ইসরায়েলকে সমর্থনকারী পণ্য বয়কটে সহায়তা করছে যে অ্যাপ
ইসরায়েলের সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে এমন পণ্য বয়কটে ক্রেতাদের সহযোগিতা করতে অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। টিকটক ও এক্স-এর ভিডিওতে দেখা যায়, সেই পণ্যগুলোর তালিকায় রয়েছে কোকাকোলা, নেসক্যাফে, অ্যাডিডাস, নেটফ্লিক্স, অ্যাপলের মতো ব্র্যান্ড।
অ্যাপটি বেশ সহজেই কাজ করে। সেক্ষেত্রে অ্যাপটির স্ক্যানার দিয়ে পণ্যের বারকোড স্ক্যান করতে হয়। তখন অ্যাপটি পর্যালোচনা করে তৎক্ষণাৎ বলে দেয় যে, পণ্যটির উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলকে সমর্থন করে কি-না।
যদি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি ইসরায়েলকে সমর্থন করে, তবে ডিসপ্লেতে 'নো থ্যাংকস' লেখা ভেসে ওঠে। অর্থাৎ, এতে করে পণ্যটি ব্যবহার না করতে ক্রেতার নিকট আর্জি জানানো হয়।
অ্যাপটি গত ১৩ নভেম্বর উন্মোচন করা হয়েছে। প্রায় ১ লাখ বার এটি ডাউনলোড করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার কমেন্ট থেকে ধারণা করা যায়, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে শুরু করে বেলজিয়াম পর্যন্ত নানা প্রান্তের মানুষ অ্যাপটি ব্যবহারে বেশ আগ্রহী।
গত ৭ অক্টোবর শুরু হয় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান যুদ্ধ। এতে হামাসের হামলায় প্রায় ১২০০ জন নিহত হয়েছে। জিম্মি করা হয়েছিল ২৪০ জনকে।
অপরদিকে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৩৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
বর্তমানে অ্যাপটি প্লে-স্টোর কিংবা অ্যাপ স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে পরোক্ষভাবে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাচ্ছে।
অ্যাপটি থেকে পাওয়া তথ্যমতে, হাঙ্গেরিতে বসবাসকারী আহমেদ ব্যাশব্যাশ অ্যাপটি তৈরি করেছেন। ডয়েচে ভেলের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সে জন্মসূত্রে গাজার একজন ফিলিস্তিনি নাগরিক।
আহমেদ জানান, গাজায় চলমান সহিংসতায় তিনি তার ভাইকে হারিয়েছেন। একইসাথে ২০২০ সালে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে সঠিক সময়ে চিকিৎসা সেবা না পাওয়ায় তার বোনের মৃত্যু হয়েছে।
আহমেদ বলেন, "আমি অ্যাপটি আমার ভাই ও বোনের পক্ষ থেকে তৈরি করেছি। নৃশংস দখলদারিত্বের কারণে যাদের আমরা হারিয়েছি। আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমার সাথে যা হয়েছে সেটা যাতে অন্য ফিলিস্তিনির সাথে না হয় সেই লক্ষ্যে কাজ করা।"
আহমেদ জানান, অ্যাপটি গুগল থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে এর হোম স্ক্রিনে থাকা একটি বাক্যের কথা বলা হয়েছে। যেখানে লেখা, "আপনি দেখতে পারবেন যে, আপনার হাতে থাকা পণ্যটি ফিলিস্তিনে চলমান শিশু হত্যাকে সমর্থন করে কি-না।"
তবে অ্যাপটি জনপ্রিয় অ্যাপ স্টোরগুলোতে ফের চালু করার চেষ্টা করছে আহমেদ। এতে করে আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে তা পৌঁছানো সম্ভব হবে।
আহমেদ জানান, অ্যাপটি বিনামূল্যে ব্যবহার করা হয়। আর এটি থেকে উপার্জিত অর্থ ফিলিস্তিনের নানা প্রতিষ্ঠানকে দান করা হয়। যা গাজার মানুষদের সহযোগিতায় ব্যয় করা হবে।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান