গুর্খা সৈন্য মারা যাওয়ার পর রাশিয়া ও ইউক্রেনে ওয়ার্ক পারমিট স্থগিত করলো নেপাল
নেপাল সরকার রাশিয়া ও ইউক্রেনে কাজ করার জন্য নাগরিকদের অনুমতি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। শুক্রবার সরকারি তথ্যমতে জানা যায়, ১০ জন নেপালি সেনা রুশ বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করার সময় মারা যাওয়ার ঘটনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নেপাল নিজেদের সৈন্যকে দলে না ভেড়ানোর জন্য রাশিয়ার কাছে আহ্বান করেছে। হিমালয়ের দেশটি চায় সকল সৈন্যকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি রুশ সরকার নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিক।
দেশটির সরকার থেকে জানানো হয়েছে, প্রায় ২০০ জনের মত নেপালি নাগরিক রুশ আর্মিতে নিযুক্ত আছে। নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এন.পি. সাউদ সরকারি সংবাদ মাধ্যম আরএসএসকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ১০০ জন নেপালি সৈন্য নিখোঁজ হওয়ার তথ্য সরকারের কাছে আছে।
নেপালি গুর্খা সৈন্যরা তাদের সাহস এবং যুদ্ধ করার ক্ষমতার জন্য পরিচিত। ১৯৪৭ সালে হওয়া এক চুক্তি অনুসারে গুর্খারা ব্রিটিশ এবং ভারতীয় আর্মিতে দায়িত্ব পালন করে আসছে। কিন্তু রাশিয়ার সাথে নেপালের এই ধরনের কোন চুক্তি নেই।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিভাগের পরিচালক কবিরাজ উপ্রেতির ভাষ্যমতে, নেপালিদের রাশিয়া ও ইউক্রেনে কাজ করার অনুমতি আপাতত দেয়া হচ্ছে না, যাতে নতুন করে আর কোন হতাহতের ঘটনা না ঘটে। তিনি আরও জানান, নতুন করে কোন সিদ্ধান্ত না নেওয়ার আগ পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। তিনি বলেন, "এই সিদ্ধান্ত আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই নেওয়া হয়েছে"।
নেপালের অভিবাসী শ্রমিকদের সরকারি অনুমতি লাগে বিদেশে চাকরি নেওয়ার জন্য। এর ফলে সরকার থেকেই তাদেরকে বিদেশে যেকোনো ধরনের বিপদের সময় সাহায্য করা হয়। পাশাপাশি কোনো ব্যক্তি বিদেশে কর্মরত অবস্থায় নিহত হলে তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থাও সরকার থেকে করা হয়।
লাখ লাখ নেপালি নাগরিক দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কারখানা শ্রমিক অথবা নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করে আসছেন।
বেকার নেপালি যুবকদের অনেক টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে রুশ আর্মিতে নিযুক্ত করার পাশাপাশি রাশিয়া যাওয়ার ভিসা প্রদান করার অভিযোগে গতমাসে পুলিশ ১০ জন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে।
রাশিয়া ২০২২ সালে প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনের উপর হামলা করলে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়, যেটিকে মস্কো আখ্যায়িত করেছে "বিশেষ সামরিক অভিযান" হিসেবে।
সরকারি হিসাবমতে, ৮০০ জন নেপালিকে গত দুই বছরে বেসামরিক কাজের জন্য রুশ ভিসা দেয়া হয়েছে। ইউক্রেনে কতজন কাজ করছেন সেই ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
কাঠমান্ডুর রুশ দূতাবাসের কেউই এই ব্যাপারে রয়টার্সকে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।