ক্ষুধায় মারা যাওয়া মানুষেরা 'ইডিয়ট': উগান্ডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী
২০২২ সালে উত্তর-পূর্ব উগান্ডায় ২২০০ জনেরও বেশি মানুষ অনাহারে এবং এ সম্পর্কিত অসুস্থতায় মারা গিয়েছিল। ক্ষুধায় মারা যাওয়া এসব ব্যক্তিদের 'ইডিয়ট' বলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন দেশটির এক মন্ত্রী।
মূলত দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি ওকেলো ওরিয়েম এই মন্তব্য করেছেন। তার এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সমালোচকেরা তাকে 'বধির' বলে আখ্যায়িত করেছেন।
তবে ওরিয়েমের যুক্তি এই যে, উগান্ডায় অনুকূল জলবায়ু এবং উর্বর জমি রয়েছে। এই কারণে লোকেদের নিজের জন্য খাদ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হওয়া উচিত।
এনটিভি উগান্ডা টেলিভিশন চ্যানেলকে ওরিয়েম বলেন, "কেবলই একজন ইডিয়ট, সত্যিকারের ইডিয়টই উগান্ডায় ক্ষুধায় মারা যেতে পারে।"
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, "উগান্ডায় জমি আছে। আপনি সেখানে কঠোর পরিশ্রম করতে পারেন। জলবায়ু পরিবর্তন সত্ত্বেও এখানকার জলবায়ু সহনশীল রয়েছে। আপনি সকালে বের হয়ে দ্বিগুণ পরিশ্রম করে জমিতে বীজ রোপণ করতে পারেন। এক্ষেত্রে যদি এই গাছ লাগানো হয়, তবে একজন খাদ্য জোগাড় করতে ব্যর্থ হয় কী করে?"
যদিও উগান্ডার মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির উত্তর-পূর্বে খাদ্য ঘাটতি বহু মানুষকে নিহতের পাশাপাশি প্রায় অর্ধ মিলিয়ন মানুষকে 'তীব্র ক্ষুধায়' ফেলেছে।
এটিতে ক্ষতিগ্রস্থ কারামোজা অঞ্চলের অংশ চেকউই কাউন্টির একজন আইনপ্রণেতা মোসেস আলেপার বিবিসিকে বলেন, "ওরিয়েমের মন্তব্য ঠিক নয়। এই দেশে কী হচ্ছে তা আপনারা জানেন। সেক্ষেত্রে একজন মন্ত্রীর কাছ থেকে এমন মন্তব্য আসাটা দুর্ভাগ্যজনক।"
ঐ আইনপ্রণেতা আরও বলেন, "আমি কারামোজার সবচেয়ে উত্পাদনশীল অংশগুলির মধ্যে একটি থেকে এসেছি। এখানে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয় এবং সেই থেকে আমরা খাদ্য উত্পাদন করি। কিন্তু আবহাওয়ার প্রতিকূল অবস্থায় আমরা অবশ্যই খাদ্য জোগাড় করতে ব্যর্থ হই। ফলে লোকেরা স্বভাবতই তখন দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হয়।"
আলেপার মনে করেন যে, এই অঞ্চলে ক্ষুধা প্রায়শই মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা অন্যান্য সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তন অন্যতম।
কারামোজা অঞ্চলের খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে বর্তমানে সরকারি কোনো তথ্য নেই। তবে অঞ্চলটির আধা-শুষ্ক জলবায়ু পরিস্থিতির কারণে এখানে শুষ্ক মৌসুমে প্রায়শই খাবারের তীব্র সংকট দেখা যায়।