কয়লা বেচে সম্পদের পাহাড় গড়া বিশ্বের তৃতীয় ধনী সবুজ ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন!
আগে গণমাধ্যমের স্পটলাইট থেকে যতটা সম্ভব নিজেকে সরিয়েই রাখতেন ভারতের আদানি গ্রুপের কর্ণধার– গৌতম আদানি। কিন্তু, গত কয়েক মাসে তিনি সে জড়তা কাটিয়ে উঠছেন বলেই দেখা যাচ্ছে।
গত এপ্রিলের কোনও এক সন্ধ্যা, ভারতের মুম্বাইয়ে ন্যাশনাল সেন্টার ফর পারফর্মিং আর্টে ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন। এতে যোগ দেন আদানিও। ইন্ডিয়ান ইকোনমিক কনক্লেভ শীর্ষক ওই সম্মেলনে দেশটির আর্থিক খাতের অভিজাতরা অংশ নেন। সেখানে তিনি উপস্থিত গণ্যমান্যদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। তবে নিছক গণমাধ্যমের আলোচনার কেন্দ্রে আসতে নয়, আদানি এসব করছেন ব্যবসায়ীক লক্ষ্য অর্জনে।
গৌতম আদানির সম্পদের মূল উৎসই হলো কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানি; গত কয়েক মাসে বিশ্ববাজারে এর দাম বহুগুণে বাড়ায় সম্পদও ফুলেফেঁপে ওঠে তার। এসময়ে হয়ে ওঠেন বিশ্বের তৃতীয় সেরা ধনী। উঠে আসতে থাকেন আলোচনার প্রতিপাদ্যে।
আদানি এখন ব্যবসায় বৈচিত্র্য আনার লক্ষ্য নিয়েছেন। জ্বালানির অন্যান্য খাতেও বিস্তৃত করছেন উদ্যোগ। ভারত ও বাকি বিশ্বেও আদানি গ্রুপকে সম্প্রসারণ করতে চান তিনি। তাই নিজেকে বিশ্বমঞ্চে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে তোলার বিষয়ে মনোযোগী হয়েছেন।
গৌতম আদানি বিশ্বের সামনে নতুন আলোকেও উপস্থাপন করতে চাইছেন। এজন্যই গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনে যোগ দেওয়ার পেছনে তার মূল উদ্দেশ্য থাকছে–বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ। শুধু বিনিয়োগকারী নন, পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রকরাও যেন তার সবুজ বা পরিবেশবান্ধব জ্বালানি উৎপাদনের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনায় বিনিয়োগের পথ সুগম করেন সেদিকটাও মাথায় রাখছেন।
সেভাবে বিবেচনা করলে এপ্রিলে ভারতের ওই আয়োজনে যোগ দেওয়া ছিল তার- 'ড্রেস রিহার্সেল'।
কয়লা থেকে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থের মালিক বনে যাওয়ার পর– নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও শক্তি উৎপাদনে এগিয়ে আসা ধনকুবেরদের মধ্যে প্রথম নন গৌতম। কিন্তু, তিনি তাদের মধ্যে এপর্যন্ত সবচেয়ে ধনবান ব্যক্তি, যার সাথে আবার রয়েছে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্বব্যাপী জ্বালানির দামে ব্যাপক উল্লম্ফন ঘটে, এসময়ে আদানি গ্রুপের পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত কোম্পানিগুলির শেয়ারমূল্যেও ঘটে উত্থান। গৌতম এখন ১৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলার সম্পদের অধিকারী; এবং ইলন মাস্ক ও জেফ বেজোসের পর দুনিয়ার তৃতীয় শীর্ষ ধনী।
ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্যে বিকশিত অঞ্চল গুজরাট রাজ্য– নরেন্দ্র মোদি ও গৌতম আদানি দুজনেরই নিজ প্রদেশ। কিন্তু, গুজরাটে তার প্রচলিত ব্যবসা আন্তর্জাতিক স্তরে দায়িত্বশীল উদ্যোক্তা হিসেবে সুনাম প্রতিষ্ঠার পথে বাধা হয়েই ছিল এতদিন আদানির জন্য। সেখান থেকে সরে এসে পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তিতে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঝুঁকতে চাইছেন। কারণ, তিনি হাওয়া বদল ঠিকই ধরতে পারছেন। বুঝতে পারছেন, বিশ্ব এখন বাণিজ্যিক লাভের চাইতে পরিবেশ-সচেতন উদ্যোগ নিয়ে বেশি আগ্রহী। বিনিয়োগের কড়কড়ে অর্থরাশিও ছুটছে সেদিক পানে। ফলে পরিবেশ দূষণ করে হলেও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মোদি সরকারের যে মূলমন্ত্র– সেখান থেকে সরে আসার চেষ্টা করছেন আদানি।
তাই বলে মোদির সাথে সম্পর্ক আদানি খারাপ করতেও চান না। এজন্যই ইন্ডিয়ান ইকোনমিক কনক্লেভ- এ কথায় ছিলেন সতর্ক, এবং মোদির শিল্পনীতি ও পরিবেশ-সচেতন দুই পক্ষই তুষ্ট থাকে এমন করে বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, 'উচ্চ প্রবৃদ্ধির দ্বারপ্রান্তে ভারতীয় অর্থনীতি, আগামী কয়েক দশক যার ধারাবাহিকতা থাকবে; আন্তর্জাতিক ব্যবসাগুলি এর সুযোগ নিতে চায়। সেজন্য আত্মনির্ভর হওয়া ছাড়া আমাদের স্বার্থ সুরক্ষার কোনো বিকল্প নেই'।
'আত্মনির্ভর' শব্দটি উচ্চারণের মাধ্যমে তিনি মোদির 'মেক ইন ইন্ডিয়া' বা স্থানীয়ভাবে উৎপাদন নীতির প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন। সভা-সমাবেশ ও র্যালিতে মোদি নিজেও ভারতীয় অর্থনীতির বিকাশ নিয়ে আলাপের সময় এই 'আত্মনির্ভর' শব্দটি উচ্চারণ করে জনতার জাতীয়বাদী জোশকে উস্কে দেন।
কিন্তু, এরপর আদানি যা বলেন তা বেশ চমকপ্রদ। তিনি বলেন, "দূষণমুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চাহিদাও ভারতের জন্য হবে যুগান্তকারী। সৌর, বায়ু বিদ্যুতের সাথে সাথে সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদন ভারতের সামনে অপার সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে'।
ভারতের অন্য যেকোনো বিলিয়নেয়ারের চেয়ে মোদির বেশি ঘনিষ্ঠও আদানি। প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলারের ভারতীয় অর্থনীতিকে আরও বিকশিত করার চেষ্টা রয়েছে মোদি সরকারের, আর সরকারি এই লক্ষ্যকে সমর্থন দেওয়াকে গত এক দশকে নিজের ব্যবসায়ীক কৌশলের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখেন আদানি। অর্থাৎ, বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকার যখন যেদিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, তার সাথে সঙ্গতি রেখে নিজেদের ব্যবসায়ীক লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে আদানির শিল্পগোষ্ঠী।
এরমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল, কয়লা উত্তোলন ও ব্যবহার দ্বিগুণ করার মতো ঘটনা। ওই সময়, মোদি প্রতিটি ভারতীয়কে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সংযোগ দেবেন– এ ঘোষণা দেন। তখন আদানি গ্রুপও বাড়ায় কয়লায় বিনিয়োগ।
ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতেও সম্প্রসারিত হয়েছে মোদি-আদানি মেলবন্ধন। যেমন ২০২১ সালে প্রতিবেশী শ্রীলংকায় একটি বন্দর নির্মাণের কাজ শুরু করে আদানি গ্রুপ। ভারতীয় কর্মকর্তারা সে সময় জানান, দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে চীনের আধিপত্য হ্রাস করতে এই উদ্যোগের পেছনে দৃঢ় সমর্থন দিচ্ছে মোদি সরকার।
এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ হোক বা ডেটা সেন্টার উন্নয়ন– যেখানে যেখানে সরকারের অগ্রাধিকার–সে সব জায়গায় আদানি গ্রুপ অর্থ, অবকাঠামো ও দক্ষতা বিনিয়োগ করবে এমনটাই ছিল ধারা।
যদিও আদানির দাবি, তিনি সরকারের থেকে বিশেষ কোনো সুবিধা পান না বা আশাও করেন না। কিন্তু, বাস্তবতা হচ্ছে সরকারের সাথে এই খাতির তার স্বার্থের অনুকূলেই গেছে।
সেই সুবাদে চলতি বছর তার সাতটি কোম্পানির বাজারমূল্য আক্ষরিক অর্থেই চোখ কপালে ওঠার মতোন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৫০০ কোটি ডলার, সার্বিকভাবে যা ভারতীয় পুঁজিবাজারের ৭ শতাংশ।
ব্লুমবার্গের তালিকায় থাকা বিশ্বের সেরা ১০ বিনিয়নিয়ারের মধ্যে একমাত্র ধনকুবের আদানি, যার সম্পদ কমনি ২০২২ সালে। এই বাড়বাড়ন্ত হয়েছে কয়লার-ই শক্তিতে।
কয়লা থেকে অর্জিত এই সম্পদ দিয়ে এবার নিজের পরবর্তী উচ্চাভিলাষ পূরণ করতে চান গৌতম আদানি। সেই পরিকল্পনার কেন্দ্রে রয়েছে গ্রিন এনার্জি খাতে ৭ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি।
ব্যবসা সম্প্রসারণ হচ্ছে অন্যখাতেও। যেমন চলতি বছর অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন ও লৌহ আকরিক উত্তোলনের কিছু প্রকল্পে ৭২০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে আদানি শিল্পগোষ্ঠী।
১ হাজার ৫০ কোটি ডলারে কিনেছে হোলসিম সিমেন্টের ভারতীয় ব্যবসা। এছাড়া, গণমাধ্যম, ডিজিটাল পরিষেবা, বিমানবন্দর, ডেটা সেন্টার ও টেলিকম খাতেও ব্যবসা প্রসার করছে আদানি গ্রুপ।
ব্যবসা সম্প্রসারণের তহবিল যোগান দিতে দিতে দেনাও জমেছে অনেক; কিন্তু যতদিন মোদি ক্ষমতায় আছেন, আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলো ততদিন এই দেনার চাপ এড়ানোর মতো বিপুল অর্থ উপার্জন করতেই থাকবে। তাই গৌতমের অবস্থানকে দৃঢ় বলাই যায়– অন্তত তার নিজ দেশ ভারতে। এমনটাই মনে করেন টিম বাকলে। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি-ভিত্তিক একটি জলবায়ু চিন্তক সংস্থা– ক্লাইমেট এনার্জি ফাইন্যান্স এর পরিচালক তিনি।
বাকলে দীর্ঘদিন ধরে আদানির বিষয়েও খোঁজখবর রাখেন। তিনি বলেন, 'তার রাজনৈতিক ক্ষমতা এবং ভারতে হাওয়া কোনদিকে বইছে সেটি বোঝার গুণটি অদ্বিতীয়। তার সংগঠন ভারতের অন্যান্য প্রতিযোগিদের চেয়ে খুবই দক্ষতার সাথে কাজ করে'।
তবে ভারতের বাইরে আদানির ক্ষমতার সে নিশ্চয়তা নেই। সেই অভাব দূর করতেই- নবায়নযোগ্য উৎসে বাজি ধরছেন। ৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে আদানি আশা করছেন, তার শিল্পগোষ্ঠী চলতি দশকের শেষ নাগাদ বিশ্বের বৃহত্তম সবুজ জ্বালানি উৎপাদক হয়ে উঠবে।
যদিও আদানি গ্রুপের জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবসার তুলনায়– ফিকে পড়ে যায় সবুজ জ্বালানিতে বিনিয়োগের আয়োজন। এই বৈসাদৃশ্য বিশ্বস্তরে আদানির আন্তরিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
ক্ষমতাধর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ প্রয়োগ করে এমন একটি অধিকার গোষ্ঠী– সামঅভআস বলছে, বিশ্বের অন্তত ৩ শতাংশ কয়লা থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ হয় আদানি গ্রুপের খনি কার্যক্রমের মাধ্যমে। ব্লুমবার্গের কাছে এই হিসাবের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি আদানি গ্রুপ।
সামঅভআস এর ক্যাম্পেইন ম্যানেজার নিক হেইনস বলেন, 'কয়লা খাতে ব্যবসা সম্প্রসারণ ঢাকতেই আদানি সবুজ খাতে বিনিয়োগ করছেন বলে মনে হচ্ছে'।
আদানি গ্রুপের ব্যবসা আজ বহু খাতে ছড়িয়ে পড়লেও তার মূল ভিত্তি কয়লা। শিল্পগোষ্ঠীটির ৬২ শতাংশ মুনাফা আনে কয়লা ব্যবসায় জড়িত ইউনিটগুলি।
ভারতে কয়লার বিপুল মজুদ রয়েছে, মোদির 'আত্মনির্ভর' ভারত গড়ার নীতির কেন্দ্রেও আছে কয়লা। আর ভারতে বেসরকারিভাবে সর্ববৃহৎ কয়লা খনি ডেভেলপার হলেন আদানি। শুধুমাত্র ২০২০ সালের পর থেকেই তিনি আরও আটটি নতুন কয়লা ব্লক কিনেছেন সরকারের কাছ থেকে। ফলে তিনি এখন মোট ১৭টি ব্লকের অধিকারী।
২০১৯ সালে ব্লুমবার্গকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আদানি দাবি করেন, কয়লা ছাড়া ভারতের অর্থনৈতিক বিকাশের লক্ষ্যপূরণ অসম্ভব। তিনি বলেন, পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে অবশ্যই কয়লার বড় অবদান থাকতে হবে।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পর ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণকারী। বড় অর্থনীতিগুলোর মধ্যেও সবার পরে বা ২০৭০ সাল নাগাদ শূন্য কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছেন মোদি। এটি চীনের চেয়ে এক দশক এবং যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে দুই দশক পর।
আদানি দাবি করছেন, ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তাকে শক্তিশালি করতেই তিনি নবায়নযোগ্য উৎসে বিনিয়োগ চান। কিন্তু, বাস্তবতা ভিন্ন। অস্ট্রেলিয়ায় কয়লা খনি নিয়ে যে বাধা ও সমালোচনার মুখে পড়েছেন– খুব সম্ভবত সেটাই তার কয়লার ময়লা থেকে নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার চেষ্টার অন্যতম কারণ।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে বিশাল এক খনি উন্নয়নের কাজ করছে আদানি গ্রুপ। এখান থেকে ভারতে রপ্তানি করা হবে। কিন্তু, কারমাইকেল নামক এই খনি প্রকল্প নিয়ে তীব্র আপত্তি ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশটির পরিবেশবাদীরা।
এনিয়ে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সরকারি তদন্তেও দেরি হয়েছে কারমাইকেল প্রকল্প বাস্তবায়ন।
প্রকল্প এলাকায় ভূমি নিয়ে কর্তৃপক্ষকে ভুল তথ্য দেওয়ার দোষও স্বীকার করেছে আদানি গ্রুপের অস্ট্রেলীয় ইউনিট, এজন্য তাদের ক্ষতিপূরণও দিতে হয়েছে। ব্যাপক সমালোচনা থাকায় প্রকল্পে ঋণ দিতে অস্বীকার করেছে গোল্ডম্যান স্যাক্সের মতো প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক ব্যাংক। বাধ্য হয়ে আদানিকে নিজস্বভাবে অর্থায়ন করতে হয়েছে।
কয়লা তার সম্পদ আর উদ্বেগ দুইয়ের উৎস হলেও– ইন্ডিয়ান ইকোনমিক কনক্লেভে কিন্তু আদানি কয়লার কথা মোটেও তোলেননি।
তাকে চেনেন এমন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদানি তার ব্যবসা সম্পর্কে মানুষের ধারণা পাল্টাতে চান। দুনিয়ার প্রভাবশালী সম্পদ ব্যবস্থাপক ও ঋণ দাতারা নতুন যে ধারায় চলছেন, তার সাথে সংহতি প্রকাশ করতে চান। আর তাই বলছেন সবুজ জ্বালানিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা।
আদানি গ্রুপের দাবি, তাদের পাইপলাইনে রয়েছে ২০.৪ গিগাওয়াট সক্ষমতার পরিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প, যা কিনা যুক্তরাষ্ট্রের মোট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের ২০.৪ শতাংশের সমান। বর্তমানে এসব প্রকল্পের মধ্যে সচল রয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ, যার বেশিরভাগই সৌর ও বায়ু-ভিত্তিক।
একইসময় আদানি গ্রুপ কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়ে ২৬ গিগাওয়াটে উন্নীত করেছে বলে জানাচ্ছে অলাভজনক পরিবেশবাদী জোট– মার্কেট ফোর্সেস।
ইউনিয়ন অব কনসার্নড সায়েন্টিস্ট- এর জলবায়ু ও জ্বালানি বিষয়ক নীতি-পরিচালক র্যাচেল ক্লিটাস বলেন, '(সবুজ উৎসে বিনিয়োগ চেষ্টা)-কে তাদের দিক-পরিবর্তনের উদ্যোগ বলার উপায় নেই, কারণ তারা একইসাথে কয়লা ও গ্যাসেও বিনিয়োগ বাড়িয়েই চলেছে'।
'বিশ্বব্যাপী নতুন কয়লা খনি প্রকল্পে আদানি গ্রুপই সবচেয়ে বড় বেসরকারি বিনিয়োগকারী'-- যোগ করেন র্যাচেল।
- সূত্র: ব্লুমবার্গ থেকে সংক্ষেপিত