আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সীমিত করতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া
আবাসনের ওপর চাপ এবং অভিবাসন কমাতে অস্ট্রেলিয়াতে আসা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সীমিত করা হবে।
ক্যানবেরার সরকার জানিয়েছে, বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক শিক্ষা কার্যক্রম কর্মসূচি প্রায়ই অভিবাসন ও ভিসা জালিয়াতির জন্য ব্যবহৃত হয়।
২০২৩ সালে, সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়ায় ৭৮৭,০০০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেছে, যা কোভিড-১৯ মহামারীর আগের চেয়ে বেশি।
ক্যানবেরা সরকার ভাড়া বাসস্থানের ওপর চাপ কমাতে এবং অভিবাসনের মাত্রা কমাতে বিদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা সীমাবদ্ধ করার পরিকল্পনা করেছে।
সরকারের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীরা বলেছেন, অভিবাসন ব্যবস্থাপনা, আবাসনের সহজলভ্যতা বৃদ্ধি এবং অর্থনীতিতে দক্ষতার ঘাটতি মোকাবিলায় বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে স্টুডেন্ট ভিসা সীমিত করা হবে।
তবে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বলছে এ সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের শীর্ষ পছন্দ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার খ্যাতিকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।
শিক্ষাখাত অস্ট্রেলিয়ার রাজস্ব আয়ের অন্যতম একটি উৎস। তবে সরকার মনে করে যে অনেক ছোট বেসরকারী কলেজ, বৃত্তিমূলক স্কুল এবং বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অদক্ষ অভিবাসীরা অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে থাকার জন্য ব্যবহার করছে।
মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি ভাইস চ্যান্সেলর মাইকেল ওয়েসলি মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনকে বলেছেন যে তিনি আশা করেন সরকার অসাধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ব্যবস্থা নেবে।
ওয়েসলি বলেন, 'আমরা ভুয়া শিক্ষা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সমর্থন করি যা অ-প্রকৃত শিক্ষার্থীদের স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ তৈরি করে দেয়। আমরা নিশ্চিত যে আমাদের সব আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী সত্যিকারের, তাই আমরা আশা করি এই ভিসা সীমা কেবল ভুয়া শিক্ষা প্রদানকারীদের প্রভাবিত করবে।'
অস্ট্রেলিয়ার বড় শহরগুলোতে ভাড়া বাসা খুঁজে পাওয়া কঠিন এবং প্রায়শই ব্যয়বহুল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বছরের পর বছর ধরে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ না হওয়ায় দাম বেড়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যদি নিয়মের চেয়ে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করতে চায়, তাহলে তাদের জন্য আলাদা আবাসন সুবিধা নির্মাণ করতে হবে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য সঠিক সীমা এখনও ঘোষণা করা হয়নি।
ক্যানবেরার সরকার জানিয়েছে, তারা অস্ট্রেলিয়ার এডুকেশন সার্ভিসেস ফর ওভারসিজ স্টুডেন্টস অ্যাক্ট পরিবর্তন করে শিক্ষামন্ত্রীকে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য শিক্ষার্থী ভর্তির সীমা নির্ধারণের ক্ষমতা দেবে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়ায় বেশিরভাগ বিদেশি শিক্ষার্থী পাঁচটি দেশ থেকে আসে: চীন, ভারত, নেপাল, ফিলিপাইন এবং ভিয়েতনাম। তারা অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অবদান রাখছে।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন