ভারতে কোচিং সেন্টারগুলো ১৬ বছরের কম বয়সি শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে না
ভারতে ১৬ বছরের কম বয়সি কোনো শিক্ষার্থীকে কোচিং সেন্টারে ভর্তি না করানোর নির্দেশনা দিয়েছে দেশটি সরকার।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা নির্দেশনায় কোচিং সেন্টারগুলোকে বলা হয়েছে, ১৬ বছরের কম বয়সি কোনো শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানো যাবে না। শুধু তা-ই নয়, অবাস্তব কোনো স্বপ্ন দেখিয়ে বিজ্ঞাপনও দেওয়া যাবে না এখন থেকে।
এছাড়া সফলভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই কেবল শিক্ষার্থীরা কোচিংয়ে ভর্তি হতে পারবে।
ভারতের কোচিং রাজধানী কোটায় ক্রমবর্ধমান আত্মহত্যার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের মানসিক সুস্থতার কথা বিবেচনা করে কোচিং সেন্টার নিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়া কোচিং সেন্টারগুলোতে অগ্নি দুর্ঘটনা, পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকা এবং শিক্ষাদানের পদ্ধতি নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগও এ নির্দেশনার অন্যতম কারণ।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, সব কোচিং সেন্টারেই এমন শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে, যাদের ন্যূনতম যোগ্যতা স্নাতক। এছাড়া শিক্ষার্থী ভর্তির সময় তাদের অভিভাবকের কাছে ভালো নম্বর বা র্যাঙ্কের অবাস্তব প্রতিশ্রুতি দিতে পারবে না কোচিং সেন্টারগুলো।
এছাড়া কোচিং সেন্টারে শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা না থাকলে সেই প্রতিষ্ঠানকে রেজিস্ট্রেশনই করতে দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে নয়া নির্দেশনায়। সেইসঙ্গে প্রতিটি কোচিং সেন্টারকেই নিজস্ব ওয়েবসাইট খুলতে হবে এবং তা আপডেটেড রাখতে হবে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের তথ্য সেই ওয়েবসাইটে দিতে হবে।
এর পাশাপাশি ওয়েবসাইটে কোচিং সেন্টারের কোর্সের বিবরণ, পাঠ্যক্রম পূরণের সময়কাল, হোস্টেলের বিবরণ, বেতনের বিবরণ দিতে হবে সবিস্তারে। শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে চাঙা রাখতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলে জানানো হয়েছে সরকারি নির্দেশনায়। প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত মনোবিদদের বিস্তারিত তথ্যও দিতে হবে প্রত্যেক শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের।
উল্লেখ্য, ভারতে মাধ্যমিকের পরই লাখ লাখ শিক্ষার্থী কোটায় চলে যায়। রাজস্থানের এই শহর দেশটির কোচিং রাজধানী হিসেবে পরিচিত। ইঞ্জিনিয়ারিং বা মেডিকেলে ভর্তির প্রস্তুতির নিতে এ শহরে পা রাখেন লাখ লাখ শিক্ষার্থী।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার জন্য বারবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে কোটা। এই প্রেক্ষাপটে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করল দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।
কোটা শহরে থাকা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই জেইই এবং নিইইটি-র জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই দুটি পরীক্ষাকে ভারতের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষাগুলোর অন্যতম গণ্য করা হয়। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী এর জন্য প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু মাত্র কয়েক হাজার শিক্ষার্থী সুযোগ পায়। সুযোগ না পাওয়ার হতাশায় অনেক শিক্ষার্থীই আত্মঘাতী হয়।