কুমিরের ভয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত! রান্না করে খেয়ে ফেললেন বাসিন্দারা
অস্ট্রেলিয়ান নর্দান টেরিটোরির বুল্লা শহরের প্রত্যন্ত এক অঞ্চলে ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল নোনা পানির একটি কুমির। এবার ৩.৬ মিটারের এই প্রাণীটিকে খেয়েই যেন প্রতিশোধ নিলেন ঐ এলাকার বাসিন্দারা।
মূলত কুমিরটি এলাকার পোষা প্রাণী খেয়ে ফেলতো এবং শিশুদের ধাওয়া করতো। সেক্ষেত্রে গতকাল (বুধবার) শহরটির পুলিশ এলাকার বাসিন্দাদের ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে গুলি করে প্রাণীটিকে হত্যা করে।
বিবৃতিতে নর্দার্ন টেরিটরি পুলিশ জানায়, কুমিরটি শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের তাড়া করছিল। একইসাথে একাধিক পোষা কুকুর খেয়ে ফেলেছে।
পাবলিক ব্রডকাস্টার এবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুলিশের সার্জেন্ট অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইড বলেন, "কুমিরটিকে দিয়ে লেজের স্যুপ রান্না করা হয়েছিল। আমি নিজেও ঐ বারবিকিউতে ছিলাম। প্রাণীটির কয়েকটি টুকরো কলা পাতায় মুড়িয়ে মাটির নিচে রান্না করা হয়েছিল। এটা ঐতিহ্যবাহী খাবারের আয়োজন ছিল। কয়েকজন পেট ভরে খেয়েছে।"
অস্ট্রেলিয়ায় নোনা ও মিঠা পানির কুমিরের উভয় প্রজাতিকেই সংরক্ষণ করা হয়। সেক্ষেত্রে ১৯৭১ সাল থেকে ফেডারেল আইনের মাধ্যমে প্রাণীগুলোর শিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেননা তখন শিকারের কারণে প্রাণীটি প্রায় বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছিল।
দেশটির স্থানীয় সরকারের মতে, নর্দান টেরিটরিতে এখন প্রায় ১ লাখ কুমিরের আবাসস্থল। একইসাথে কয়েকদশক ধরে প্রাণীটির সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিবেশী রাজ্য কুইন্সল্যান্ড ও ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলজুড়ে আরও হাজার হাজার কুমির ছড়িয়ে আছে।
অঞ্চলটির নোনা পানির কুমিরগুলি ছয় মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। এক টন ওজনের এই প্রাণীটি যেকোনো কিছুই খেয়ে ফেলতে পারে।
এক্ষেত্রে কুমির ও মানুষের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। তাই অস্ট্রেলিয়ার নর্দান টেরিটরি জনবহুল এলাকা থেকে প্রতি বছর শত শত নোনা পানির কুমির সরিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে গত এপ্রিলে উত্তর কুইন্সল্যান্ডে কুমিরের আক্রমণে ১৬ বছর বয়সি একটি ছেলে মারা যায়। এছাড়াও গত বছর অঞ্চলটিতে একটি কুমিরের পেট থেকে ৬৪ বছর বয়সী এক জেলের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছিল।