খুলনায় বাস বন্ধ: বিজ্ঞপ্তির ৪ বছর পর ইউনিয়ন সমাজকর্মী নিয়োগ পরীক্ষায় উপস্থিতি কম
আজ খুলনায় সব ধরনের গণপরিবহন ও লঞ্চ বন্ধ থাকায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের সমাজকর্মী (ইউনিয়ন) নিয়োগের পরীক্ষা বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার চার বছর পরে অনুষ্ঠিত হলেও তাতে আশানুররূপ পরীক্ষার্থী অংশ নেননি।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা হতে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এমসিকিউ পদ্ধতিতে ৭০ মার্কের ওই নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় এই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ না নিতে পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক।
রিয়াছাদ নামের এক পরীক্ষার্থী চার বছর আগে আবেদন করেছিলেন। তার বাড়ী ডুমুরিয়ার আঠারো মালই এলাকায়।
'বাস বন্ধ থাকায় আমি সঠিক সময়ে এসে কেন্দ্রে পৌছাতে পারিনি। চার বছর আগে এই পরীক্ষায় আবেদন করেছিলাম। আমার বয়সও শেষ, নতুন করে কোনো চাকরির পরীক্ষায় আরবেদনও করতে পারবো না। শেষ সুযোগটাও হারালাম।'
খুলনার পাইকগাছার পরীক্ষার্থী শাহানা পারভিন বলেন, আমি পরীক্ষার জন্য বেশ প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। খুলনাতে বাস বন্ধ থাকায় আর পরীক্ষা দিতে যাওয়া হয়নি।
অন্যদিকে যারা আগে থেকে শহরে এসে চাকরীর পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন, তাদেরও বাড়ীতে ফিরতে ভোগান্তি হচ্ছে নানা রকমের।
অনব মন্ডল নামের আরেক পরীক্ষার্থী বলেন, 'আমাদের বারি কয়ারাতে। খুলনা শহর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে। গতকাল খুলনাতে এসেছিলাম। আজ সকালে চাকরির পরিক্ষা দিয়েছি। তবে এখন যেতে পারছি না। বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে দেখি বাস চলছে না। তাই ভাবলাম লঞ্চে যাব। কিন্তু সেখানেও গিয়ে দেখি লঞ্চ চলছে না।'
খুলনা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক খান মোতাহার হোসেন বলেন, 'কোনো প্রকার ঝালেমা ছাড়া আমাদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৩ টির মধ্যে একটি কেন্দ্রেও কোন বিশৃঙ্খলা ঘটেনি।'
তিনি বলেন,'একযোগে বাংলাদেশে ৬৪টি জেলায় এই পরীক্ষা হচ্ছে। এটা পূর্ব ঘোষিত। খুলনায় বাস বন্ধ হলে আমাদের কিছু করার ছিল না। যারা পরীক্ষার্থী ছিল তাদের উচিত ছিল অন্তত একদিন আগে শহরে চলে আসার।'
সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৬ তম গ্রেডভুক্ত ৩য় শ্রেণীর সমাজকর্মী পদে জনবল নিয়োগেরজন্য ২০১৮ সালের ৯ জুলাই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সমাজসেবা অধিদপ্তর। তাতে খুলনা থেকে আবেদন করেন ১৩ হাজার ৩৭৬ জন প্রার্থী। তবে এতে উপস্থিত হয়েছে ৪ হাজার ৭৭৩ জন। শতকরা হিসেবে ৩৫.৬৮ শতাংশ। খুলনা শহরের ১৩টি কেন্দ্রে তাদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
খুলনায় ২১ ও ২২ অক্টোবর গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি। যদিও মালিক সমিতির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বলা হয়েছে, মহাসড়কে তিন চাকার যানবহন বন্ধ না হওয়ায় তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অন্যদিকে ১০ দফা দাবিতে লঞ্চ বন্ধ করে শ্রমিকরা।
তবে বিএনপির নেতারা দাবি করছেন, ২২ অক্টোবর তাদের বিভাগীয় গণ সমাবেশকে সামনে রেখে খুলনাকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। যাতে তাদের সমাবেশে লোকের সমাগম কম হয়, সেই চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগের নেতারা।