গাজা যুদ্ধ: মধ্যপ্রাচ্যে স্টারবাকস ও কোক বয়কটে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো
গত বছরের অক্টোবরে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কায়রোর নায়েরা আহমেদ (১৯) নামে গণযোগাযোগের এক শিক্ষার্থী স্থানীয় স্টারবাকসে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
আহমেদ বলেন, 'আগে আমি আর আমার বন্ধুরা সবসময় স্টারবাকসে যেতাম, এখন এসব জায়গায় যাওয়াটা লজ্জাজনক।'
তিনি বলেন, 'আমরা এটুকু অন্তত করতে পারি। আমরা কেন এই পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে পণ্য কিনব?'
মিশরীয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত বেশ কয়েকটি ভোক্তা বয়কট তালিকায় আমেরিকান এই কফি চেইনের নাম রয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের কিছু অংশে এবং এর বাইরেও এই অবস্থা চলছে।
গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে এই অঞ্চলের অনেক ক্রেতা এবং পাকিস্তানের মতো মুসলিম দেশগুলো বড় বড় বিদেশি ব্র্যান্ড থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এর ফলে কিছু ব্র্যান্ডের বিক্রি অনেক কমে গেছে।
সম্প্রতি ব্লুমবার্গ দেখেছে, কায়রোতে স্টারবাকস ও ম্যাকডোনাল্ডসের কয়েক ডজন দোকান সম্পূর্ণ খালি পড়ে আছে।
অন্যদিকে স্থানীয় মিশরীয় সোডা ব্র্যান্ডের নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তাদের বিক্রি তিনগুণ বেড়েছে, কারণ ভোক্তারা কোকা-কোলা ও পেপসি এড়িয়ে চলছেন।
ম্যাকডোনাল্ডস কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিস কেম্পজিনস্কি কিছুদিন আগে সতর্ক করেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে তার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার কারণে ব্যবসায় 'উল্লেখযোগ্য প্রভাব' পড়েছে।
এদিকে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে কেএফসি, পিৎজা হাট, ক্রিসপি ক্রিম ও হার্ডির মধ্যপ্রাচ্যের ফ্র্যাঞ্চাইজি অপারেটর আমেরিকানা রেস্টুরেন্ট ইন্টারন্যাশনাল পিএলসির শেয়ার সৌদি স্টক এক্সচেঞ্জে ২৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
কিছু বিশ্লেষক বলেছেন, বয়কটের কারণে আগামীতে এগুলোর মুনাফা আরও কমে যাবে।
বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তা ব্র্যান্ডগুলো, বিশেষত আমেরিকান ব্র্যান্ডগুলো অপ্রত্যাশিত এক সংকটের মুখে পড়েছে।
এসব প্রতিষ্ঠান নিজেদের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার ওপর জোর দেওয়ার জন্য প্রকাশ্য বিবৃতি জারি করেছে।
তবুও যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তিন মাসে এই আন্দোলন ধীরে ধীরে জোরালো হয়ে উঠেছে, বয়কটের জোয়ার ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের মধ্যপ্রাচ্য রাজনীতির অধ্যাপক ফাওয়াজ জার্জেস বলেন, বর্তমান বয়কট বিশেষভাবে লক্ষণীয়, কারণ বিভিন্ন দেশের তরুণ জনগোষ্ঠী এই বয়কটের নেতৃত্ব দিচ্ছে।
গার্জেস বলেন, ম্যাকডোনাল্ডস বা স্টারবাকস বা অন্যান্য ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে। কারণ তরুণ সমাজ, যারা এসবের বড় ভোক্তা, তারা কী ঘটছে সে সম্পর্কে সচেতন এবং তারা খুব সক্রিয়; আর তারাই এই খাতে বিনিয়োগ বন্ধ করেছে।
যুদ্ধে ওয়াশিংটন ইসরায়েলের পক্ষে এমন ধারণা 'সত্যিই এই কর্পোরেশনগুলোকে প্রভাবিত করছে।
কারণ আমেরিকা এই যুদ্ধে জড়িত এবং এসব কর্পোরেশনের সিইওরা এই আমেরিকান বাণিজ্যিক, আর্থিক, সফট পাওয়ার সাম্রাজ্যেরই অংশ।
শুধু মধ্যপ্রাচ্যই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক দোলাচলের ফলে বিভিন্ন ব্র্যান্ডকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
ইউক্রেনে ভ্লাদিমির পুতিনের আগ্রাসন নিয়ে বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে গত দুই বছরে ম্যাকডোনাল্ডস থেকে শুরু করে কোকা-কোলা কোম্পানি পর্যন্ত কয়েক ডজন কোম্পানি রাশিয়া থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
অন্যদিকে, মধ্যপ্রাচ্যও কয়েক মিলিয়ন তরুণ ভোক্তা ব্র্যান্ডগুলো থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালানোর পর এ যুদ্ধ শুরু হয়।
গাজায় ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় ২৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন হামাস নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
ভয়াবহ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে এবং বিশ্বব্যাপী ফিলিস্তিনিদের প্রতি সাধারণ মানুষের সমর্থন আরও বেড়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) হামাসকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে এবং হামাসের কাছে এখনও তাদের ১০০ জনেরও বেশি বন্দি জিম্মি রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর কর্মকর্তারা ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করলেও, তারা গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষার আহ্বান জোরদার করতে শুরু করেছে এবং ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য চাপ দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিমান হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে, গত ১১ জানুয়ারি ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা চালানো হুথি বিদ্রোহীরা মধ্যপ্রাচ্যের ভোক্তাদের বিদেশি পণ্য পরিহার করার আহ্বান জানিয়েছিল।
তালেবানের প্রধান আবদুল মালিক আল-হুথি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে বলেন, 'মার্কিন ও ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের পরিধি অবশ্যই উপসাগরীয় দেশগুলোতে বাড়াতে হবে।'
অক্টোবরে বয়কট শুরু হলেও সম্প্রতি আরেক মুসলিম দেশ জর্ডানে এর জোয়ার এসে পৌঁছেছে।
দেশটির স্টারবাকস ও ম্যাকডোনাল্ডসের অনেক দোকান প্রায় ফাঁকা পড়ে আছে।
দেখা যায়, এসব দোকানের চেয়ারগুলো খালি, বুথগুলোতে শুধু নিজেদের কর্মীরা বসে আছে এবং ক্যাশিয়ারেরা তাদের কাউন্টারে অলস সময় কাটাচ্ছে।
জর্ডানের সুপারমার্কেটগুলোতেও বিপুল সংখ্যক বিদেশি ব্র্যান্ডের ট্যাগ ঝুলছে, যেগুলোকে 'বয়কট করা পণ্য' হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
কুয়েতের ব্যস্ত এলাকার স্টারবাকসের আউটলেটগুলোতে অক্টোবরের শুরু থেকে ক্রেতা আসা কমে গেছে। বয়কটের ফলে দেশীয় কফি স্টোরের বিক্রি বেড়েছে।
স্টারবাকস ব্লুমবার্গ নিউজকে তাদের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা বিবৃতির কথা উল্লেখ করে বলেছে, 'আমাদের কোনো রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা নেই। আমরা আমাদের মুনাফা কোথাও কোনো সরকার বা সামরিক অভিযানে ব্যয় করি না এবং কখনোই করবও না।'
কালিনোভস্কি ইক্যুইটি রিসার্চের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মার্ক কালিনোভস্কি বলেন, বিক্রির ওপর বর্তমান আঘাতের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের কিছু অংশে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর ব্যবসা বাড়ানোর ইচ্ছা কমে যেতে পারে।
এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকজন স্থানীয় ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর বিরুদ্ধে পুশব্যাক থেকে তারা লাভবান হচ্ছেন।
জর্ডানের কফি চেইন অ্যাস্ট্রোল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা মোথ ফাউরি আম্মানের সাতটি শাখায় যতটা সম্ভব আমেরিকান ও ফরাসি পণ্য সরিয়ে ফেলছেন এবং এর বদলে বিভিন্ন আঞ্চলিক পণ্য সরবরাহ করছেন।
তিনি বলেছেন, বয়কটের পরে তার ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠেছে। স্থানীয়রা স্টারবাকসকে বয়কট করায় কিছু জায়গায় তাদের বিক্রি ৩০% পর্যন্ত বেড়েছে।
কিছুদিন আগেও ধুঁকতে থাকা মিশরের ১০০ বছরের পুরোনো স্থানীয় সোডা ব্র্যান্ড স্পিরো স্পাথিসের বাণিজ্যিক পরিচালক ইউসুফ আতওয়ান বলেন, গত তিন মাসে তারা আকাশচুম্বী বিক্রি করেছে।
আতওয়ান বলেন, 'হঠাৎ করেই সুপারমার্কেট, রেস্তোরাঁ থেকে অর্ডার পেয়ে আমরা চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছিলাম।'
তিনি বলেন, 'ক্লায়েন্টরা রেস্তোরাঁগুলোতে যেত এবং হয় আমাদের ব্র্যান্ডের কথা জিজ্ঞাসা করত। তারা প্রায় সবাই বয়কট তালিকার পণ্য পান করতে অসম্মতি জানাত।
১০৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের দেশ মিশর এই অঞ্চলের সবচেয়ে জনবহুল দেশ। এর ৬০% লোক ৩০ বছরের কম বয়সী।
দেশটির ভোক্তারা সেখানকার ব্র্যান্ডগুলোর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। যেমন একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সারা এল-মাসরি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তার পণ্য ব্যবহারের অভ্যাস পুরোপুরি বদলে ফেলেছেন।
তার প্রিয় ডিশ ওয়াশার ট্যাবলেট ব্র্যান্ড ছিল ফেইরি, যা প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল কো'র উৎপাদিত। কিন্তু অক্টোবর থেকে এল-মাসরি পণ্যটি কেনা বন্ধ করে দিয়েছে, যা বয়কটের তালিকাতেও রয়েছে।
বিকল্প খুঁজতে খুঁজতে এক আত্মীয় তাকে বাসায় বানানোর রেসিপি দেন। তিনি এখন বেকিং সোডা, সাইট্রিক অ্যাসিড ও ডিশ সাবান মিশ্রিত করেন এবং এটি একটি আইস কিউব ট্রেতে প্যাক করে নিজের ডিশ ওয়াশিং সাবান তৈরি করেন।
এ ব্যাপারে পিএন্ড জি কোনো মন্তব্য করেনি।
তুরস্কে কিছু কর্মকর্তা কোকা-কোলা বয়কটের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন।
সুপারমার্কেট ও রেস্তোরাঁগুলোতে এই পানীয় ব্যাপকভাবে পাওয়া গেলেও গত নভেম্বরে তুরস্কের পার্লামেন্ট জানায়, তারা তাদের ক্যাফেটেরিয়া থেকে কোক সরিয়ে ফেলবে।
সিএফআরএ-এর পানীয় শিল্প বিশ্লেষক গ্যারেট নেলসন বলেন, ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন সোডা সংস্থাগুলোর আয়ের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করলে প্রভাবটি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
কোকের তুরস্ক পরিবেশকের বিক্রিও কমেছে।
যেখানে চতুর্থ প্রান্তিকের ভলিউম ২২% হ্রাস পেয়েছে, যা 'অবশ্যই একটি সংকটময় পরিস্থিতির কথা'ই প্রকাশ করে"।
তবে কোকা-কোলা ও পেপসিকো এ বিষয়ে মন্তব্য করেননি।
জর্ডান, কুয়েত ও মিসরের মতো দেশগুলোতে মূলত বয়কটের প্রভাব দেখা গেছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে মাত্র ১০ মিলিয়ন লোকের আবাসস্থল, যাদের বেশিরভাগই প্রবাসী, সেখানে খুব কম প্রভাব দেখা গেছে।
তবুও সেখানেও কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নিজেদের অবস্থান প্রকাশ করেছেন।
অক্টোবরের শুরুতে দুবাইয়ের বাইত মরিয়ম নামের একটি রেস্তোরাঁ পশ্চিমা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পরিবর্তে স্থানীয় ব্র্যান্ডের ফিজি পানীয় ব্যবহার করছে।
প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাদের গ্রাহকরা এই পরিবর্তনকে সমর্থন করছেন।
মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ সৌদি আরবে এর প্রভাব মূল্যায়ন করা কঠিন।
সৌদি আরবে সামাজিক মিডিয়ায় বয়কটের ব্যাপারে খুব কমই আলোচনা হয়েছে।
তবে এখানেও ব্লুমবার্গ নিউজের পরিদর্শন করা মার্কিন চেইনগুলোর বেশ কয়েকটি আউটলেট প্রায় খালি ছিল।
ওয়াশিংটনের আরব গালফ স্টেটস ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ আবাসিক স্কলার রবার্ট মোগিয়েলনিকি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বয়কট একটি আঞ্চলিক প্রতিবাদের কম ঝুঁকিপূর্ণ রূপ, কারণ এখানে সক্রিয়তার প্রতি খুব কম সহনশীলতা রয়েছে।
৭ অক্টোবরের হামলার পরের সপ্তাহে ম্যাকডোনাল্ডস (ইসরায়েল) জানিয়েছিলো এটি ইসরায়েলের সেনাদের বিনামূল্যে খাবার দিয়েছে। এর পরেই অনেকে প্রতিষ্ঠানটিকে বয়কটের ঘোষণা দেয়।
এরপরে, ব্র্যান্ডের সৌদি আরব ফ্র্যাঞ্চাইজি ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে বিবৃতি জারি করে এবং গাজার ত্রাণ প্রচেষ্টায় ২ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল (৫৩৩,০০০ ডলার) অনুদান দেয়।
মুসলিম অধ্যুষিত অন্যান্য দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোও একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।
ম্যাকডোনাল্ডস কর্পোরেশন এই সংঘাতে জড়িত কোনো সরকারকে অর্থায়ন বা সমর্থন করছে না বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
চেইনটি একটি ই-মেইল বিবৃতিতে বলেছে, 'মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের প্রতিক্রিয়ায় আমাদের অবস্থান সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য ও ভুল প্রতিবেদন দেখে আমরা হতাশ। স্বাধীন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো এই অঞ্চলে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে এবং তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেয়।'
তা সত্ত্বেও ব্র্যান্ডগুলোর এই সংকট মধ্যপ্রাচ্যের বাইরেও প্রসারিত হয়েছে।
পাকিস্তানে পেপসি ও কোকা-কোলার মতো আমেরিকান ব্র্যান্ডসহ বড় বহুজাতিক ব্র্যান্ডগুলোকে ইসরায়েলি পণ্য হিসেবে বর্ণনা করে পোস্টার ছড়িয়ে পড়েছে।
প্যালেস্টাইন-পন্থী 'বয়কট, ডাইভেস্টমেন্ট এন্ড স্যাংশনস' (বিডিএস) দল ফরাসি সুপারমার্কেট চেইন ক্যারেফোর এসএ-এর মতো ইউরোপীয় ব্র্যান্ডগুলোকে বয়কটের তালিকায় রেখেছে। ক্যারেফোর এসএ গত বছর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ইসরায়েলে ব্যবসা শুরু করে।
যদিও ক্যারেফোর এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
স্থানীয় অংশীদারের মাধ্যমে জর্ডান ও মিশরসহ মধ্যপ্রাচ্যের ৯টি দেশে এই গ্রোসারি চেইনটি ব্যবসা করে।
আলজাজিরা ক্যাপিটালের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক ফাহাদ ইরফান কোরেশি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন রেস্তোরাঁ চেইনগুলোর সবচেয়ে বড় অপারেটর আমেরিকানদের রেস্টুরেন্টগুলো বয়কটের কারণে বিক্রি ও আয়ের ওপর স্বল্পমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে আমেরিকানা জানিয়েছে, ২০২৩ সালের পুরো বছরের ফলাফলের ভিত্তিতে তারা তাদের ব্যবসায়িক পারফরম্যান্সের বিস্তারিত জানাবে।
কালিনোভস্কি বলেন, 'অনেক সময় মানুষ মার্কিন নীতির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে, এক্ষেত্রে তাদের ক্ষোভ উগরে দেওয়ার উপায় কী? একটি উপায় হিসেবে তারা আমেরিকাতে সদর দপ্তর রয়েছে এমন ব্র্যান্ডগুলো থেকে পণ্য কেনা বন্ধ করে দেয়।'