৮৬ বছর বয়সে মারা গেলেন কুয়েতের আমির শেখ নাওয়াফ আল আহমদ
জ্বালানি তেল-সমৃদ্ধ উপসাগরীয় দেশ কুয়েতের আমির শেখ নাওয়াফ আল আহমদ আল-সাবাহ মারা গেছেন। গত শনিবার কুয়েতের রাজ দরবারের পক্ষ থেকে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬।
কুয়েতের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে একটি বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, 'কুয়েতের আমির শেখ নাওয়াফ আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবাহ'র মৃত্যুতে শোক সংবাদ প্রকাশ করছি।' রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের নিয়মিত অনুষ্ঠান বন্ধ রেখে শুরুতে কোরআন থেকে তেলাওয়াত করার মাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর সম্প্রচার করা হয়।
কুয়েতের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা কুনা'র তথ্য মতে, গত নভেম্বরে অসুস্থতার জন্য শেখ নওয়াফ আল-আহমাদ আল-জাবেরকে জরুরি পরিস্থিতিতে হাসপাতালে নেওয়া হয়। যদিও পরে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল।
২০০৬ সালে কুয়েতের আমিরের পরবর্তী উত্তরাধিকারী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করা হয়। ৯১ বছর বয়সী সৎ ভাই শেখ সাবাহ আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবাহ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার পর– ২০২০ সালে কুয়েতের নতুন আমিরের দায়িত্ব নেন নওয়াফ। দায়িত্ব নেওয়ার পরই ২০২০ সালে তেলের দাম হ্রাসের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটকে মোকাবেলা করতে হয়েছিল তাঁকে।
কুয়েতে একটি শক্তিশালী সংসদীয় ব্যবস্থা আছে। শাসক রাজপরিবার মন্ত্রিপরিষদে মন্ত্রী নিয়োগের ক্ষমতা সংরক্ষণ করে। নানান বিষয়ে আইনপ্রণেতাদের সাথে রাজ পরিবারের মতপার্থক্য এ পার্লামেন্টের অগ্রগতি কমিয়ে দিচ্ছে এবং বিনিয়োগকারীদের অস্বস্তিতে ফেলছে।
একে একে সরকারের পদত্যাগ এবং সংসদ ভেঙে দেওয়ায়– কুয়েতে গত বছরে পাঁচটি ভিন্ন মন্ত্রিসভা হয়েছে। রাজনৈতিক অচলাবস্থা গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনগুলিকে স্থগিত করেছে, উন্নয়ন প্রকল্পগুলি বন্ধ করে দিয়েছে এবং অবকাঠামো ও শিক্ষাকে খারাপ অবস্থায় ফেলেছে, যা জনগণকে অসন্তুষ্ট করে।
কুয়েতের সাবেক শাসক শেখ আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহ-এর পঞ্চম পুত্র শেখ নাওয়াফ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৭ সালে। মাত্র ২৫ বছর বয়সে হাওয়ালি প্রদেশের গভর্নর হিসাবে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। তিনি ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, পরবর্তীতে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।