শিক্ষার্থীদের সময় ব্যবস্থাপনায় ৮ পরামর্শ
সময় ব্যবস্থাপনা বেশ গুরুত্বপূর্ণ এক গুণ। একজন শিক্ষার্থী এই গুণটি আয়ত্ত করতে পারলে তার শিক্ষাজীবনের যাবতীয় কাজ করা সহজ হয়ে যায়। একইসাথে সফলতা লাভের ক্ষেত্রেও সেটি বেশ ইতিবাচক হিসেবে কাজ করে।
তবে সময় ব্যবস্থাপনা খুব সহজ কথা নয়। বরং এক্ষেত্রে বেশকিছু কৌশল রপ্ত করতে হয়। আর সেটি বিবেচনায় রেখেই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সময় ব্যবস্থাপনায় আটটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
১। ক্যালেন্ডার তৈরি করুন
আচমকা পরিকল্পনা এড়িয়ে চলতে হবে। বরং এমনভাবে কার্যকরী ক্যালেন্ডার তৈরি করতে হবে যেখানে ডেডলাইন, অ্যাকাডেমিক পরীক্ষা, সামাজিক অনুষ্ঠান ও অন্যান্য নানা কাজ গুছিয়ে নেওয়া যায়। এটিকে সবসময় নিজের সাথে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় মোবাইলের ডিজিটাল ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা।
২। রিমাইন্ডার ঠিক করা
ছোটখাটো কাজগুলো যাতে বেখায়ালি আচরণের ফলে ভুলে না যান তাই রিমাইন্ডার ঠিক করতে হবে। এক্ষেত্রে মোবাইলের অ্যালার্ম সেট করা যেতে পারে। এমনকি বেশিরভাগ ফোনে আলাদা করে রিমাইন্ডার অপশনও থাকে। এতে করে ব্যস্ততার মাঝেও ছোটোখাটো কাজ সুষ্ঠুভাবে করা সম্ভব হবে।
৩। শিডিউল তৈরি করা
প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রার ধরন আলাদা। সেক্ষেত্রে তাদের শিডিউলও আলাদা হওয়া উচিত। ফলে নিজের বাস্তবতাকে মাথায় রেখে শিডিউল তৈরি করতে হবে। সেখানে ক্লাস, পড়ালেখার সময়, সামাজিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি বিষয়গুলোকে সাজাতে হবে। এক্ষেত্রে নিজের কর্মক্ষমতাকেও বিবেচনায় নিতে হবে।
৪। টুল ব্যবহার
বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে টুল ব্যবহার করে জীবনকে বেশ সহজ করা যায়। ডিজিটাল ক্যালেন্ডার, হেলথ অ্যাপ, মানি ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ কিংবা পড়াশোনা সংক্রান্ত নানা টুল ব্যবহারের ফলে সময় অনেক বেঁচে যায়। এতে করে পূর্বের তুলনায় কাজও আরও বেশি পরিমাণে ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে করা যায়।
৫। কাজের ক্রম ঠিক করা
প্রত্যহ নানা ধরনের কাজ থাকে। এদের মধ্যে কোনোটি সহজ, আবার কোনোটি কঠিন। আবার একটি কাজ করতে যতোটা উৎসাহ পাওয়া যায়; অন্য কাজে ততো উৎসাহ পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে নিজের মতো করে কাজের ক্রম ঠিক করতে হবে।
যে-সব কাজের ডেডলাইন আগে, সেগুলো প্রথমে শুরু করতে হবে। আর অনেক কাজের ক্ষেত্রে সহজে ও উৎসাহ সহকারে শুরু করা যায় এমন কাজগুলো আগে করে গতিশীলতা আনতে হবে। এরপর কঠিন ও কম আনন্দদায়ক কাজগুলো করতে হবে।
৬। নিজের আনন্দ ও যত্নের জন্য সময়
কাজের সাথে নিজের ব্যক্তিগত জীবনে সামঞ্জস্য রাখতে হবে। কাজের শিডিউলের মাঝে এমন কিছু বিষয় রাখতে হবে যা মানসিক প্রশান্তি দেয়। এক্ষেত্রে নিজের শখ ও বিশ্রামের বিষয়টিও নজরে রাখতে হবে। এতে করে ব্যস্ত জীবনের মাঝেও নিজের যত্ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
৭। সহযোগিতা নিতে হবে
আশেপাশের ঘনিষ্ঠ মানুষের কাছ থেকে সহযোগিতা নিতে হবে। নিজের সহপাঠী, পরিবার-পরিজনের সাথে আলাপ-আলোচনা করতে হবে। যাতে করে নিজের সমস্যা সমাধান করে পড়াশোনার পরিবেশ তৈরি করা যায়।
৮। বাস্তববাদী হওয়া
সবসময় পরিকল্পনা অনুযায়ীই সব হবে এমনটা ভাবা বোকামি। বরং প্রায়শই পরিকল্পনা বাস্তবতার নিরিখে পরিবর্তন করতে হতে পারে। একইসাথে কোনো উদ্যোগ গ্রহণের সময় বাস্তববাদী হতে হবে। ঐ কাজটি সঠিক সময়ে শেষ করা যাবে কি-না সেটি ভাবতে হবে। এমনকি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য হাতে অতিরিক্ত সময় রাখতে হবে। এতে করে নিজের ওপর চাপও কমে আসবে।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান