ভবিষ্যতে গাজার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান মিশরের
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ শুরুর প্রায় এক মাস অতিক্রম হয়েছে। গাজায় ক্রমাগত হামলা করে হামাসকে নির্মূলের জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তেল আবিব। এক্ষেত্রে স্থল অভিযানের মাধ্যমে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে ধ্বংস করা গেলে পরবর্তীতে উপত্যকাটি কীভাবে শাসিত হবে সেটি নিয়ে তৈরী হয়েছে বিতর্ক।
এদিকে ইসরায়েল ও এর অন্যতম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও ইস্যুটি নিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে অবস্থান এখনো পরিষ্কার করতে পারেনি। এমতাবস্থায় মিশরীয় প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সাথে আলাপ চলছে।
সম্প্রতি মার্কিন গণমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক রিপোর্টে এমন তথ্য উঠে এসেছে। সেখানে হামাসকে উৎখাতের পর অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নেওয়ার আগ পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল মিশরকে৷ তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট সিসি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
সম্প্রতি সিআইএ ডিরেক্টর উইলিয়াম বার্নস মধ্যেপ্রাচ্যে সফর করছেন। সেখানে আল সিসির সাথে এক বৈঠকে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এদিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ঐ রিপোর্টে বলা হয়, হামাসকে গাজা থেকে নির্মূলে মিশর কোনো ভূমিকা পালন করবে না৷ কেননা ঐ অঞ্চলের সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হামাসের সাহায্য দরকার বলেও মনে করছেন তিনি।
এরই মধ্যে গত রোববার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ইঙ্গিত দিয়েছেন, পিএ (প্যালেস্টিনিয়ান অথোরিটি) ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক মীমাংসার অংশ হিসেবে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে ফিরতে চায়। তবে গাজাবাসীর অনেকে মনে করেন, গাজায় পিএ'র শাসন এ সংকটের সমাধান নয় এবং মানুষ এটি গ্রহণও করবে না।
২৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ নামে এক ফিলিস্তিনি বলেন, "আমি মনে করি না যে, পিএ কর্তৃক গাজার নিয়ন্ত্রণভার দখল এ সংকটের সমাধান, যা মানুষ গ্রহণ বা সমর্থন করবে। আমি নিজেই এমনটা হওয়া প্রত্যাখ্যান করি। পশ্চিম তীরের নিয়ন্ত্রণ পিএ'র অধীনে। সেখানে কী ঘটছে আমি সেগুলো দেখছি।"
দীর্ঘ ৩৮ বছর দখলদারিত্ব বজায় রাখার পর ২০০৫ সালে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয় ইসরায়েল। মূলধারার ফিলিস্তিনি দলের শাসনের অধীনে থাকার পর একপর্যায়ে গাজার নিয়ন্ত্রণ চলে যায় হামাসের হাতে।
আর গত ৭ অক্টোবরও হামাসের হামলায় প্রায় ১৪০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। একইসাথে জিম্মি করা হয় প্রায় ২২০ জনেরও বেশি ইসরায়েলিকে।
জবাবে ইসরায়েলি আক্রমণে ইতোমধ্যে ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের বেশিরভাগই গাজাবাসী।
এ আক্রমণে গাজার আবাসিক এলাকার অর্ধেকের বেশি ধ্বংস হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ১৪ লাখের মতো ফিলিস্তিনি।