পাগলামি ও নির্মমতার শীর্ষে আইভান দ্য টেরিবল
অস্ট্রিয়ান-ব্রিটিশ ঐতিহাসিক স্যার আর্নস্ট হ্যানস গমব্রিচ লিখেছেন ১৫৮০-এর কাছাকাছি সময়ে যিনি রাশিয়ার জার ছিলেন, তিনি আইভান দ্য টেরিবল নামে পরিচিত, এটাই সঠিক পরিচয়, তার পাশে নিরোকে ম্লানই মনে হয়।
আর লেবানিজ আমেরিকান লেখক নাসিম নিকোলাস তালেব লিখেছেন, কেউ যদি আপনাকে অযাচিত পরামর্শ দিতে আসে তাকে আইভান দ্য টেরিবলকে পরামর্শ দিতে আসা ধর্মযাজকের পরিণতির কথা মনে করিয়ে দেবেন। তাতে স্বল্পমেয়াদে সুফল মিলবে। আইভান দ্য টেরিবল ওই পরামর্শদাতাকে হত্যা করেছিলেন।
নির্মমতা নৃশংসতা ও উন্মত্তার জন্য কুখ্যাত আইভান ৪র্থ ভ্যাসিলিয়েভিচ কার্যত প্রথম রুশ জার। মধ্যযুগীয় হজবরল শাসন থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে রুশ সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা এবং সংহতি সৃষ্টির কারিগর আইভান একই সাথে সমাদৃত এবং এতোটাই নিন্দিত যে তার নামের সাথে 'দ্য টেরিবল' অমোচনীয় সংযোজন হিসেবে বিশ্ব ইতিহাসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
আইভান মস্কোর শাসক তৃতীয় ভ্যাসিলির সন্তান, জন্ম ২৫ আগস্ট ১৫৩০। তিন বছর বয়সেই পিতৃহারা হন। এ সময় শাসক পরিষদ ইভানকে 'গ্র্যান্ড প্রিন্স অব মস্কো ঘোষণা করে। তার বয়স ১৬ না পেরোতেই ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়ে নেন এবং প্রথম জার হিসেবে আবির্ভুত হন। জার হিসেবে তার শাসনকালে ১৫৪৭ থেকে ১৫৮৪।
২৮ মার্চ ১৫৮৪ এক বন্ধুর সাথে দাবা খেলছিলেন আইভান। এ অবস্থায় মারাত্মক স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। দ্য ডেথ অব আইভান দ্য টেরিবল ঊনবিংশ শতকের একটি বিখ্যাত নাটক, নাট্যকার আলেক্সি কনস্টানটিনোভিচ তলস্তয়। তার প্রধান কৃতিত্ব নিষ্ঠুরতা ও পাগলামির মধ্যেও তিনি বিশাল রুশ সাম্রাজ্যের গোড়াপত্তন করেছিলেন এবং অর্থনীতি যে রাষ্ট্রের চালিকাশক্তি তাও প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। কিছু টুকরো টুকরো তথ্য ও ঘটনার কোলাজের মাধ্যমে তার ঘটনাবহুল জীবন তুলে ধরা হচ্ছে।
বিশ্বখ্যাত চিত্রপরিচালক সের্গেই আইজেনস্টাইনের 'আইভান দ্য টেরিবল' দীর্ঘ চলচ্চিত্রটি যারা দেখেছেন কিংবা যারা দেখবেন তাদের জন্য স্মর্তব্য সেখানে আইভানকে পাওয়া যাবে, টেরিবলকে পাওয়া যাবে না। স্ট্যালিনের নির্দেশে চলচ্চিত্রটি তৈরি করতে হয়েছিল, স্ট্যালিন নিজেও আইভান স্বভাবেরই মানুষ, আইজেনস্টাইনের পক্ষে অন্তত স্ট্যালিনকে ক্রোধান্বিত না করতে ভালোভাবে আইভানকেই তুলে ধরতে হয়েছে এবং ছবিটি মুক্তি পাবার পরপরই আইজেনস্টাইন দ্বিতীয়বারের মতো স্ট্যালিন পুরস্কার পেয়েছেন।
আইভানের বাবা তৃতীয় ভ্যাসিলি পরিচিত ছিলেন ভ্যাসিলি দ্য এডিকোয়েট নামে। তার রাজত্বকাল ঘটনাবহুল ছিল না, কেলেঙ্কারিও ছিল না। ভ্যাসিলির প্রথম স্ত্রী দুই দশকে তাকে কোনো সন্তান দিতে পারেননি। রুশ অভিজাত বয়াররা আগামী দিনের রাজা কে হবেন তা নিয়ে সঙ্কটের আশঙ্কা করতে শুরু করলেন। এর মধ্যে ভ্যাসিলি তার চেয়ে ৩১ বছরের ছোট তরুণী ও সুন্দরী এলেনা গ্লিনস্কায়াকে বিয়ে করলেন। কয়েক বছরেও এলেনা সন্তান ধারণ না করায় প্রশ্ন উঠতে থাকল সমস্যা কি ভ্যাসিলির?
দুঃশ্চিন্তার অবসান ঘটল ১৫৩০ সালে পুত্রসন্তানের জন্ম হলো নাম রাখা হলো আইভান। কিন্তু তার বয়স তিন বচর না হতেই একবার শিকারে গিয়ে ভ্যাসিলি মারাত্মক অসুস্থ পড়লেন, সে কালের জন্য দুরারোগ্য ব্যাধিতে মারাও গেলেন তিনি।
শাসনকার্যের জন্য অত্যন্ত ছোট আইভানকেই গ্র্যান্ড প্রিন্স অব মস্কো হতে হলো কারণ তিনিই একমাত্র রাজপুত্র। কার্যকর শাসক হলেন ভ্যাসিলির তরুণী স্ত্রী এলেনা। ভ্যাসিলির দুই ভাই ক্ষমতাসীন হতে ষড়যন্ত্র করছিলেন, এলেনা দ্রুত তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দিলেন। ভ্যাসিলি এলেনাকে বিয়ে করার আগেই এলেনার এক ষড়যন্ত্রকারী বড় ভাই মাইকেল গ্লিনস্কিকে ১২ বছরের কারাদন্ড দিয়ে জেলে পুরেছিলেন।
কিন্তু স্ত্রীর সুপারিশে তাকে কেবল মুক্তি দেননি ছেলে আইভানকে দেখাশোনার দায়িত্বও দেন। এলেনাকে মনে করতো রাজদরবারে ভাইপার বিষাক্ত সাপ।
অন্যদিকে মাইকেল গ্লিনস্কির অভিলাষ ও হাবভাব ছোট বোন এলেনা মেনে নিতে পারেনি বরং তার মনে হয়েছে এই মামা ভাগ্নে আইভানের পথে কাটা হয়ে দাঁড়াতে পারে। সুতরাং তাকে আবার কারাগারে পাঠালেন। তার নির্দেশে তার আহার সরবরাহ বন্ধ হলো এবং মাইকেলের প্রত্যাশিত মৃত্যু নিশ্চিত হলো।
এলেনা ছেলেকে বেশিদূর এগিয়ে দিতে যেতে পারেননি; ১৫৩৮ সালে মাত্র ২৮ বছর বয়সে তার মৃত্যু হলো। আইভান তখন আট বছরের এতিম বালক। এলেনাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে এমন রটনা আছে। কিছু ধরপাকড় করা হলেও তা প্রমাণিত হয়নি।
নিজেদের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে ক্ষমতাশালী বয়াররা এতো ব্যস্ত হয়ে পড়বেন যে তাদের গ্র্যান্ড প্রিন্স আইভান নিজেই লিখেছেন যে তাকেও বহুদিন অনাহারেও থাকতে হয়েছ, জীর্ণ পুরোনো পোশাক পরতে হয়েছে প্রতিশোধ নেবার স্পৃহা তখনই তার মনে জাগে রয়ারদের প্রতি তার আমৃত্যু ঘৃণার শুরুটা এভাবেই।
১৬ বছর বয়সে তিনি আর কেবল 'গ্র্যান্ড প্রিন্স অব মস্কোতে সন্তুষ্ট থাকতে চাইলেন নাÑ হতে চাইলেন সমগ্র রাশিয়ার জার। তরুণ জারের একজন সঙ্গিনী জারিৎসাও প্রয়োজন। তিনি বিয়ে করবেন জানার পর ১৫০০ সুন্দরী তরুণীকে তার সামনে হাজির করা হলেও তিনি বেছে নিলেন আনাস্তাসিয়া রোমানোভাকে। আনাস্তাসিয়া তার জীবনের শ্রেষ্ঠ পছন্দ এবং শ্রেষ্ঠ সিদ্ধান্ত।
আইভানের দুটো কন্যা সন্তান জন্মের অল্পদিনেই মারা গেল, তারপর যখন রাজপুত্র দিমিনির জন্ম হলো মস্কো উৎসব করল। কিন্তু তাকেও বাঁচানো গেল না। কিন্তু মৃত্যুর কারনটা ভিন্ন। পরিষদের পরামর্শ অগ্রাহ্য করে আইভান সপরিবার হাজার দূরের তীর্থে যাত্রা করলেন, নৌকায় নদী পার হবার সময় ঘূর্ণিবাতাসে নৌকা উল্টে গেল, বয়স্করা সবাই বেঁচে গেলেও আটমাস বয়সী জারেভিচ দিমিনি স্পন্দনহীন হয়ে রইল। আরো একটি পুত্রসন্তান হলো। নামকরণ নিজের নামে জারেভিন আইভান আইভানোভিচ। বাবার বিশেষ যতেœ অসাধারণ বুদ্ধিমান, জ্ঞানী ও সাহসী হয়ে উঠল এই রাজপুত্র। একবার মৃত্যুর হাত থেকে বাবাকেও বাঁচালেন।
আইভানের অভিষেকের বছরই দ্য গ্রেট মস্কো ফায়ার এ শহরটি তার চোখের সামনে পুড়ে গেল। ৪০০০ মৃত্যু হলো, ঘরশূন্য হলো ৮০ হাজার মানুষ।
কিছুকাল পর আইভান ভয়ঙ্কর অসুস্থ হয়ে পড়লেন। বয়াররা ঠিক করলেন আইভানের চাচাতো ভাই ভ্লাদিমিরকে জার নিযুক্ত করবেন। কিন্তু সকলকে অবাক করে আইভান সুস্থ হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং এবার ভিন্ন চেহারায়। প্রতিশোধের চেহারা। ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা বয়ারদের সরাতে শুরু করলেন, যুদ্ধ শুরু করে দিলেন সকল নিকট ও কখনো দূরবর্তী প্রতিবেশীর বিরুদ্ধেও। তিনি সাম্রাজ্য সীমানা বাড়াবেন।
১৫৬০ সালে অসুস্থ স্ত্রী এলেনা আনাস্তাসিয়ার মৃত্যু হলে তিনি সম্পূর্ণভাবে ভেঙ্গে পড়লেন। তার আচরণ হয়ে উঠল ভয়ঙ্কর। তার মনে হলো বয়াররা বিষ প্রয়োগে এলেনাকে হত্যা করেছে। তিনি নিজেও প্যারানয়াগ্রস্ত হয়ে উঠলেন। গুরুত্বপূর্ণ অভিজাতদের হত্যা করতে শুরু করলেন। তার নাম হয়ে গেল আইভান দ্য টেরিবল। স্ত্রীর মৃত্যুর কবছর পর তিনি হঠাৎ মস্কো ছেড়ে চলে এলেন। ক্রেমলিনে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিলেন, তাতে বললেন বিশ্বাসঘাতক বয়াররা রাষ্ট্রের অর্থ লুটপাট করছে এ অবস্থায় তার পক্ষে শাসন করা সম্ভব নয়।
এটি ছিল তার সাজানো নাটক, তিনি জানতেন মস্কো তার পক্ষে এবং তিনি সরে গেলে বয়াররা জনগণের পিটুনি খেয়ে দিশেহারা হয়ে যাবে। সুতরাং তারাই এসে নতজানু হয়ে তাকে ক্ষমতা না ছাড়ার আমন্ত্রণ জানাবে। তাই হলো তিনি শর্ত দিলেন ফিরে যেতে রাজি আছেন যদি তাকে সর্বময় ক্ষমতা মঞ্জুর করা হয়। তাই মঞ্জুর হলো তিনি বিশ্বাসঘাতকদের জেলে পাঠানো, হত্যা করা এবং তাদের সম্পত্তি নিজের জন্য বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা প্রাপ্ত হলেন।
'অ্যাবসলুট পাওয়ার' লাভ করে তিনি হয়ে উঠলেন ভয়ঙ্কর। নতুন ক্ষমতায় তিনি সৃষ্টি করলেন কালো পোশাকের ৬০০০ গোপন পুলিশের সংগঠন। এই পুলিশি রাজত্বের নাম অপ্রিচনিনা। আদেশ পেলে তারা আইভান দ্য টেরিবলের জন্য ভয়ঙ্কর সব সহিংসতার ঘটনা ঘটাবে। যে বয়ারগণ তাকে সর্বময় ক্ষমতা দিয়েছে তারাই হলেন আইভানের প্রথম বলি।
তাদের নেতৃবৃন্দকে হত্যা করা হলো, কাউকে নির্বাসনে পাঠানো হলো, কেউ কেউ ধর্মযাজক হয়ে বাচার প্রার্থনা জানালেন, কেউ কেউ আইভানের পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিয়ে প্রাণ বাঁচালেন। এই পুলিশ বাহিনীও বেপরোয়া হয়ে উঠল, হত্যা থেকে লুণ্ঠন সবই চালিয়ে গেলো সম্রাটের দেওয়া ক্ষমতার বলে। একই সঙ্গে জমিদার ও কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলো, দেশে খাদ্যঘাটতি দেখা দিল, দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী হলো, সাধারণ মানুষের সামনে দুর্ভিক্ষ।
নিজ দেশের অংশ হলেও নভগরদ শহরের উন্নতি তিনি ভালো চোখে দেখলেন না। সেখানকার গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সকলকে নিজের প্রকৃত ও কল্পিত শত্রু মনে করে তাদের জন্য দুটো 'ই' বরাদ্দ করলেন- ঊীবপঁঃরড়হ অথবা ঊীরষব; কেউই তার সামনে নিরাপদ নয়। পেছনের কারণ চাচাতো বাই ভ্লাদিমিরের সমর্থকরা এই শহরের।
আইভান যখন অসুস্থ বয়াররা ভ্লাদিমিরকে তার স্থলাভিষিক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সুতরাং ক্রোধ পতিত হলো ভ্লাদিমিরের উপর। রাষ্ট্রদোহিতার অভিযোগে সারাজীবনের জন্য কারারুদ্ধ হলেন ভ্লাদিমির, তার সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হলো। আইভান তার বাড়ির সামনে ডেকে এনে ভ্লাদিমিরের সন্তানদের বিষ খেতে বাধ্য করলেন। তাদের মা ও দাদি অন্য শহরে ছিলেন বলে তখনকার মতো বেঁচে যান, কিন্তু ক'দিনের মধ্যেই তাদের নৌকা ডুবিয়ে হত্যা করা হয়।
নভগরদ শহরকে শায়েস্তা করার আর একটা কারণ আইভান বের করলেন। তারা নাকি রাশিয়ার সঙ্গ ছেড়ে পোল্যান্ড লিথুয়ানিয়ার অংশ হতে চেয়েছে। আইভানের সেনাবাহিনী যে পথে গেছে রক্ত আর আগুনের স্বাক্ষর রেখে গেছে। তার সৈন্যরা যখন হত্যা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে হাত-পা বেধে কথিত রাষ্ট্রীয় শত্রুদের হিমশীতল বরফাচ্ছাদিত ভোলগা নদীতে নিক্ষেপ করতো।
যারা তষনও বরফের নিছে তলিয়ে যায়নি তাদের তলিয়ে যেতে সাহায্য করতে আইভানের সৈন্যরা স্মিডবোট নিয়ে নদীতে নামত, লাঠি দিয়ে গুতিয়ে নিচে নামিয়ে দিত। তার নির্দেশে সেখানকার কৃষি জমিতে লবণ ছিটিয়ে দেওয়া হয় যাতে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। আইভান তার পুত্র জারেভিচ আইভানকে বিয়ে করালেও বারবার তালাক দিতে বাধ্য করেছেন। তার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কাজটা কী?
১৫ নভেম্বর ১৫৮১ আইভান দ্য টেরিবল ভয়ঙ্কর খারাপ মুডে ছিলেন। তার সামনে দিয়ে গর্ভবতী পুত্রবধু যথাযথ পোশাক পরে না যাওয়ার অজুহাতে চিৎকার কওে ওঠে আইভান এবং আঘাত করেন। জারেভিচ দ্রুত সেখানে পৌছে বাবাকে সরিয়ে দিতে সক্ষম হয়। কিন্তু শশুরের আঘাতে তার গর্ভপাত হয়ে যায়। জারেভিচ চিৎকার করে বলে উঠেন, 'তুমি আমার প্রথম স্ত্রীকে অকারণে কনভেন্টে পাঠিয়েছে, আমার দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথেও তাই করেছ। এখন তুমি আমার স্ত্রীর গর্ভের পুত্রসন্তানকে হত্যা করলে।
বাবা ও ছেলের সম্পর্ক এতোটাই খারাপ হয়ে যায় যে তা প্রশমন করার কোনো সুযোগ থাকে না। আইভান দ্য টেরিবল প্রসঙ্গ বদলে ছেলেকে বলেন যে তিনি রাষ্ট্রদ্রোহী, পসকোভ অবরোধে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। জারেভিচ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন, পসকোভের জনগনের স্বাধীন থাকার অধিকার রয়েছে।
রাগে উন্মত্ত আইভান দ্য টেরিবল হাতের ভারী রাজদন্ড দিয়ে সজোরে ছেলের মাথায় আঘাত করলেন। মাথা ফেটে গেল, জারোভিচ মাটিতে পরে গেলেন, মাথা থেকে রক্ত ঝরতে থাকলো, আইভান দ্য টেরিবল হঠাৎ ছেলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে চুমো খেতে খেতে বললেন, আমি আমার ছেলেকে হত্যা করেছি, আমি আমার ছেলেকে হত্যা করেছি।
অল্পসময়ের জন্য জারোভিচের জ্ঞান ফিরলে বাবার দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, 'একজন অনুগত পুত্র ও সামান্য ভৃত্য হিসেবে আমি মারা যাচ্ছি।' তিনি আবার অজ্ঞান হয়ে গেলেন। তখনও প্রাণ ছিলো। আইভান দ্য টেরিবল অলৌকিক ফলাফলের আশায় পুত্রের জীবন ফিরে পেতে প্রার্থনা শুরু করলেন। চতুর্থ দিন জারেভিচ চিরদিনের জন্য বিদায় নিলেন।
এটা সত্যি তিনি আইভান দ্য টেবিবল, পিটার দ্য গ্রেট নন। কিন্তু এটাও সত্যি রুশ সাম্রাজ্যের স্রষ্টা পিটার দ্য গ্রেট নন, এই আইভান দ্য টেরিবল।