দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুরের মাংস নিষিদ্ধের প্রতিবাদ, খামারিদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি
দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুরের মাংস খাওয়ার শতাব্দী পুরোনো রীতি বাতিলের পরিকল্পনার প্রতিবাদে দেশটিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী সিউলে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে কুকুরের প্রজনন ও লালন-পালনকারী প্রায় দুইশ খামারি অংশ নেন।
বিক্ষোভকারীরা ট্রাকে করে খাঁচাবন্দি অনেকগুলো কুকুরও সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। তারা কুকুরগুলো বিক্ষোভস্থলে ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। তবে পুলিশ এতে বাধা দেয়।
সম্প্রতি দেশটির ক্ষমতাসীন দল পিপলস পাওয়ার পার্টি জানায়, চলতি বছরের শেষের দিকে কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করার জন্য তারা পদক্ষেপ নেবে।
দলের সদস্যরা বলছেন, কুকুরের মাংস খাওয়া নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটানোর সময় এখন। বিরোধী দল ও অনেক সাধারণ মানুষও এতে সমর্থন দিয়েছে।
দেশটির বাসিন্দা প্রায় পাঁচ কোটি দশ লাখ। এর মধ্যে ৬০ লাখ মানুষ বাসাবাড়িতে কুকুর পোষেন।
গত বছরের একটি জরিপে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ কুকুরের মাংস খাওয়ার বিরোধিতা করেন।
বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া জু ইয়ং-বং বলেন, 'রাজনীতিবিদদের কোনো শিল্প বন্ধ করার বা লোকেরা কী খেতে পছন্দ করবে তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার নেই।'
তিনি বলেন, 'আমরা এ ধারণার সঙ্গে একমত হতে পারি না যে, এটি বর্বর। কারণ যেসব দেশে পশুপালনের ঐতিহ্য রয়েছে, তারা কোনো না কোনো সময়ে কুকুরের মাংস খেয়েছে। এখনও এমন অনেক দেশ রয়েছে যেখানে কুকুরের মাংস খাওয়ার প্রচলন রয়েছে।'
জু বলেন, কুকুরের মাংস খাওয়ার রীতি বাতিলের বিলের আলোচনা থেকে খামারিদের সম্পূর্ণরূপে বাদ দেওয়া হয়েছিল। সরকার যে আর্থিক ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব করেছে সেটি সম্পূর্ণরূপে অপর্যাপ্ত। এ আইন বাস্তবায়িত হলে খামারিরা তাদের জীবিকা হারাবেন।
বিক্ষোভের এক পর্যায়ে খামারিদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। তারা বিক্ষোভ নিয়ে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের কাছাকাছি যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
বিক্ষোভকারীরা জানান, জুসহ তিনজনকে পুলিশ আটক করেছে।
কুকুরের মাংস খাওয়ার প্রচলন হ্রাস পেলেও খামারি ও অনেক রেস্তোরাঁর মালিক এটিকে বৈধ রাখার জন্য লড়াই করে আসছেন।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ কোরিয়ায় দশকপুরোনো এ প্রথা ক্রমেই দেশটির যুব সমাজের অপছন্দের হয়ে উঠছে। অনেকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদও জানিয়েছে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পশুপ্রেমীরা এ খাদ্যাভ্যাসের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারপরই দেশটির সরকার এ পদক্ষেপ নিল।