চীনের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসে ৪৭ জনের মৃত্যু
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় পার্বত্য ইউনান প্রদেশে ভূমিধসে ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঠান্ডা আবহাওয়া ও তুষারপাতের কারণে আরও ২০০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৬টার কিছু আগে ইউনান প্রদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় লিয়াংশুই গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঝেনশিয়ং কাউন্টির প্রচার বিভাগ জানিয়েছে, ১৮টি আলাদা বাড়িতে চাপা পড়া হতাহতদের উদ্ধার কাজ চালানো হচ্ছে।
ভূমিধসের সময় ৩৫ বছর বয়সী লুও ডংমেই ঘুমিয়ে ছিলেন। কিন্তু তিনি বেঁচে যান এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তাকে একটি স্কুলে সরিয়ে নিয়েছে।
লুও ডংমেই বলেন, "আমি ঘুমিয়ে ছিলাম কিন্তু আমার ভাই দরজায় কড়া নাড়ল এবং আমাকে জাগিয়ে তুলল। তারা আমাকে জানালো ভূমিধস হয়েছে। তাই তারা দ্রুত উপরে উঠে আমাদের জাগিয়ে তোলে।"
উদ্ধার করা অনেক বাসিন্দাকে একটি স্কুলে রাখা হয়েছে এবং তাদেরকে খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। তবে তারা এখনও ঠান্ডা আবহাওয়া মোকাবিলায় কম্বল এবং অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন।
লুও বলেন, ভূমিধসের স্থানের কাছাকাছি থাকা তার বোন ও খালার সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করতে পারছেন না। তিনি বলেন, "আমি এখন শুধু তাদের জন্য অপেক্ষা করতে পারি।"
উদ্ধারকারীরা গত সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিম চীনের একটি প্রত্যন্ত স্কিইং এলাকা থেকে পর্যটকদের সরিয়ে নিয়েছিল। কারণ ভারী তুষারপাতের কারণে এক সপ্তাহ ধরে এক হাজারেরও বেশি লোক আটকা পড়েছিল। সীমান্তের কাছে জিনজিয়াং অঞ্চলের আলতাই প্রদেশের একটি
গ্রামে তুষারধসের কারণে মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া ও কাজাখস্তানের সঙ্গে চীনের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
বৃষ্টি বা অনিরাপদ নির্মাণ কাজের কারণে ভূমিধসের ঘটনা চীনে অস্বাভাবিক কিছু নয়। গত বছর ভূমিধসে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছিল। এর মধ্যে ইনার মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে একটি উন্মুক্ত খনিতে ৫০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়। এছাড়া ২০২১ সালে নির্মাণাধীন একটি টানেল প্লাবিত হওয়ায় ১৪ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।
গানসু ও কিংহাই প্রদেশের মধ্যবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার মাত্র এক মাস পর ইউনানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটল। গত ১৮ ডিসেম্বর আঘাত হানা ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ১৪৯ জন নিহত হয়েছিল। এতে ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় এবং ভারী ভূমিধসে কিংহাই প্রদেশের দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়।