মাঝ-আকাশে পাইলটের মৃত্যু, নিউ ইয়র্কে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের প্লেনের জরুরি অবতরণ
প্লেন চালানোর সময় হঠাৎ করেই মাঝ আকাশে এক পাইলটের মৃত্যু হয়েছে। তার আকস্মিক মৃত্যুর পর টার্কিশ এয়ারলাইনসের প্লেনটি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জরুরি অবতরণ করে।
টার্কিশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ইলচেহিন পেহলিভান (৫৯) সিয়াটল থেকে ইস্তাম্বুলে যাওয়ার পথে মাঝ আকাশে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরবর্তীতে মারা যান।
এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র ইয়াহিয়া উস্তুন জানান, পাইলট মাঝ আকাশে অজ্ঞান হয়ে পড়লে দ্বিতীয় পাইলট এবং কো-পাইলট নিয়ন্ত্রণ নেন। তিনি বলেন, "যখন আমাদের কেপ্টেনের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা কার্যকর হয়নি, তখন ককপিটের কর্মীরা জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তিনি অবতরণের আগেই মারা যান।"
এয়ারবাস এ৩৫০ প্লেনটি নিউ ইয়র্কে জরুরি অবতরণ করে এবং সেখান থেকে যাত্রীদের তুরস্কে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়।
ফ্লাইট টিকে২০৪ মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭ টার (প্যাসিফিক সময়) কিছু সময় পরে সিয়াটল থেকে যাত্রা শুরু করে। প্লেনটি কানাডার নুনাভুত অঞ্চলের ওপর থাকাকালীন পাইলট অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তার সহকর্মীরা প্লেনের নিয়ন্ত্রণ নেন এবং জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরের দিকে এগিয়ে যান। প্লেনটি সিয়াটল ত্যাগ করার আট ঘণ্টা পর নিউ ইয়র্কে অবতরণ করে।
পেহলিভান ২০০৭ সাল থেকে টার্কিশ এয়ারলাইনসে কাজ করছিলেন। মার্চ মাসের শুরুতে একটি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তার কাজে প্রভাবিত হওয়ার মতো কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি বলে টার্কিশ এয়ারলাইনস জানিয়েছে।
নিহত পাইলট ইলচেহিন পেহলিভানের পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীদের প্রতি শোক জানিয়েছে তুরস্কের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রকদের অ্যাসোসিয়েশন টিএটিসিএ।
পাইলটের মৃত্যুর কারণ এখনও প্রকাশ করা হয়নি। পাইলটদের প্রতি ১২ মাস পর মেডিকেল পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয় এবং ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের প্রতি ৬ মাস পর তাদের মেডিকেল সার্টিফিকেট নবায়ন করতে হয়।
এর আগে, ২০১৫ সালে আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একজন ৫৭ বছর বয়সী পাইলট একটি রাতের ফ্লাইটে ফিনিক্স থেকে বোস্টনে যাওয়ার পথে অজ্ঞান হয়ে মারা যান। প্রথম কর্মকর্তা প্লেনের নিয়ন্ত্রণ নেন এবং সিরাকিউজে জরুরি অবতরণ করেন।
বর্তমানে, বড় বাণিজ্যিক প্লেনের ককপিটে সবসময় দুজন পাইলট থাকতে হয়। তবে, ইউরোপের বিমান নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছে, প্রযুক্তি উন্নত করা হচ্ছে যাতে একজন পাইলট ফ্লাইটের ক্রুজ পর্যায়ের বড় যাত্রী প্লেনের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেন। এই পদক্ষেপটি ককপিটের অন্য সদস্যদের বিশ্রাম নিতে সাহায্য করবে।
তবে সংস্থা সতর্ক করে জানিয়েছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ক্রু অসুস্থ হয়ে পড়লে তার প্রতিক্রিয়া জানাতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
ইউরোপীয় ককপিট অ্যাসোসিয়েশন এবং অন্যান্য পাইলট গ্রুপগুলো এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলেছে। তাদের যুক্তি হলো, ক্রু সংখ্যা কমানো যেকোনো সময় ফ্লাইটের নিরাপত্তার সাথে জুয়া খেলার মতো।