মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থীকে পড়াতে ঘোড়ার পিঠে দুর্গম পথ পাড়ি দেন তুরস্কের এই শিক্ষক!
শিক্ষকতা খুবই চ্যালেঞ্জিং একটি পেশা। শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে যেয়ে শিক্ষকদের নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হওয়ার গল্প প্রায়ই শোনা যায়। ঠিক তেমনি একজন শিক্ষক তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল হাক্কারির বাসিন্দা মুসা টাবসান। এ শিক্ষক প্রতিদিন সুদীর্ঘ দুর্গম পথ ঘোড়ার পিঠে পাড়ি দিয়ে মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাতে স্কুলে যান। খবর ডেইলি সাবাহ।
শিক্ষক মুসার নিজের ব্যক্তিগত কোনো যানবাহন নেই। চলাচলের জন্য থাকার মতো আছে শুধু একটি ঘোড়া। তাই মুসাকে যখন নিজ বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরবর্তী একটি স্কুলে নিয়োগ দেওয়া হলো তখন তিনি তার বিশ্বস্ত ঘোড়াকে নিয়েই স্কুলে যাতায়াত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এ বিষয়ে মুসা বলেন, "সকালে তাপমাত্রা খুবই কম থাকে। কিন্তু আমি স্কুলে পৌঁছে যখন উৎফুল্ল শিক্ষার্থীদের দেখি, তখন আমি ঘোড়ার পিঠে দুর্গম পথ যাতায়াতের কষ্ট ভুলে যাই।"
মুসার স্কুলে যাওয়ার পাহাড়ি পথটি কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু। কোথাও কর্দমাক্ত, আবার কোথাও বরফে ঘেরা। কিন্তু তবুও মুসার ঘোড়াটি সাবধানতার সাথে সংক্ষিপ্ত পথে তাকে স্কুলে পৌঁছে দেয়। শিক্ষকতা পেশায় প্রাপ্তি সম্পর্কে ২৮ বছর বয়সী এ শিক্ষক বলেন, "স্কুলে বাচ্চাদের আমি যদি একটি শব্দও শেখাতে পারি তবেই আমার এ ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রাটি স্বার্থক হবে। আমার শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে মূলত আমি এত কষ্ট করি। বাচ্চারাও আমাকে ঘোড়ায় চড়ে স্কুলে আসতে দেখতে পছন্দ করে।"
গ্রীষ্মকালে যাত্রাটি উপভোগ করলেও তীব্র শীতে স্কুলে যাওয়ার পথটি খুবই বিপদজনক হয়ে ওঠে। সেসময় পথে প্রায় ১ মিটার উঁচু বরফের পিচ্ছিল আবরণ তৈরি হয় যা ঘোড়ার চলাচলের জন্য কঠিন। তাই আসন্ন তীব্র শীতে মুসা সাময়িকভাবে স্কুলের পার্শ্ববর্তী কোনো স্থানে ঘর নিয়ে থাকার পরিকল্পনা করছেন। শীত শেষে বসন্তকাল আসলে মুসা আবারও ঘোড়ায় পিঠে চলে স্কুলে যাতায়াত চালু করবেন।