১ এপ্রিল: ৪৮ বছর আগে অ্যাপলের শুরু, তারপর বদলে দিয়েছে পুরো কম্পিউটিং জগৎকেই
অ্যাপলের যাত্রা শুরু হয় ক্যালিফোর্নিয়ায় স্টিভ জবসের বাবা-মায়ের বাড়ি থেকে। কোম্পানির শুরুটা চমকপ্রদ না হলেও কোম্পানিটি এখন ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রভাবশালী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
গত ১ এপ্রিল ৪৮ বছরে পা দেওয়া অ্যাপল কোম্পানি কম্পিউটার, আইফোন এবং হেডসেটের মতো পণ্যগুলোর মাধ্যমে কম্পিউটিং বিশ্বকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। অনেকেই অ্যাপলকে কম্পিউটিং বিশ্বকে বদলে দেওয়ার মূল প্রভাবক হিসেবে দেখেন যেহেতু কোম্পানিটি এর সাফল্যের মাধ্যমে এই ধরনের শিল্পের চেহারাই পাল্টে দিয়েছে।
আইফোন বর্তমানে অ্যাপলের সবচেয়ে জনপ্রিয় পণ্য হলেও কোম্পানিটি শুরুতে ব্যক্তিগত কম্পিউটার তৈরির দিকে মনোনিবেশ করেছিল এবং অ্যাপল-১ কম্পিউটার দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল।
স্টিভ জবস এবং স্টিভ ওজনিয়াকের মতো অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠাতাদের হাত ধরে যাত্রা শুরু করা কোম্পানিটিকে সফলতার জন্য অনেক কিছু নতুন করে শিখতে হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অ্যাপল-১ কম্পিউটারের মাত্র ৫০টি ইউনিট বিক্রি হওয়া সত্ত্বেও এর থেকে অনেক কিছুই শেখার ছিল। জবস যখন 'বাইট শপ'-এর পল টেরেলের কাছে অ্যাপল-১ এর বুদ্ধি নিয়ে যান তখন তিনি মাদারবোর্ড এবং যন্ত্রাংশ বিক্রি করার কল্পনা করেছিলেন যা নির্মাতারা কম্পিউটার তৈরি করতে ব্যবহার করতে পারবে।
টেরেল চেয়েছিলেন, যন্ত্রগুলোকে একত্রিত করে একটি স্বতন্ত্র কম্পিউটার হিসেবে বিক্রি করা হোক। শেষ পর্যন্ত এ ধারণাটি জবসকে কোম্পানির ব্যবসায়িক মডেল পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছিল এবং অ্যাপল জনসাধারণের কাছে পূর্বেই একত্রিত করা কম্পিউটার বিক্রি করার দিকে মনোনিবেশ করে। এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই অ্যাপলের ধীরে ধীরে অন্যান্য বিভাগে এর প্রভাব বিস্তার করা শুরু করে।
অ্যাপল প্রতিদ্বন্দিদের মতোই বিভিন্ন বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছিল। এমন এক সময় ছিল যখন দেনার জন্য কোম্পানিটি নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করার কথা ভেবেছিল।
জবস ফিরে এসে আবার কোম্পানিটির হাল ধরার পর থেকে এর ভাগ্য বদলে যেতে থাকে। ২০০৭ সালে আইপড, ম্যাকবুক এবং আইফোনের মতো বৈপ্লবিক পণ্য উদ্ভাবনের মাধ্যমে কোম্পানিটি নিজেকে একটি আলাদা উচ্চতায় নিয়ে যায়। পণ্যগুলো বর্তমানে কোম্পানিটির সর্বাধিক বিক্রি হওয়া পণ্যের মধ্যে অন্যতম এবং আয়ের একটি বড় উৎস।
২০২৪ সালে অ্যাপলের কিউ১ আয় থেকে জানা যায়, কোম্পানিটি ১১৯.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রাজস্ব তৈরি করেছে যা চার দশক আগের তুলনায় (অ্যাপলের প্রতিষ্ঠার) একটি বিশাল অঙ্কের অর্থ। দুর্ভাগ্যবশত জবস কোম্পানির বর্তমান ট্রিলিয়ন-ডলারের অর্থনৈতিক অবস্থা দেখে যেতে পারেননি কারণ তিনি ২০১১ সালে মারা যান। কিন্তু তিনি এমন দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন যা বর্তমানে তার উত্তরসূরি টিম কুক ঠিকভাবে পূরণ করে যাচ্ছেন।