কোপেনহেগেনের রাস্তায় হামলার শিকার ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মিতে ফ্রেডেরিকসেন রাজধানী কোপেনহেগেনের রাস্তায় হামলার শিকার হয়েছেন।
শহরের কেন্দ্রে একটি চত্বরে এই ঘটনাটি ঘটে। সেখানে একজন লোক হেঁটে তার দিকে এসে তাকে আঘাত করে। হামলাকারীকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লেইন এটিকে একটি 'ঘৃণ্য কাজ' বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, "আমরা যা বিশ্বাস করি ও ইউরোপে আমরা যেটির জন্য লড়াই করি, এ ঘটনা সেটির বিরুদ্ধে যায়।"
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "শুক্রবার (৭ জুন) সন্ধ্যায় কোপেনহেগেনের কুলটোরভেটে এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী মিতে ফ্রেডেরিকসেনের ওপর হামলা করেন, যাকে পরবর্তীতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।"
পুলিশ জানিয়েছে, তারা একজনকে আটক করেছে এবং ঘটনার তদন্ত করছে। তবে এর বেশি কিছু বলতে তারা রাজি হননি।
হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি।
এই হামলার দুই প্রত্যক্ষদর্শী ম্যারি অ্যাড্রিয়ান ও অ্যানা র্যাভন স্থানীয় সংবাদপত্র বিটিকে হামলার ব্যাপারে জানাতে গিয়ে বলেন, "একজন লোক উল্টো দিক দিয়ে এসে তার কাঁধে একটি জোরালো ধাক্কা দেয়, যার ফলে তিনি পাশে পড়ে যান।"
তারা জানিয়েছেন, ধাক্কা জোরালো হলেও প্রধানমন্ত্রী মাটিতে পরে যাননি। এরপর প্রধানমন্ত্রী গিয়ে একটি ক্যাফেতে বসেন, তারা যোগ করেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নির্বাচনে ডেনমার্কের ভোটের দুই দিন আগে এ হামলার ঘটনা ঘটলো।
ডেনমার্কের গণমাধ্যম টিভি২ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ফ্রেডেরিকসেন হামলার আগে তার দলের প্রধান প্রার্থী ক্রিস্টেল শ্যালডেমোসের সাথে একটি ইউরোপীয় নির্বাচনী ইভেন্টে অংশ নিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী মিতে ফ্রেডেরিকসেন ডেনমার্কের জোট সরকারের সবচেয়ে বড় দল সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস এর নেতা। সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস এখনও নির্বাচনে নেতৃত্ব দিলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দলটির সমর্থন অনেকটাই কমেছে।
ডেনমার্কের পরিবেশ মন্ত্রী ম্যাগনাস হিউনিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ (পূর্বের টুইটার) বলেছেন, "মিতে স্বাভাবিকভাবেই এই আক্রমণে হতবাক। আমি অবশ্যই বলতে চাই যে আমরা যারা তার কাছাকাছি থাকি, এই ঘটনা আমাদের সকলকেই নাড়া দিয়েছে।"
ইইউ প্রধান চার্লস মিশেল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
স্লোভাক প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোর ওপর হামলা হওয়ার এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীর ওপর নতুন করে হামলার ঘটনা ঘটলো। ফিকো তার সমর্থকদের অভ্যর্থনা জানাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। প্রথমদিকে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও অস্ত্রোপচার করার পর তিনি সুস্থ হন।
৪৬ বছর বয়সী মিতে ফ্রেডেরিকসেন ২০১৯ সালে মধ্য-বামপন্থি সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস-এর নেতা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। ডেনমার্কের ইতিহাসে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন। কারণ তখন যুক্তরাষ্ট্র ডেনমার্কের গ্রিনল্যান্ড কিনতে চাইলে তিনি তাতে রাজি হননি।
২০২২ সালে চলাকালীন লক্ষ লক্ষ মিঙ্ককে (বেজির মতো দেখতে এক ধরনের জন্তু) হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো তার সরকার। এর ফলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন মিতে ফ্রেডেরিকসেন।