আরপিও সংশোধন: ইসি অবশেষে আইন মন্ত্রণালয়ের জবাব পেল
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়ার দীর্ঘ সাড়ে তিনমাস পার হবার পরও তৃতীয়বারের চিঠিতে নির্বাচন কমিশনকে জবাব দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ।
মঙ্গলবার আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আসাদুজ্জামান নূর স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি নির্বাচন কমিশনে যায় বলে নিশ্চিত করেন নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব আসাদুজ্জামান আরজু।
আরপিও বিধান সংশোধনের খসড়া প্রস্তাবের পর এর অগ্রগতি জানতে চেয়ে কমপক্ষে তিনবার আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় ইসি। কিন্তু প্রথম দুই চিঠির কোন জবাব দেয়নি আইন মন্ত্রণালয়।
সর্বশেষ ২৭ নভেম্বর আবারও আরপিও সংশোধনে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তার তথ্য চেয়ে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে জবাব দিতে সময় বেঁধে দিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন। এবার দুইদিনের মধ্যেই তার জবাব দিল আইন মন্ত্রণালয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আরপিও-এর সংশোধনী প্রস্তাবসমূহ নীতি-নির্ধারণী বিষয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান এবং বিদ্যমান আরপিও-এর বিধানসমূহের সাথে ওই প্রস্তাবসমূহ সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা সে বিষয়সহ সার্বিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬ এবং অ্যালোকেশন অব বিজনেস অ্যামঙ দি ডিফারেন্ট মিনিস্ট্রিজ অ্যান্ড ডিভিশন অনুযায়ী প্রস্তাবিত সংশোধনীসমূহ বিল আকারে প্রস্তুতপূর্বক নীতিগত/চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপনসহ জাতীয় সংসদে উত্থাপনের নিমিত্ত যাবতীয় কার্যক্রম লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের উপর ন্যস্ত। লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ সরকারের নির্বাহী বিভাগের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে সর্বদা সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে।
ইতোপূর্বে নির্বাচন কমিশন হতে আরপিও-সহ নির্বাচন সংক্রান্ত অন্যান্য যে সকল আইন, বিধি, প্রবিধি, প্রজ্ঞাপন ইত্যাদি নূতনভাবে প্রণয়ন বা সংশোধনের প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে সেসকল প্রস্তাবসমূহ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করে সূচারুরূপে সম্পন্ন করেছে।
আরপিও-এর প্রস্তাবিত সংশোধনসমূহের ওই রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়া মাত্রই বিল আকারে প্রস্তুতপূর্বক নীতিগত/চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিদ্যমান আরপিওতে যেসব সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ভোট বাতিলে ইসির ক্ষমতা ও ভোট বন্ধে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার ক্ষমতা বাড়ানো, প্রার্থীর এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখালে বা কেন্দ্রে যেতে বাধা দিলে শাস্তির বিধান, সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনে বাধা দিলে শাস্তি, দলের সর্বস্তরের কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব রাখতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় দেওয়া, দায়িত্বে অবহেলায় কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতা বাড়ানো, প্রার্থীদের আয়কর সনদ জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা।