নেত্রকোনায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা
গত বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলার গ্রেপ্তার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নেত্রকোনার বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
নেত্রকোনা জেলা সদর ও মদন উপজেলায় পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির দুটি পৃথক সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ৭৫৯ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নেত্রকোনা সদরের ঘটনায় ৫০০ জন এবং মদনের ঘটনায় ২৫৯ জনকে আসামি করা হয়।
নেত্রকোনা মডেল থানার এসআই খন্দকার আল মামুন ও মদন থানার এসআই দেবাশীষ দত্ত বাদি হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এ দুটি মামলা দায়ের করেন।
এসব মামলায় পুলিশের ওপর আক্রমণ ও সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়। মামলার প্রেক্ষিতে নেত্রকোনা সদর ও মদনের বেশিরভাগ বিএনপি নেতাকর্মী এখন আত্মগোপন করে আছেন। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৮জন।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের ভয়ে দলটির বেশিরভাগ নেতা-কর্মী এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমাবেশ করে বিএনপির সব ধরনের কর্মসূচি প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনকালে জেলা সদরের ছোটবাজারে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের বিপুল পরিমাণে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে। সংঘর্ষে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ফকরুজ্জামান জুয়েল ও নেত্রকোনা মডেল থানার এসআই খন্দকার আল মামুনসহ তিন পুলিশ সদস্য এবং বিএনপির অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হন।
এ ঘটনায় সেদিন রাতেই বিএনপির ৩৩ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৪৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ।
ওই মামলায় শনিবার ভোরে জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন খান রনি, আটপাড়ার দুওজ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শামীম ও আটপাড়া উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব টিটু ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়া এর আগেরদিন গ্রেপ্তার করা হয় আরও ১৩ জন নেতাকর্মীকে।
গ্রেপ্তার হওয়া রনি জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি আশরাফ উদ্দিন খানের ছেলে। তিনি গত পৌর নির্বাচনে নেত্রকোনা পৌরসভায় বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এদিকে এর আগে গত ৩১ আগস্ট (বুধবার) মদনের চানগাঁও ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামে স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ একই সময়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করতে গেলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে তিন পুলিশ সদস্য ছাড়াও দলদুটির অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হন।
এ ঘটনায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূরুল আলমসহ ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ২৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। ওই মামলায় কাইটাইল ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, বিএনপি নেতা রেহান আকন্দ ও কাউসার আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।