খুলনায় নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
খুলনার কয়রায় এক নারীকে বিবস্ত্র করে গাছে বেঁধে নির্যাতনের মামলায় ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার দিবাগত রাতে কয়রা উপজেলার মহেশ্বরপুর ইউনিয়নের গিলাবাড়ি গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
তারা হলেন, আরাফাত হোসেন ও সাইদুর রহমান। তারা দুইজনই ওই নারীকে মারধরের সাথে সরাসরি জড়িত।
কয়রা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইব্রাহিম আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মামলার অভিযান চালিয়ে দুইজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই নারীর বাবা মামলা করেছেন। তাতে আসামি করা হয়েছে ওই নারীর চাচা-চাচাতো ভাইসহ ১৪ জনকে। এজাহারে বলা হয়েছে, জমির বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে।
বর্তমানে ওই নারী খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নির্যাতনের ঘটনাটি গত ১১ জুলাই সকালে উপজেলার মহেশ্বরপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে ঘটেছে।
তিনি বলেন, 'আমার বাবার জমি নিয়ে চাচাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। চাচারা বিভিন্ন সময় বাবার জমি দখল করতে আসে। তিন বছর আগে থেকে খুলনার আদালতে এই জমি নিয়ে একটি মামলা চলছে।
'এরপরও তারা আমাদের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছে। বারবার বাবার জমিতে ঘর বানাতে চাচ্ছে। তাদের সঙ্গে না পেরে, ঈদের বিকেলে থানায় গিয়ে একটি অভিযোগ করি আমরা।'
ওই নারী আরও বলেন, 'ঈদের পরদিন ১১ জুলাই সকালে আমার চাচা ও চাচাতো ভাই সাইফুল, সোয়েব, সালাহ উদ্দীন, ফিরোজসহ কয়েকজন মিলে আমাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় রাস্তায়। তারা আমাকে একাধারে মারধর করতে থাকে। আমার কাপড় খুলে রাস্তার পাশের মেহগনি গাছে বেঁধে আবারও মারধর করে। তখন আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।'
ওই নারীর বোনের স্বামী বলেন, 'বিবস্ত্র অবস্থায় তাকে তারা গাছে বেঁধে রেখে আমার শ্বশুরের জমিতে ঘর তৈরি করছিল। তখন ঘটনাটি জানতে পেরে আমি ৯৯৯-এ ফোন দিই। পরে কয়রা থানার এসআই মাসুদের নেতৃত্বে দুই গাড়ি পুলিশ এসে গাছ থেকে দড়ি খুলে তাকে মুক্ত করে।'
অভিযোগ করা নারীর স্বামী বলেন, 'ঘটনার সময়ে আমি সাতক্ষীরার প্রতাপনগরে ছিলাম। মোবাইলে খবর পেয়ে ফিরে স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। এখন আমার চাচা শ্বশুররা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় চেয়ারম্যান ও পুলিশকে ম্যানেজ করে সব মীমাংসা করার চেষ্টা করছে।'
মহেশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী বলেন, 'বেশ কয়েকবার সালিশ করা হলেও সমাধান না হওয়ায় এখন আর কেউ যায় না। ঘটনার সময় আমি সেখানে ছিলাম না। সংবাদ পেয়ে আমি পুলিশকে জানিয়েছিলাম।'