনাফ
লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী, বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জন গুডএনাফ মারা গেছেন। মৃত্যুর সময় এই মার্কিন বিজ্ঞানীর বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। খবর বিবিসির।
গুডএনাফ অস্টিনের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস-এর ইঞ্জিনিয়ারিং এর অধ্যাপক ছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানিয়েছে, রোববার (২৫ জুন) মারা যান তিনি।
ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস- এর সভাপতি জে হার্টজেল বিবিসিকে বলেছেন, 'একজন অসাধারণ বিজ্ঞানি হিসেবে জন যে অবদান রেখে গেছেন তা অবিস্মরণীয়।'
ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস তাকে 'দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ, পরামর্শদাতা, উজ্জ্বল ও নম্র উদ্ভাবক' হিসেবে বর্ণনা করেছে।
লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ বৈদ্যুতিক যানের শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি গবেষণায় বিশেষ অবদান রাখা ও ব্যাটারির ওপর তার কাজের জন্য ২০১৯ সালে ৯৭ বছর বয়সে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন জন গুডএনাফ।
এই হালকা-পাতলা, শক্তিশালী ব্যাটারি প্রযুক্তিতে একটি বিপ্লব ঘটিয়েছে এবং ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোনের মতো আধুনিক বহনযোগ্য ইলেকট্রনিক্স পণ্য ব্যবহারেরর পথ প্রশস্ত করেছে। এছাড়াও, এসব ব্যাটারি সোলার প্যানেলসহ বৃহত্তর আধুনিক ডিভাইসগুলোকে শক্তি প্রদানের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ড. জন গুডএনাফ ১৯২২ সালে জার্মানিতে আমেরিকান পিতা-মাতার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন সেনাবাহিনীতে আবহাওয়াবিদ হিসাবে কাজ করেছিলেন। তিনি ইয়েল ইউনিভার্সিটি থেকে গণিতে স্নাতক ডিগ্রি এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি আইরিন ওয়াইজম্যানকে বিয়ে করেছিলেন। তার স্ত্রী ২০১৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
ড. গুডএনাফ ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি'তে তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন, যেখানে তিনি ২৪ বছর কাজ করেছেন এবং কম্পিউটারের জন্য র্যান্ডম-অ্যাক্সেস মেমোরি তৈরিতে সহায়তা করেছিলেন।
সেখানে, তিনি চুম্বকবিজ্ঞানের আধুনিক তত্ত্বের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন হয়ে ওঠেন, যা টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
২০১৬ সালে বিবিসির জন হামফ্রিস ড. গুডএনাফের কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে, তার আবিষ্কারগুলো মানুষের জীবনযাত্রাকে বদলে দিয়েছে- এ বিষয়টিকে তিনি কিভাবে দেখেন। জবাবে ড. গুডএনাফ বলেছিলেন, তিনি 'এ নিয়ে খুব একটা ভাবেননি'।
তিনি বলেছিলেন "আমি ধন্য যে আমি এই বিশ্বের মানুষকে কিছু না কিছু দিতে পেরেছি," তিনি বলেছিলেন। সেসময় tini কৌতুক করে বলেছিলেন, তার নিজের কাছে মোবাইল ফোন নেই কারণ তিনি চান না এটা তাকে 'বিরক্ত' করুক।