থাইল্যান্ডে এমপক্সের নতুন ধরন ‘ক্লেইড ১-বি’ শনাক্ত
আফ্রিকা থেকে ব্যাংককে আসা এক ব্যক্তির দেহে এমপক্সের নতুন প্রাণঘাতী ধরন 'ক্লেইড ১-বি'-এর সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে থাইল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসি'র।
এশিয়ায় এমপক্স ভাইরাসের এই নতুন ধরনের সংক্রমণ ধরা পড়ার এটিই প্রথম ঘটনা, আর আফ্রিকা মহাদেশের বাইরে এ ধরন শনাক্ত হওয়ার দ্বিতীয় ঘটনা এটি।
থাইল্যান্ডের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ জানিয়েছে, আক্রান্ত ব্যক্তি ৬৬ বছর বয়সী একজন ইউরোপীয় নাগরিক। তিনি গত ১৪ আগস্ট আফ্রিকার একটি অজ্ঞাত দেশ থেকে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে আসেন।
পরের দিন তার দেহে এমপক্সের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া গেছে যে তিনি এমপক্সের নতুন ধরন 'ক্লেইড ১-বি'তে আক্রান্ত হয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন দেশে এই ধরনটি ছড়াচ্ছে।
থাইল্যান্ডে অবতরণের পর ৪৩ জন ব্যক্তি ওই আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন। তাদের সবাইকে ২১ দিনের জন্য পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
মাঙ্কিপক্সের এই নতুন স্ট্রেনটি প্রথমে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে শনাক্ত হয়েছিল। এরপর এটি সীমান্তবর্তী এলাকা এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে, যেমন—বুরুন্ডি, কেনিয়া, রুয়ান্ডা এবং উগান্ডা। এই দেশগুলোতে আগে কখনো এমপক্সের সংক্রমণ দেখা যায়নি।
এক সপ্তাহ আগে আফ্রিকার বাইরে সুইডেনে প্রথমবারের মতো ক্লেইড ১-বি শনাক্ত হয়েছিল। সুইডেনের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংক্রমিত ব্যক্তি সম্প্রতি আফ্রিকার একটি দেশ থেকে সুইডেনে ফিরেছিলেন।
এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে থাইল্যান্ডে এমপক্সের ক্লেইড ১-বি স্ট্রেইন সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
নতুন এই স্ট্রেনের দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এবং আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে এর উচ্চ মৃত্যুহার বিজ্ঞানীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এর ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) একে একটি আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করেছে।
পূর্বে এই ভাইরাসটি মাঙ্কিপক্স নামেই পরিচিত ছিল। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এমপক্স ছড়ায়। এটি সঙ্গম, ত্বকের সংস্পর্শ, কথা বলা বা শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। এতে ফ্লুর মতো উপসর্গের পাশাপাশি পুঁজ ও ক্ষত সৃষ্টি করে। তবে বাতাসের মাধ্যমে এটি ছড়ায়—এমন কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
সাধারণত সংক্রমণের ৬ থেকে ১৩ দিন পর জ্বর, মাথাব্যথা, ফুসকুড়ি বা ঘা এবং মাংসপেশিতে ব্যথার মাধ্যমে উপসর্গ দেখা দেয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রভাব সামান্য দেখা গেলেও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া ১০০ জনের মধ্যে গড়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন