সোমালিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে বিমান হামলার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প
সোমালিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশের পর আইএসের শীর্ষ এক হামলার পরিকল্পনাকারীসহ যুক্তরাষ্ট্রের নিশানায় থাকা অন্য আইএস সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নেয় মার্কিন যুদ্ধবিমান। খবর বিবিসির
অনলাইন সামাজিক মাধ্যমে এসব কথা জানান তিনি। সেখানে ট্রাম্প বলেছেন, 'এরা হচ্ছে খুনি, যাদেরকে আমরা গুহায় লুকিয়ে থাকা অবস্থায় পাই। এরা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের হুমকিতে ফেলেছিল। তারা যে গুহায় বাস করতো— হামলায় সেটি ধ্বংস হয়ে গেছে, এবং বেসামরিক নাগরিকদের হতাহত না করেই, অনেক সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়েছে।'
সোমালিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয়কে এই হামলার কথা আগেই জানানো হয়েছিল। সামাজিক মাধ্যম 'এক্স' - এ (সাবেক টুইটার) তাঁর কার্যালয়ের এক পোস্টে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে বলা হয়, দেশটির উত্তরাঞ্চলে আইএস নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্র হামলা করবে বলে তারা জানতে পেরেছিলেন।
তবে হামলা পরবর্তী হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারেনি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এছাড়া, ট্রাম্পও বিমান হামলায় নিহত কোনো ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেননি।
তিনি শুধু তার পোস্টে লিখেছেন, "আইএসআইএস ও অন্যান্য যারা আমেরিকানদের আক্রমণ করে তাদের প্রতি বার্তা হলো— আমরা তোমাদের খুঁজে বের করব, এবং তোমাদের হত্যা করব।"
সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মাহমুদের কার্যালয়ের সামাজিক মাধ্যম 'এক্স' হ্যান্ডেলে তাঁর একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, 'আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অনড় সমর্থনকে তিনি (শেখ মাহমুদ) স্বীকার করেন এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে এই প্রতিশ্রুতির ধারাবাহিকতা বজায় থাকাকে স্বাগত জানান।'
এতে আরও বলা হয়, 'সাম্প্রতিক এই অভিযান চরমপন্থীদের হুমকি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র ও সোমালিয়ার মধ্যে বিদ্যমান শক্তিশালী নিরাপত্তা অংশীদারত্বকে শক্তিশালী করে।'
পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এক বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, হামলা পরবর্তী প্রাথমিক পর্যালোচনার ভিত্তিতে আমরা মনে করছি, একাধিক আইএস সদস্য এতে নিহত হয়েছে, তবে বেসামরিক কারো ক্ষতি হয়নি। এতে আইএস এর সন্ত্রাসী হামলা চালানো বা তার পরিকল্পনার সক্ষমতা আরও হ্রাস পেল। যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো সময় সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের হবে নিকেশ করবে— সুস্পষ্টভাবে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে।
সোমালিয়ার উত্তরপূর্বের গোলিস পর্বতাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র এই বিমান হামলা করেছে বলেও জানান পিট হেগসেথ।
উত্তরপূর্ব সোমালিয়ার ওই প্রদেশটির নাম পুন্টল্যান্ড। স্থানীয় সরকার আইএস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে হামলা করায় 'আন্তর্জাতিক মিত্রদের' ধন্যবাদ জানিয়েছে।
২০১০ সালে মধ্যপ্রাচ্যে মাথাচাড়া দেয় আইএস। অতি দ্রুতই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ত্রাস সৃষ্টি করে তারা। বিশেষত সিরিয়া ও ইরাকে তারা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। পরে তাদের এসব অঞ্চল থেকে অনেকাংশে নিশ্চিহ্ন কর সম্ভবও হয়, কিন্তু এখনও তারা আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে বেশ সক্রিয়।
২০১৫ সালে আইএসের সোমালি শাখা প্রতিষ্ঠা করা হয়, আল কায়েদা সমর্থিত গোষ্ঠী আল-শাবাবের পক্ষত্যাগকারী কিছু ব্যক্তি এটি গঠন করে। আল-শাবাব সোমালিয়ার বৃহত্তম জিহাদি গোষ্ঠী। তবে আইএস এরমধ্যেই ছোট পরিসরে তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনা করে। স্থানীয়দের থেকে চাঁদা আদায়সহ, বিচ্ছিন্নভাবে ছোট অথচ প্রাণঘাতী হামলা চালানোর জন্য তাদের কুখ্যাতি রয়েছে।