শুরুর পথ হারিয়ে ৩০০ করা হলো না বাংলাদেশের
কিছু রান কম হওয়ার আক্ষেপ ছিল আগের ম্যাচে, যদিও ওই ম্যাচে প্রথম ২৫ ওভারে সেভাবে রান ওঠেনি। কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের শুরুটা হয় উড়ন্ত। ১৭.১ ওভারেই স্কোরকার্ডে যোগ হয় শতরান। এমন দাপুটে শুরুর পরও বড় সংগ্রহ গড়া হলো না বাংলাদেশের। প্রায় সবার ধীর ব্যাটিংয়ে এবার ৩০০ রানও ছোঁয়া হলো তামিম ইকবালের দলের।
রোববার হারারে স্পোর্টস ক্লাবে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ২৯০ রান তুলেছে। বাংলাদেশের কেনো ব্যাটসম্যানই ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করতে পারেননি। বেশিরভাগ ব্যাটসম্যানই রানের চেয়ে বেশি বল খরচা করেছেন। এরপরও ৩০০ ছুঁইছুঁই সংগ্রহ আসে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ইনিংস সেরা রানের কল্যাণে। অবশ্য অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানও চোখ রাঙানো স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করতে পারেননি।
শুরুটা দারুণ হয় বাংলাদেশের। ১১ ওভারে স্কোরকার্ডে ৭১ রান যোগ করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয়। এ সময় বিজয় ধীর গতিতে ব্যাট চালালেও তামিম ছিলেন মারকুটে মেজাজে। যদিও ১১ বলে চার ও ছক্কায় ৪৬ রান করা বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তার খেলঅ বাকি বলগুলো সেভাবে কাজে লাগাতে পারেননি। বাকি ৩৪ বল থেকে মাত্র ৪ রান তোলেন তিনি।
অফ সাইডে ছয়জন ফিল্ডারের মাঝ দিয়ে জায়গা খুঁজে নিয়ে চারের ফুলঝুরি সাজানো তামিম ৪৫ বলে ৫০ রান করে আউট হন। আগের ম্যাচেও পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলা অভিজ্ঞ এই ওপেনার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫৫তম হাফ সেঞ্চুরিটি সাজান ১০টি চার ও একটি ছক্কায়। দলীয় ৭১ রানে তামিমকে হারানো বাংলাদেশ দ্বিতীয় উইকেট হারায় একটু পরই।
ধীর শুরুর পর হাত খুলে খেলা শুরু করা বিজয় নিজের দোষে আউট হয়ে বিদায় নেন। টানাকা শিভাঙ্গার করা ১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে নাজমুল হোসেন শান্ত স্ট্রেইট ড্রাইভ খেলেন। স্টাম্প বরার বল থাকায় তাতে হাত ছুঁয়ে দেন শিভাঙ্গা। এ সময় পপিং ক্রিজের বাইরে থাকা বিজয় চেয়ে চেয়ে তা দেখছিলেন। স্টাম্পে বল লাগার পরে ব্যাট ভেতরে রাখার চেষ্টা করেন তিনি। ২৫ ববেল ৩টি চারে ২০ রান করে বিদায় নেন ডানহাতি এই ওপেনার।
দ্রুত দুই উইকেট হারানোর চাপ কাটিয়ে তোলে শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। তৃতীয় উইকেটে ৫০ রানের জুটি গড়ে তোলেন তারা। তবে তারা কেউই শুরুর ধারায় থেকে রান বাড়িয়ে নিতে পারেননি। দুজনই ধীর গতির ব্যাটিং করেন। ৩১ বলে একটি চারে ২৫ রান করা মুশফিকের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। এরপর শান্তও বেশি সময় টিকতে পারেননি। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান দলীয় ১৪৮ রানে সাজঘরে ফেরেন। এর আগে ৫৫ বলে ৫টি চারে ৩৮ রান করেন তিনি।
এরপর ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটিটি পায় বাংলাদেশ। পঞ্চম উইকেটে ৮২ বলে ৮১ রানের জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। আফিফ ৪১ বলে ৪টি চারে ৪১ রান করে ফিরলেও মাহমুদউল্লাহ লড়েন শেষ পর্যন্ত। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৬তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার দিনে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান ৮৪ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় হার না মানা ৮০ রান করেন। প্রায় দেড় বছর আর ১১ ইনিংস পর ওয়ানডেতে হাফ সেঞ্চুরি করলেন তিনি। মেহেদ হাসান মিরাজ ১২ বলে ২টি চারে ১৫ রান করেন।
এই সিরিজে ব্যাটে-বলে বাংলাদেশের জন্য যমদূত হয়ে ওঠা সিকান্দার রাজা তার স্পিন ভেল্কি দেখিয়েছেন। ডানহাতি এই অফ স্পিনার সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন। ২টি উইকেট পান ওয়েসলে মাধেভেরে। এ ছাড়া একটি করে উইকেট শিকার করেন ভিক্টর নিয়াউচি ও টানাকা শিভাঙ্গা।