পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন জন হপফিল্ড ও জিওফ্রে হিন্টন
এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জন জে. হপফিল্ড এবং জিওফ্রে ই. হিন্টন। কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে মেশিন লার্নিংয়ের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় তাদের এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে নোবেল কমিটি এ পুরস্কার ঘোষণা করে। নোবেল কমিটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব লাইভে এই ঘোষণা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
জন জে. হপফিল্ড একজন মার্কিন পদার্থবিদ এবং নিউরোসায়েন্টিস্ট। তিনি ১৯৮২ সালে হপফিল্ড নেটওয়ার্ক নামে পরিচিত কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের ধারণা প্রবর্তন করেন, যা তথ্য সংরক্ষণ এবং পুনর্গঠনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
জিওফ্রে ই. হিন্টন একজন ব্রিটিশ-কানাডিয়ান কম্পিউটার বিজ্ঞানী এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গবেষক। তিনি নিউরাল নেটওয়ার্ক এবং ডিপ লার্নিংয়ের ক্ষেত্রে তার যুগান্তকারী কাজের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। হিন্টন ১৯৮৬ সালে ব্যাকপ্রোপাগেশন অ্যালগরিদম উন্নয়ন করেন, যা নিউরাল নেটওয়ার্কের শিক্ষণ পদ্ধতি পরিবর্তন করে দিয়েছে।
পুরস্কারের অর্থমূল্য হিসেবে বিজয়ীরা পাবেন ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার, যা তারা তাদের ভবিষ্যতের গবেষণায় কাজে লাগানোর সুযোগ পাবেন।
২০২৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছিলেন তিনজন। এরা হলেন ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী রজার পেনরোজ, জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী রেইনহার্ড গেঞ্জেল ও আমেরিকান জ্যোতির্বিদ আন্দ্রে গেজ।
নোবেল পদার্থবিদ্যা পুরস্কার ১৯০১ সালে আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছানুসারে প্রবর্তিত হয়। আলফ্রেড নোবেল ছিলেন সুইডিশ বিজ্ঞানী, আবিষ্কারক, ও উদ্ভাবক। মৃত্যুর আগে তিনি তার বিশাল সম্পত্তি থেকে একটি তহবিল গঠন করার নির্দেশনা দেন, যার মাধ্যমে প্রতি বছর পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য এবং শান্তিতে অসামান্য অবদানের জন্য পুরস্কার প্রদান করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় নোবেল পুরস্কার প্রদান শুরু হয়।
প্রথম নোবেল পদার্থবিদ্যা পুরস্কার বিজয়ী ছিলেন জার্মান বিজ্ঞানী উইলহেলম রন্টজেন, যিনি এক্স-রে আবিষ্কারের জন্য এই সম্মাননা পান। এই পুরস্কারটি পৃথিবীর সর্বোচ্চ বিজ্ঞানসম্মত স্বীকৃতিগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা পদার্থবিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা ও আবিষ্কারের স্বীকৃতি হিসেবে প্রদান করা হয়। ১৯০১ সাল থেকে ২০২৩ পর্যন্ত থেকে ১১৭ বার পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে মোট ২২৫ জন বিজ্ঞানী এই সম্মানজনক পুরস্কার লাভ করেছেন। তবে, এই বিশাল অর্জনের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো জন বারডিনের অনন্য রেকর্ড। তিনি একমাত্র বিজ্ঞানী, যিনি পদার্থবিদ্যায় দুইবার নোবেল পুরস্কার জিতেছেন—১৯৫৬ সালে এবং ১৯৭২ সালে।