ফ্রান্সের দাঙ্গা চতুর্থ দিনে: লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ঠেকাতে ৪৫,০০০ পুলিশ মোতায়েন
প্যারিসে পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী কিশোর নাহেলের মৃত্যুর ঘটনায় চতুর্থ দিনের মতো দাঙ্গা চলছে ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩০ জুন) দেশজুড়ে হাল্কা সাঁজোয়া যানসহ ৪৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করেছে সরকার।
কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরেও দেশটির লিয়ন, মার্সেই, গ্রেনোবল শহরে দোকান লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে দাঙ্গাকারীরা। আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, দাঙ্গাকারীদের বেশিরভাগই তরুণ বয়সী। তারা শহরের ফাস্ট-ফুডের দোকান থেকে শুরু করে অ্যাপল স্টোরে পর্যন্ত লুটপাট চালিয়েছে, আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে এবং পুলিশ অফিসারদের লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়ছে।
সরকারের পক্ষ থেকে দাঙ্গাকারীদের বারবার শান্ত হওয়ার আহ্বান এবং কঠোর পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও থামছে না দাঙ্গা। এমনকি, শুক্রবার দিনের আলোতে প্রকাশ্যেই চলেছে লুটপাট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েকশো দাঙ্গাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
প্রতিবেদনে অনুযায়ী, পূর্বাঞ্চলীয় স্ট্রাসবার্গ শহরের একটি অ্যাপল স্টোর লুট করেছে দাঙ্গাকারীরা। পুলিশ তাতে বাধা দিলে সেখানে সংঘাত শুরু হয়। এছাড়া, প্যারিসের একটি শপিং মলে ফাস্ট-ফুডের দোকানের জানালা ভেঙে দেয় দাঙ্গাকারীরা। সেখানেও পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
এদিকে, দক্ষিণের বন্দর শহর মার্সেইতেও চলছে দাঙ্গা। লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ঠেকাতে সেখানে কাজ করছে পুলিশ, অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছে শহর থেকে।
মার্সেইয়ের মেয়র বেনোইট পায়ান ফ্রান্সের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, "এই লুটপাট ও সহিংসতা একেবারেই কাম্য নয়।"
শুধু শুক্রবার রাতেই ফ্রান্সজুড়ে ২৭০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে মার্সেইতে গ্রেপ্তার হয়েছে অন্তত ৮০ জন।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডার্মানিন জানান, শনিবার সকাল পর্যন্ত মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা ৪৭০ ছাড়িয়েছে। তার দাবি, বৃহস্পতিবার রাতের তুলনায় শুক্রবার রাতে 'সহিংসতার মাত্রা কিছুটা কম' ছিল। বৃহস্পতিবারে গ্রেপ্তার হয়েছিল ৯০০ জনের ওপরে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার প্যারিসের একটি শহরতলীর তল্লাশিচৌকিতে নাহেল নামের ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। উত্তর আফ্রিকার আরব বংশোদ্ভূত ওই কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় তারপর থেকেই বিক্ষোভে, সংঘাতে উত্তাল রয়েছে ফ্রান্স।