সপ্তাহে চার কর্মদিবসের সিদ্ধান্তই বহাল রাখছে যুক্তরাজ্যের বহু কোম্পানি
যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকটি কোম্পানি কর্মীদের জন্য সপ্তাহে চার কর্মদিবসের নীতি গ্রহণ করেছিল। এক্ষেত্রে ভালো ফলাফল আসায় বহু কোম্পানি এই নীতিতে অনড় রয়েছে। এমনকি বহু কোম্পানি সপ্তাহে চারদিনের কর্মদিবসকে স্থায়ীভাবে গ্রহণ করেছে।
এক্ষেত্রে ২০২২ সালের জুন থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ৬১ টি প্রতিষ্ঠানে বেতন একই রেখে কর্মীদের কর্মঘণ্টা সাধারণের তুলনায় ৮০ ভাগে নামিয়ে আনা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে শর্ত থাকে যে, তাদের কাজে পূর্বের মতোই ফলাফল দেখাতে হবে।
গত বুধবার এই সংক্রান্ত প্রকাশিত এক রিপোর্টে দেখা যায়, গতবছরের শেষ নাগাদ ঐ প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্তত ৮৯ ভাগই চার কর্মদিবসের নীতি মেনে চলছে। আর ৫১ ভাগ প্রতিষ্ঠান নীতিটিকে স্থায়ীভাবে গ্রহণ করেছে। এক্ষেত্রে দুটি কোম্পানি তথ্য না দেওয়ায় তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি।
গবেষণাটি প্রকাশ করেছে অটোনমি নামের একটি থিংকট্যাংক প্রতিষ্ঠান। একইসাথে এর সাথে যুক্ত রয়েছে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও বোস্টন কলেজের গবেষকেরা।
রিপোর্টে প্রতিষ্ঠানের নীতিনির্ধারক ও কর্মীরা কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনার বিষয়টিকে বেশ সুবিধাজনক বলে অভিহিত করেছেন। এছাড়াও ট্রায়াল শেষে কর্মীরা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উৎকর্ষতা, কর্মজীবনের সাথে ভারসাম্য এবং কাজে কম ক্লান্তি উপভোগের কথা জানিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে বোস্টন কলেজের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক জুলিয়েট শোর বলেন, "মূল বিষয় হলো, ঐ ছয় মাসে পাওয়া ইতিবাচক ফলাফলগুলি নতুনত্ব বা স্বল্পমেয়াদি প্রভাবের কারণে নয়। বরং এই প্রভাব বাস্তব ও দীর্ঘস্থায়ী।"
এরমধ্যে ২৮ টি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও সিইওবৃন্দ সপ্তাহে চার কর্মদিবসের ইতিবাচক প্রভাবের দিকটি স্বীকার করেছেন। তারা জানান, নীতিটি ৮২ ভাগ কর্মীদের উপর উপকারী প্রভাব রাখছে।
গবেষণায় বলা হয়, সপ্তাহে চার কর্মদিবসের সুফলটি শুধু সাময়িক নয়। বরং যুক্তরাজ্যের আশেপাশের কোম্পানিগুলিও সফলভাবে এটি মেনে চলছে।
ট্রায়ালে অংশ নেওয়া ৬১ টি কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই মার্কেটিং, বিজ্ঞাপন, প্রফেশনাল সার্ভিস কিংবা অলাভজনক খাতের প্রতিষ্ঠান। বাকি কোম্পানিগুলো আবার অবকাঠামো, ম্যানুফ্যাকচারিং, স্বাস্থ্যসেবা, শিল্প ও বিনোদন জগতের।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সপ্তাহের কর্মদিবস কমিয়ে আনার দাবি বহুগুণে বেড়েছে। করোনা মহামারি চলাকালীন লক্ষ লক্ষ কর্মচারী অনলাইনে কাজ শুরুর পর এই দাবি যেন আরও জোরালো হচ্ছে।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান