পুরনো কাপড় ও জুতা মেরামতের জন্য টাকা দেবে ফ্রান্স সরকার
টেক্সটাইল শিল্প থেকে উৎসারিত বর্জ্য এবং তাপজনিত দূষণ কমানোর জন্য পোশাক ও জুতা মেরামতে ভর্তুকি দেওয়ার একটি স্কিম চালু করতে যাচ্ছে ফ্রান্স সরকার। মঙ্গলবার পরিবেশ বিভাগের সেক্রেটারি বেরঞ্জে কুইয়া বলেন, পোশাক ও জুতা মেরামতের ধরন অনুযায়ী ৬ থেকে ২৫ ইউরো পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হবে।
উদাহরণস্বরূপ, একটি কাপড় শুধু পুনরায় সেলাই করতে গেলে ৬ ইউরো ছাড় পাবেন গ্রাহকেরা, অন্যদিকে একজোড়া জুতায় নতুন করে সোল লাগাতে গেলে ২৫ ইউরো ছাড় পাওয়া যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে কুইয়া বলেন, "এই উদ্যোগের ফলে যেসব ক্রেতারা উন্নতমানের জুতা প্রস্তুতকারী ব্র্যান্ড থেকে জুতা কিনেছেন যা রেডি-টু-অয়্যার পোশাক কিনেছেন, সেগুলো ছিড়ে গেলে বা নষ্ট হলে ফেলে দেওয়ার চাইতে মেরামত করে ব্যবহার করতে আগ্রহী হবেন। আর এটাই আমাদের আসল উদ্দেশ্য, জুতা ও টেক্সটাইলের জন্য একটা সার্কুলার ইকোনমি তৈরি করা যাতে করে পণ্য অনেকদিন টিকে, কারণ সরকার একটি পণ্যের 'সেকেন্ড লাইফ'-এ বিশ্বাস করে।"
কুইয়া বলেন, টেক্সটাইল শিল্প এখন যে পথে রয়েছে তাতে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের এক-চতুর্থাংশের জন্য দায়ী হতে পারে। এর ফলে এটি হবে বিশ্বের দ্বিতীয় দূষণকারী শিল্প।
"আমি আশা করছি যে, আমরা যা দেখতে পাচ্ছি চোখের সামনে- বিশ্বজুড়ে টেক্সটাইল শিল্পের প্রভাব; এ ব্যাপারে ফরাসিরা সচেতন হবেন এবং বুঝতে পারবেন যে আমরা এই মুহুর্তে যেভাবে বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করছি সেটা সঠিক উপায় নয়।"
ফ্রান্সের পরিবেশ মন্ত্রণালয় 'রিফ্যাশন' নামের একটি ফরাসি বেসরকারি সংস্থাকে এই স্কিম চালু করতে নির্দেশনা দিয়েছে।
রিফ্যাশন এর মাধ্যমে দর্জি, কাপড়ের ব্র্যান্ড এবং জুতা মেরামতের দোকানগুলো এই উদ্যোগে অংশগ্রহণ করতে পারবে। ভর্তুকি কার্যক্রমকে সহায়তার জন্য রিফ্যাশন এখান থেকে 'ইকো-কন্ট্রিবিউশন' হিসেবে খুব সামান্য কিছু অর্থ আদায় করবে। আগামী অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া এই স্কিমে সরকার অর্থায়ন করবে না।
আর ক্রেতাদের জন্য এই ভর্তুকি তাদের বিল থেকেই নেওয়া হবে। এরপর রিফ্যাশন ১৫ দিনের মধ্যে এই স্কিমে যুক্ত হওয়া কোম্পানিগুলোকে রিফান্ড করে দেবে।
রিফ্যাশন বলছে, ২০২২ সালে ফ্রান্সে ৩.৩ বিলিয়ন টুকরো কাপড়, জুতা এবং গৃহস্থালির জিনিস বাজারে উঠেছিল এবং মন্ত্রণালয়ের মতে, প্রতি বছর ৭০০,০০০ টন কাপড় ফরাসিরা ফেলে দেয়- যেগুলো এখন থেকে রিসাইকেল করা হবে। ফ্রিজ এবং ওয়াশিং মেশিনের মতো ইলেক্ট্রনিক পণ্যগুলোর ক্ষেত্রেও একই স্কিম চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে।