তিব্বতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত অন্তত ৯৫, কাঁপল বাংলাদেশ-ভারত-নেপালও
আজ মঙ্গলবার (৬ জানুয়ারি) সকালে চীনের পার্বত্য তিব্বত অঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৯৫ জন নিহত এবং ১৩০ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। খবর বিবিসি-র।
যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে-র (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে তিব্বতের পবিত্র শহর শিগাতসে-তে ৭.১ মাত্রার এই ভূমিকম্পটি ১০ কিলোমিটার গভীরতায় আঘাত হানে।
শক্তিশালী এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে নেপাল, ভুটান, ভারতের কিছু অংশ এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশেও।
বাংলাদেশ সময় আজ সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৬১৮ কিলোমিটার দূরে।
শিগাগতে অঞ্চলটি অন্যতম প্রধান একটি ভূতাত্ত্বিক ফাটল রেখায় (ফল্টলাইন) অবস্থিত, তাই ভূমিকম্প এখানে সাধারণ ঘটনা।
শিগাতসে তিব্বতের অন্যতম পবিত্র শহর হিসেবে পরিচিত। শহরটি তিব্বতী বৌদ্ধধর্মে দালাই লামার পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে বিবেচিত পানচেন লামার ঐতিহ্যবাহী আসন।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলেছে, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৮। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ছবিতে বহু ধসে পড়া ভবন দেখা গেছে। এছাড়া কয়েকটি শক্তিশালী আফটারশকের খবরও পাওয়া গেছে।
ভূমিকম্পের পর উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে চীনের বিমানবাহিনী। দুর্গত এলাকায় ড্রোন পাঠানো হয়েছে। অঞ্চলটি এভারেস্ট পর্বতমালার পাদদেশে অবস্থিত। এখানকার তাপমাত্রা এখন হিমাঙ্কের নিচে।
এদিকে ভূমিকম্পের পর অঞ্চলটিতে বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য সর্বাত্মক উদ্ধার অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে নেপালের নামচে অঞ্চলের একজন স্থানীয় কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন, সেদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হলেও কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
তিব্বতের ভূমিকম্প ব্যুরো বিবিসিকে জানিয়েছে, তারা এখনও হতাহতের চূড়ান্ত সংখ্যা যাচাই করছে।
উল্লেখ্য, এই অঞ্চলটি ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত, যা ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত।
২০১৫ সালে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর কাছে ৭.৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে প্রায় ৯ হাজার মানুষ নিহত এবং ২০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল।
এদিকে, চলতি জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই এ নিয়ে দুইবার ভূমিকম্প অনুভূত হলো বাংলাদেশে। আজ মঙ্গলবার অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পটি ছিল একটু তীব্র। এর আগে ৩ জানুয়ারি হওয়া ভূমিকম্পটি ছিল মাঝারি মাত্রার। তবে দুটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলই বাংলাদেশের বাইরে। ৩ জানুয়ারির ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের হোমালিন।