সপ্তাহে ৪ কর্মদিবস: এবার নিজেদের পছন্দমতো সময়ে কাজ করতে পারবেন কর্মীরা
শত শত ব্রিটিশ কর্মীকে নিজেদের পছন্দমতো সময়ে কাজ করার সুবিধা দেওয়া হবে। মূলত সপ্তাহে চার কর্মদিবসের ক্যাম্পেইনের নতুন পাইলট প্রজেক্টের অংশ হিসেবে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসির।
প্রকল্পটির সময়কাল হবে ছয় মাস। যাতে ইতোমধ্যেই ছয়টি কোম্পানি যুক্ত হয়েছে।
ক্যাম্পেইনের ডিরেক্টর জানান, প্রকল্পটিতে ৫০টি কোম্পানি থেকে ৩০০ জন কর্মীকে যুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের বৃহত্তম ট্রেড ইউনিয়ন ইউনিসন ও বিভিন্ন বৃহৎ ফার্ম প্রকল্পটিতে সমর্থন জানিয়েছে। কিন্তু বেশকিছু কোম্পানি আবার ট্রায়ালের পর চার সপ্তাহে কর্মদিবসের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে।
ক্যাম্পেইন ডিরেক্টর জো রাইলে জানান, শত শত ব্রিটিশ কোম্পানি ও একটি লোকাল কাউন্সিল ইতোমধ্যেই সপ্তাহে চার কর্মদিবসের রীতি চালু করেছে। এতে করে কর্মী ও মালিক কারোই ক্ষতি হচ্ছে না।
ক্যাম্পেইনটির গবেষণা কাজে সহযোগিতা করছে ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি ও বোস্টন কলেজ। এক্ষেত্রে নতুন ট্রায়ালে কমিউনিটি হাউজিং প্রতিষ্ঠান ব্রন এফন কমিউনিটিও যুক্ত হয়েছে।
এই সম্পর্কে কোম্পানিটির ডিরেক্টর উনিজ মাথুর বলেন, সপ্তাহে কর্মদিবস কমিয়ে আনার আনার ক্ষেত্রে কোম্পানির পারফরম্যান্সে আমি মুগ্ধ। একইসাথে কর্মীদের সুস্থতা নিশ্চিতেও এটি কার্যকরী।" তিনি এটিকে কর্মীদের কর্মজীবনের ভারসাম্য উন্নত করতে সাহায্য করার সুযোগ হিসেবে দেখছেন।
ক্যাম্পেইনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ৬১টি কোম্পানি মোট দেড় বছরের ট্রায়াল পরিচালনা করেছে। এর মধ্যে অন্তত ৫৪টি কোম্পানি সপ্তাহে চারদিনের কর্মদিবসের রীতি গ্রহণ করেছে।
সপ্তাহে চার কর্মদিবস: সফল না ব্যর্থ?
সোফি গ্রিভস লিভারপুলে রিসার্চ কেমিস্ট হিসেবে কাজ করেন। সেখানে তিনি নিজের সুবিধামতো কাজের সময় নির্ধারণ করেন। এক্ষেত্রে সোমবার থেকে শুক্রবার ৭টা থেকে ১০টার মধ্যে যেকোনো সময় তিনি কাজে যান। এরপর তিনি আট ঘণ্টা কাজ করেন।
সোফি মনে করেন, এমন সুবিধা থাকা বেশ সহায়ক। কেননা এতে করে চাইলে দেরি করে কাজে বসা যায়। কিংবা ঘুম ভেঙে গেলে আগেও কাজে বসা যায়। তিনি বলেন, "আমি খুবই কর্মক্ষম হতে পারে যদি সে নিজেই নিজের সময় নির্ধারণ করতে পারে।"
এদিকে গত সপ্তাহে কোম্পানি আসদার পক্ষ থেকে সপ্তাহে চার কর্মদিবসের ট্রায়াল স্থগিত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কর্মীরা মনে করছেন, চার দিনে তাদের অপর অধিক চাপ পড়ে যায়।
মূলত কোম্পানিটির পরিকল্পনা ছিল, স্টোর ম্যানেজাররা চার দিনে যাতে ৪৫ ঘন্টা করে কাজ করে। তবে সেখানকার কর্মীদের মাঝে পাঁচ দিন ধরে ৩৯ ঘন্টা কাজ করাই জনপ্রিয় বলে দেখা যায়।
এদিকে কোম্পানি মরিসন্সের পক্ষ থেকে গত জানুয়ারি মাসে সপ্তাহে চার কর্মদিবসের ট্রায়াল থেকে সরে আসা হয়েছে। ফলে সেখানকার কর্মীদের চার দিনে ৩৫.৫ ঘণ্টা কাজ করতে হতো। যেখানে মাঝে মাঝে শনিবারও কাজ করতে হতো।
এদিকে কিছু কিছু কোম্পানি আবার উলটো পথে হাঁটছে। চলতি মাসের শুরুতে গ্রীসে কিছু কোম্পানি সপ্তাহে ছয় কর্মদিবসের রীতি চালু করেছে। মূলত উৎপাদন বাড়াতে ও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতেই এই উদ্যোগ।
তবে এগুলো মূলত এমন সব ব্যবসার সাথে যুক্ত যেগুলো ২৪ ঘণ্টাই অপারেশনে থাকে। একইভাবে সপ্তাহে ছয়দিন কাজ করার ব্যাপারটিও ঐচ্ছিক। যারা এমনটা করে থাকে তারা অতিরিক্ত কাজের জন্য ৪০ ভাগ অতিরিক্ত বেতন পান।
রাইলে প্রজেক্টির সেকেন্ড ট্রায়ালের ফলাফল আগামী বছর নবনির্বাচিত লেবার পার্টির সরকারের নিকট তুলে ধরবেন। তিনি বলেন, ""লেবার পার্টির সরকার পরিবর্তনের আভাস দিয়েছে। আমরা আশা করি কোম্পানিগুলো আমাদের পাইলট প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত হয়ে পরিবর্তনটি গ্রহণ করবে।"