‘বুড়ো’ বাইডেনকে নিয়ে জরিপে ভোটাররা আশঙ্কা প্রকাশ করলেও মিত্ররা এখনই সরে যাচ্ছেন না
নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছেন জো বাইডেন।
যুক্তিতর্কে ট্রাম্পকে হারাতে না পারায় আতঙ্কিত ডেমোক্র্যাটরা ইতোমধ্যেই ৮১ বছর বয়সি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বাদ দেওয়ার দাবি তুলেছেন।
এদিকে সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, কিছু ডেমোক্রেটিক ভোটার বিতর্কের পর প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে জো বাইডেন মানসিকভাবে প্রস্তুত কিনা— তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
রোববার (৩০ জুন) প্রকাশিত সিবিএস নিউজ/ইউগভ জরিপে দেখা গেছে, ৭২ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটার বিশ্বাস করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করার জন্য বাইডেন মানসিকভাবে দৃঢ় নন। এর আগের একটি জরিপেই ৬৫ শতাংশ ভোটার এমন আশঙ্কা করেছিলেন। জরিপে ৪৯ শতাংশ ভোটার সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়েও একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
জরিপ অনুযায়ী, ৪৫ শতাংশ নিবন্ধিত ডেমোক্র্যাট ভোটার মনে করেন যে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে অন্য প্রার্থীকে সুযোগ করে দেয়া উচিত।
বৃহস্পতিবারের বিতর্কের আগেই ৮১ বছর বয়সি বাইডেন এবং ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প এর প্রার্থীতা নিয়ে অনেক ভোটারের মধ্যেই শঙ্কা থাকলেও বৃহস্পতিবারের বিতর্কের পর বাইডেনকে নিয়ে তাদের শঙ্কা আরো বেড়েছে।
মেরিল্যান্ড কংগ্রেসম্যান জেমি রাসকিন পরিস্থিতিকে 'কঠিন' বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন। পার্টিতে এ নিয়ে গুরুতর আলোচনা চলছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বাইডেনের ওপরেই নির্ভর করে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, 'বাইডেনের সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, আমাদের দল এক থাকবে এবং দলের প্রচারণার জন্য বাইডেনের ভূমিকা অপরিসীম।'
বিতর্কের পরে ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ওবামা স্বীকার করেছেন, বাইডেন বিতর্কে তার সেরাটা দিতে পারেননি। তবে তারা এবং আরো অনেক ডেমোক্র্যাট মিত্র বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর বিষয়টিকে নাকচ করে দিয়েছেন।
হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ডেমোক্র্যাট নেতা হাকিম জেফ্রিস বলেছেন, বিতর্কটি বাইডেনের জন্য একটি বড় ধাক্কা হলেও এটি তাকে (বাইডেন) একটি প্রত্যাবর্তনের সুযোগ করে দিতে পারে।
সিবিএস নিউজ/ইউগভ জরিপ বাইডেনের মানসিক দৃঢ়তা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ দেখা গেলেও তার প্রচারাভিযানের চেয়ারম্যান জেন ও'ম্যালি বাইডেনের পক্ষেই কথা বলেছেন, তিনি যুক্তি দেখিয়ে বলেছেন, জরিপগুলো থেকে দেখা যায় বেশিরভাগ অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিরা বিডেনকে নিয়ে চিন্তিত, মার্কিন নাগরিকরা নয়।
তবে বিতর্কের পরে ভোটারদের সাক্ষাৎকার থেকে পাওয়া তথ্য সিবিএস নিউজের জরিপে ভোটারদের দেখানো উদ্বেগকে সমর্থন করে। একজন ডেমোক্র্যাটিক ভোটার বিবিসিকে বলে, তারা আগের থেকে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে বাইডেনের ক্ষমতার প্রতি কম আত্মবিশ্বাসী।
জো বাইডেন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট। বিতর্কে ভালো করতে না পারার বিষয়টি নিজেও স্বীকার করেছেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর কোনো ইঙ্গিত দেননি তিনি। ট্রাম্পকে নির্বাচনে হারানোর দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।
অনুবাদ: তাসবিবুল গনি নিলয়