‘কারিগরি ত্রুটি’র কারণে দেশের কিছু অংশ দীর্ঘ অন্ধকারে
'কারিগরি ত্রুটি'র কারণে ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বিদ্যুৎহীনতায় ভুগল বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দুপুর ২টা ৫ মিনিটে জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় দেখা দেয়। এর ফলে সন্ধ্যার পর অন্ধকারে ডুবে যায় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের বড় একটি অংশ। এর আগে এরচেয়ে দীর্ঘ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্নতার ঘটনা ঘটলেও সেগুলোর অধিকাংশই ঘটেছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিদ্যুৎ সরবারহ পুনরায় চালু হতে শুরু করলেও ততক্ষণে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যায়। বিদ্যুৎহীনতার পুরো সময় ব্যবসা চালাতে হয়েছে ডিজেলচালিত জেনারেটর দিয়ে। সম্প্রতি ডিজেলের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে, এর ফলে ব্যবসায়ীদের সমস্যা আরও বেড়েছে।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ একটি ফেসবুক পোস্টে অসুবিধার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে বলেন, রাত ৮টার মধ্যে বিদ্যুৎ পুনরায় চালু হবে।
ওই পোস্টে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, 'জাতীয় গ্রিড ট্রিপ করার কারণে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ পূর্বাঞ্চলের বড় একটি এলাকায় আজ [মঙ্গলবার] দুপুর ২টা থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। আকস্মিক এই সমস্যা সমাধানে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলীবৃন্দ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।'
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. কাউসার আমীর আলী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে দেশের মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।'
সন্ধ্যা ৬টায় তিনি বলেন, ঢাকার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ফিরে এসেছে।
তবে আগারগাঁও, মিরপুর, গুলশান, বনানী ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন থাকার পরও সরবরাহ চালু করা যায়নি।
আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকও এক ফেসবুক পোস্টে রাত ৮টার মধ্যে বিদ্যুৎ ফিরে আসার কথা বলেন।
একটি ট্রিপ ঘটে যখন পাওয়ার লোড বিপজ্জনকভাবে বেশি হয়, যা গ্রিডকে সার্কিট-ব্রেকারের মতো "ট্রিপ" করতে প্ররোচিত করে।
আকস্মিক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ধাক্কা লেগেছে সর্বত্র—তৈরি পোশাক কারখানার উৎপাদনসহ বন্ধ হয়ে গেছে, বিঘ্ন হয়েছে মোবাইল ও ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক, ব্যাহত হয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা। বিদ্যুৎ না থাকায় ফুয়েল পাম্পে সিএনজি বিক্রিও বন্ধ ছিল। পানি সরবারহও বিঘ্নিত হয়েছে।
বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তা খোরশেদ আলম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, তাদের ২৫ শতাংশ উৎপাদন গ্রিডলাইন থেকে পাওয়া বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্নতা দেখা দিলে তাদের উৎপাদন ব্যাহত হয়।
তিনি বলেন, সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। বিদ্যুৎ সরবরাহ ফের চালু হওয়ার পর তার কারখানার মেশিন চালু করতে আরও তিন ঘণ্টা লেগে যায়।
খোরশদের অনুমান, এতে তার উৎপাদন লোকসান হয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।
শুধু বিদ্যুৎ না থাকার কারণেই তার দুটি কারখানার নিট ক্ষতি প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ টাকা।
প্রায় চার ঘণ্টা পর রাজধানীর উত্তরা, টঙ্গী, ধানমন্ডি, মিরপুর ডিওএইচএসসহ বিভিন্ন এলাকায় ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ ফিরে আসে।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে মানিকনগর ও হাসনাবাদ গ্রিড সাবস্টেশনের আওতাধীন ঢাকা শহরের কিছু অংশ এবং সিলেট, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহের কয়েকটি জেলায়ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ফের চালু হয়।
এদিকে আগারগাঁও, মিরপুর, গুলশান, বনানী ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ৪ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ছিল।
তবে আট ঘণ্টার বেশি সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ভোগান্তি পোহাতে হলেও, পাওয়ার গ্রিড ট্রান্সমিশন কোম্পানি অভ বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি) এ বিপর্যয়ের কারণে জানাতে পারেনি।
বিদ্যুৎবিচ্ছিন্নতার কারণ জানতে চাইলে পিজিসিবির প্রধান প্রকৌশলী (ট্রান্সমিশন) মো. মোকসেদুর রহমান বলেন, তদন্ত শেষ হওয়ার আগে কারণ জানা যাবে না।
গ্রিড ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পিজিসিবি।
পিজিসিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা বদরুদ্দোজা সুমন জানান, সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব এলাহী চৌধুরী তদন্তের নেতৃত্ব দেবেন।
ইয়াকুব ব্লুমবার্গকে বলেন, 'একটি সঞ্চালন লাইন ওভারলোড হয়ে গেছে, যার প্রভাব পড়েছে অন্য লাইনে। এটি যেন বড় সমস্যা হতে না পারে, সেজন্য আমরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রটেকশন মোডে চলে যাই।'
তিনি বলেন, সন্ধ্যায় বিদ্যুতের চাহিদা সাধারণত শীর্ষে থাকায় গ্রিড অপারেটররা বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালুর জন্য সতর্কতার সঙ্গে এগিয়েছে।
'চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে,' বলেন তিনি।
যে ব্ল্যাকআউট ঠেকানো যেত
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রে আকস্মিকভাবে উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে এই বিদ্যুৎবিভ্রাট হয়ে থাকতে পারে।
কর্মকর্তারা জানান, পিজিসিবি ৫০ মেগাহার্টজ তরঙ্গে বিদ্যুৎ সবরাহ করে। গ্রিড স্থিতিশীল রাখতে এই পরিমাণ তরঙ্গই বজায় রাখতে হয়। এ ফ্রিকোয়েন্সি যদি ৪৮ মেগাহার্টজের নিচে নেমে আসে বা ৫২-তে উঠে যায়, তাহলেই গ্রিড বিপর্যয় ঘটে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তামিম বলেন, উৎপাদন সিস্টেমে বৃহৎ বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ইউনিটগুলো যখন ভেঙে পড়ে তখনই ব্ল্যাকআউট হয়, যেমনটি হয়েছিল ২০১৪ সালে। ওই বছর ভারত থেকে ভেড়ামারা এইচভিডিসি লাইনের মাধ্যমে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসা বন্ধ হয়ে যায়।
ড. তামিম বলেন, গ্রিড অপারেটর হিসেবে সুপারভাইজরি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেটা অ্যাকুইজিশন সিস্টেমের (এসসিএডিএ) মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ত্রুটিটি বের করতে পারার কথা ছিল পিজিসিবির। কিন্তু পিজিসিবি তা করেনি।
তিনি আরও বলেন, এসসিএডিএ সিস্টেম থাকলে লাইনে ত্রুটি শনাক্ত করে জাতীয় লোড ডিসপ্যাচ সেন্টার (এনএলডিসি) থেকে ইলেকট্রনিকভাবে সিস্টেমটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারত পিজিসিবি। কিন্তু সিস্টেমটি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সংস্থাটি এখন টেলিযোগাযোগের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। 'তারা ফোন কলের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্রকে উৎপাদনে এনেছে, কেন্দ্র বন্ধও করেছে এভাবেই। এ কারণে তাৎক্ষণিকভাবে কারণ জানতে পারেনি,' বলেন তিনি।
গত ১৪ বছরে বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে, কিন্তু এখনও ট্রান্সমিশন সিস্টেম ডিজিটালাইজ করা হয়নি।
ড. তামিম বলেন, সিস্টেম আধুনিক ও ডিজিটাল করতে একমাত্র বাধা বিদ্যুৎ বিভাগের আগ্রহের অভাব, তাদের মনোযোগ শুধু উৎপাদনেই।
উৎপাদন, চিকিৎসাসেবা ব্যাহত
বিদ্যুৎহীনতার কারণে গুরুত্বপূর্ণ তৈরি পোশাকসহ শিল্প উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।
সংকটের মধ্যে কারখানা এবং অফিসগুলি কাজের সময় সংক্ষিপ্ত করেছে।
রাইজিং গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসান খান বাবু দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, তাদের জেনারেটরের ব্যাকআপ দেওয়ার সক্ষমতা মাত্র তিন ঘণ্টা। তাই তিন ঘণ্টা পর, বিকাল ৫টার দিকে তাদের গাজীপুর ও মানিকগঞ্জের সব ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ করে দিতে হয়।
এছাড়া তাদের সমস্ত স্পিনিং মিলের উৎপাদনও বন্ধ করে দিতে হয়। যদিও এসব মিলে ২৪ ঘণ্টাই কাজ চালাতে হয়। এর ফলে বড় ধাক্কা খেয়েছে তাদের আয়, ব্যাহত হয়েছে সরবরাহ চেইন।
মাহমুদ হাসান আরও বলেন, 'ওই এলাকার প্রায় সব শিল্পই এই সমস্যায় ভুগছে। পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে আমরা জানি না।'
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হলে ৫০ লিটার ডিজেল লাগে। কাজেই তিন ঘণ্টার জন্য ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হলে অতিরিক্ত ১৫০ লিটার ডিজেল কিনতে হবে। ফলে সামগ্রিক ব্যয় বেড়ে যাবে।
তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ-র সহসভাপতি রকিবুল আলম চৌধুরী টিবিএসকে স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'বিকেল দুইটার পর থেকে চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না। প্রায় তিন ঘণ্টার মতো জেনারেটরে কারখানা চালানোর পর বিকেল পাঁচটায় পোশাক কারখানাগুলো ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।'
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, 'জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে বন্দরের নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে অপারেশনাল কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে।'
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময় জেনারেটরের সাহায্যে আইসিইউ, সিসিইউ, অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছিল। তবে এ সময় বহির্বিভাগে রোগী দেখতে একটু সমস্যা হয়েছে।
মোবাইল নেটওয়ার্কে সমস্যা
দীর্ঘক্ষণের বিদ্যুৎহীনতার কারণে মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিচালনা ও ব্যান্ডউইথ ইন্টারনেট পরিষেবার রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা কল ড্রপ ও ধীরগতির ইন্টারনেটের সমস্যায় ভুগেছেন।
দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকার পর মোবাইল টাওয়ারগুলো অকেজো হয়ে পড়ে।
এদিকে অ্যাসোসিয়েশন অভ মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অভ বাংলাদেশ (এমটব) এক বিজ্ঞপ্তিতে বলে, 'জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাময়িক সময়ের জন্য টেলিযোগাযোগ সেবা বিঘ্নিত হতে পারে। এই সাময়িক পরিস্থিতির জন্য আমরা দুঃখিত।'
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অভ বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক গণমাধ্যমকে জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় এ সময় ব্যান্ডউইথের ব্যবহার ৮০ শতাংশ কমে যায়।
বিশেষ ব্যবস্থায় বিমান ফ্লাইট
ঢাকা বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, 'আমরা জেনারেটর দিয়ে বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম পরিচালনা করছি।'
'ইমিগ্রেশন, চেক ইন, লাগেজ বেল্ট, বোর্ডিং ব্রিজ সবই চালু আছে। যদিও শুরুতে আধাঘণ্টা ইমিগ্রেশন ধীরগতিতে হচ্ছিল। তবে এখন সবকিছু ঠিকমতোই চলছে,' বলেন তিনি।
বিদ্যুৎবিভ্রাট মোকাবিলার জন্য বিমানবন্দরে এয়ার কন্ডিশনারগুলোর বিদ্যুৎ ব্যবহার কমানো হয় বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ফ্লাইট বিলম্বিত হয়নি।
এর আগে সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২ মে ৩২টি জেলায় গ্রিড বিপর্যয় হয়।
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের পরিচালক উইং কমান্ডার ফরহাদ হোসেন জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় তারা জেনারেটর ব্যবহার করেছেন।
রেস্টুরেন্টগুলোর খরচ হয়েছে বেশি, আয় কম
গুলশান এলাকার মেজবান চাইনিজ অ্যান্ড বাংলা রেস্তোরাঁর মালিক মাসুদ খান টিবিএসকে বলেন, তাদের রেস্তোরাঁ জেনারেটর ব্যবহার করে চালু রাখা হয়। এতে তাদের খরচ বেড়েছে।
রাজধানীর ঝিগাতলার আফতাব রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড কাবাব হাউসের মালিক ফারুক হোসেন বলেন, 'আমাদের খরচ হয়েছে বেশি, কিন্তু বিক্রি হয়েছে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ৭০ শতাংশ কম।'
তিনি আরও জানান, এর আগে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে তাদের আইপিএস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে তারা নতুন আইপিএস স্থাপন করতে বাধ্য হন।
'ফ্যান না চললে গ্রাহকরা হোটেলে আসেন না। আমাদের বিক্রি এখন ৫০ শতাংশ কমে গেছে,' বলেন তিনি।
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির (বিআরওএ) মহাসচিব ইমরান হাসান টিবিএসকে বলেন, অসংখ্য রেস্তোরাঁ মালিকরা সারা দিন ফোন তাকে করেছেন। কেউ কেউ আইপিএস, কেউ কেউ রেফ্রিজারেটরের ত্রুটি নিয়ে অভিযোগ করেছেন।
বাংলাদেশ কমিউনিটি সেন্টার, কনভেনশন হল অ্যান্ড ক্যাটারিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ জাকির হোসেন টিবিএসকে বলেন, 'আমাদের হিমায়িত জিনিস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শিগগিরই বিদ্যুৎ সংকটের সমাধান না হলে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে।'
এর আগে সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২ মে দেশের ৩২ জেলায় গ্রিড বিপর্যয় হয়।
এছাড়া ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর বেলা ১১টা ২৭ মিনিটে সারা দেশ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। ওই সময় টানা ১২ ঘণ্টা পুরো দেশে বিদ্যুৎ ছিল না।