‘বিপদাপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যে’র তালিকায় সুন্দরবনকে রাখার সুপারিশ
সুন্দরবনসহ বিশ্বের তিনটি প্রাকৃতিক ঐতিহ্যকে ‘বিপদাপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যে’র তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করেছে প্রকৃতি রক্ষার বৈশ্বিক সংগঠন আইউসিএন।
তালিকার অন্য দুটি স্থান হচ্ছে মেক্সিকোর দ্বীপপুঞ্জ ও ক্যালিফোর্নিয়া উপসাগরের সংরক্ষিত এলাকা এবং উত্তর মেসিডোনিয়ার অহৃদ অঞ্চল।
আইইউসিএনের এই সুপারিশ গত ৭ জুন ইউনেস্কো প্রকাশ করেছে যা ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ কমিটির কাছে পেশ করা হয়। ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ কমিটি বিশ্বের ২১টি রাষ্ট্রের সরকারের সমন্বয়ে গঠিত।
এই কমিটি আগামী ৩০ জুন থেকে ১০ জুলাইয়ের মধ্যে আজারবাইজানে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বার্ষিক অধিবেশনে আইইউসিএনের সুপারিশের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
নিকট দুরত্বে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং অন্যান্য শিল্প অবকাঠামোর ফলে সুন্দরবন ঝুঁকিতে থাকায় অ্যাডভাইজরি সংস্থা আইউসিএন রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসভূমি ও বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলকে ‘বিপদাপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের’ তালিকায় রাখার সুপারিশ করেছে।
২০১৬ সালে আইইউসিএন-ইউনেসকোর যৌথ মিশনের পর সুন্দরবনের ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধ করে তা স্থানান্তর করার আহ্বান জানিয়েছিল ওয়ার্ল্ড হেরিট্যাজ কমিটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, “তা সত্বেও বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপর এর নেতিবাচক প্রভাব মূল্যায়ন না করেই এই নির্মাণকাজ অব্যাহত রাখা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে প্রবাহমান পায়রা নদীর তীরেও দুটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।”
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “সুন্দরবনের উজান এলাকায় ১৫০টির বেশী শিল্প প্রকল্প চালু আছে, যেগুলোর সাথে নৌ ও খনন কার্যক্রম পানি ও পরিবেশগত বৈচিত্রের প্রতি বাড়তি হুমকি তৈরি করছে।”
আইউসিএন জানিয়েছে, এই মুহুর্তে ১৬টি প্রাকৃতিক বিশ্ব ঐতিহ্য বিপদাপন্নের তালিকায় আছে। এ বছর কমিটির বৈঠকে আইইউসিএন ঝুঁকিতে থাকা প্রায় ৬০টি প্রাকৃতিক বিশ্ব ঐতিহ্যের ব্যাপারে সুপারিশ করেছে এবং ১০টি স্থানকে ‘সুপ্ত নতুন এলাকা’ হিসেবে মনোনীত করেছে।
আইউসিএন হলো বিশ্ব ঐতিহ্য চুক্তির অধীনে প্রকৃতি বিষয়ে অফিশিয়াল অ্যাডভাইজরি সংস্থা। সংস্থাটি বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকার জন্য মনোনীত স্থানগুলোর মূল্যায়ন করার পাশাপাশি তালিকাভুক্ত স্থানগুলোকে পর্যবেক্ষণ করে।