সহিংস বিক্ষোভে ২২ জনের মৃত্যুর পর বিতর্কিত ‘কর বৃদ্ধি’ আইন প্রত্যাহার করল কেনিয়া
কেনিয়ায় সহিংস বিক্ষোভের মুখে বিতর্কিত 'কর বৃদ্ধি সম্বলিত ফাইন্যান্স (অর্থ) আইন' প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো। বিতর্কিত আইনটি নিয়ে চলমান বিক্ষোভের মধ্যেই মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিক্ষোভকারীরা দেশটির পার্লামেন্টে আগুন ধরিয়ে দেয়।
দেশব্যাপী বিক্ষোভ সত্ত্বেও মঙ্গলবার সংসদে আইনটি পাস করা হয়েছিল। পরবর্তীতে বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টে প্রবেশ করে ভেতরে ভাঙচুর চালায় এবং ভবনের কিছু অংশে আগুন দেয়।
রুটো প্রাথমিকভাবে বিক্ষোভের প্রতি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে সেটি দমনে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কোনো প্রকার 'সহিংসতা ও নৈরাজ্য' সহ্য না করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সহিংস বিক্ষোভের মুখে অবশেষে জনতার দাবি মেনে নিয়ে বুধবার (২৬ জুন) বিতর্কিত আইনটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন রুটো।
বুধবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রেসিডেন্ট বলেন, 'এটি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে এই আইনের প্রতি কেনীয়দের কোনো সমর্থন নেই। আমি তাদের দাবি মেনে নিচ্ছি।'
বিক্ষোভকারী তরুণদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট রুটো বলেন, 'আমি কেনিয়ার জনগণের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। তারা জোর দিয়ে বলছেন, আর্থিক বিল ২০২৪ নিয়ে তাঁদের করার কিছু নেই। এ কারণে বিলটিতে আমি স্বাক্ষর করব না। এটি প্রত্যাহার করা হবে।'
রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত কেনিয়ার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (কেএনএইচআরসি) দেওয়া তথ্য অনুসারে, মঙ্গলবারের সহিংস বিক্ষোভে দেশটিতে কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়েছেন।
প্রস্তাবিত আইনটির উদ্দেশ্য ছিল, কেনিয়ার ৮০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কমিয়ে আনা। কিন্তু আইনটি পাশ হলে কেনীয়দের আগের থেকে আরও বেশি কর দিতে হত যা অর্থসংকটে থাকা নাগরিকদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াতো।
জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিতে দীর্ঘদিন থেকেই চাপে থাকা কেনীয়রা তাই নতুন আইনে কর বাড়ানোর বিরোধিতা করেছেন। কোভিড মহামারি, টানা দুই বছরের খরা এবং মুদ্রাস্ফীতির ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক দুরবস্থা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটির অধিকাংশ জনগণ।
যদিও প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো জনগণের বিক্ষোভের মুখে বিলটি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন, কেনিয়ার অনেক নাগরিকই তার পদত্যাগ দাবি করেছেন।
অনুবাদ: তাসবিবুল গনি নিলয়