ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জাতিসংঘের সদস্যপদ নিয়ে বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি
জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র হওয়ার জন্য ফিলিস্তিনিদের আবেদনের ওপর সংস্থাটির নিরাপত্তা পরিষদে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে। এক কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের মধ্যে ফিলিস্তিনিরা এ মাসের শুরুতে পুনরায় সদস্যপদের জন্য আবেদন করেন। এর আগে ২০১১ সালে সদস্য রাষ্ট্র হওয়ার জন্য প্রথমবারের মতো তারা আবেদন করেছিলেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ভেটো প্রয়োগ করে বারবার এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে আসছে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে একটি নতুন সদস্য রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে পারে, তবে সেটি নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশের পর।
আঞ্চলিক জোট আরব গ্রুপ মঙ্গলবার একটি বিবৃতিতে ফিলিস্তিনিদের আবেদনের প্রতি 'অটল সমর্থন'জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘের প্রাসঙ্গিক রেজুল্যেশনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ফিলিস্তিন সমস্যার স্থায়ী সমাধানে জাতিসংঘের সদস্যপদ একটি ন্যায়সঙ্গত এবং সঠিক পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।'
সাধারণ পরিষদে 'ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক'মর্মে সুপারিশ প্রদানের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য আলজেরিয়া খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করেছে।
ফিলিস্তিনিরা ২০১২ সালে জাতিসংঘে পর্যবেক্ষকের মর্যাদা পায়। রাষ্ট্রটি পূর্ণ সদস্যপদ লাভের জন্য বছরের পর বছর চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ড. রিয়াদ মনসুর বলেছেন, 'আমরা পূর্ণ সদস্য হতে চাইছি। এটা আমাদের স্বাভাবিক ও আইনগত অধিকার।'
জাতিসংঘের সদস্যপদ পাওয়ার জন্য ফিলিস্তিনিদের চাপ একটি বড় বাধার সম্মুখীন। ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করে নিরাপত্তা পরিষদে সদস্যপদের সুপারিশ অবরুদ্ধ করতে পারে।
আরব জোট মঙ্গলবার বলেছে, 'আমরা নিরাপত্তা পরিষদের সকল সদস্যকে খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাই। অন্ততপক্ষে আমরা কাউন্সিল সদস্যদের এই জরুরি উদ্যোগে বাধা না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।'
যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনিদের পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার বিরোধিতা করে বলেছে, তারা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিতে সমর্থন করে, তবে তা শুধু ইসরায়েলের সাথে আলোচনার পরে। মার্কিন আইনের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছে, ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ছাড়াই যদি এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে জাতিসংঘের তহবিল কমাতে হবে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এপ্রিলে সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন।
ইসরায়েলের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান ফিলিস্তিনের সদস্যপদ প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে বলেছেন, এটি হবে 'ইতিমধ্যেই গণহত্যামূলক সন্ত্রাসের বিজয়।'
হামাস পরিচালিত এ অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলায় গাজায় ৩৩ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।