বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে আদানি থেকে দূরত্ব রাখছে বিজেপি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঘুষকাণ্ডে অভিযুক্ত ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানি, বিজেপির কোনো সমর্থন পাবেন না।
মার্কিন কৌঁসুলিরা (প্রসিকিউটর) আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি, তার ভাইপো সাগর আদানি এবং আরও ছয়জনের বিরুদ্ধে ২৬৫ মিলিয়ন ডলারের ঘুষকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর– ভারতের সুপ্রিম কোর্টেও আদানির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিজেপি এবং মোদিকে আদানিকে রক্ষার চেষ্টা করছেন এমন অভিযোগ এনেছে বিরোধী দল কংগ্রেস। কংগ্রেস বলছে, বিজেপি আদানির বিরুদ্ধে চলা স্বাধীন তদন্তে বাধা দিচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে কংগ্রেস কর্মীরা সংসদীয় তদন্তের দাবিতে রাস্তায় বিক্ষোভ করেছে।
অপরদিকে, আদানি গ্রুপ এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে আখ্যা দিয়ে জানিয়েছে, তারা আইনি পথে প্রতিকার চাইবে।
বিজেপি মুখপাত্র গোপাল কৃষ্ণ আগরওয়াল বলেন, 'আমাদের কিছুই রক্ষা করার নেই এবং আমরা এতে জড়িত নই। তাদের (আদানিকে) নিজে এর সমাধান করতে হবে। আমরা শিল্পপতিদের দেশের উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে দেখি। তবে যদি তারা ভুল কিছু করেন, আইন তার নিজস্ব পথে চলবে।'
এদিকে, অন্ধপ্রদেশ সরকার যেখানে বিজেপি জোট ক্ষমতায় রয়েছে, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তি বাতিলের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার ঘোষণা দিয়েছে।
মার্কিন কৌঁসুলিদের অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ওড়িশা, তামিলনাড়ু, ছত্তিশগড়, অন্ধপ্রদেশ এবং জম্মু-কাশ্মীরের মতো অঞ্চলে বিদ্যুৎ চুক্তি পেতে আদানি গ্রুপ ঘুষ দিয়েছে।
তবে ওই সময় এই রাজ্যগুলোতে মোদির জোটের বিরোধী দলগুলো ক্ষমতায় ছিল। তারা জানিয়েছে, আদানি গ্রুপের সঙ্গে সরাসরি তাদের কোনো লেনদেন হয়নি এবং সবকিছু কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।
বিজেপি মুখপাত্র আগরওয়াল আরও বলেন, 'আদানি গ্রুপের প্রকল্প বিভিন্ন রাজ্যে চলমান রয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।'
অভিযোগ অনুযায়ী, বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ পেতে গৌতম আদানি ও সাগর আদানিসহ মামলার সাত অভিযুক্ত ভারতীয় কর্মকর্তাদের ২৬৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দিতে সম্মত হয়েছিলেন, যে প্রকল্প থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলার মুনাফা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও ঘুষের বিনিময়ে তাদের ভারতের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির কাজও দিতে চাওয়া হয়েছিল।
২০২৩ সালেই এই অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র তদন্ত শুরু করেছে, তা জানার পরেও আদানির বিরুদ্ধে মিথ্যা বিবৃতি দেওয়ার অভিযোগও এনেছেন মার্কিন কৌঁসুলিরা।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন