নতুন বছর উদযাপন: কক্সবাজারে পর্যটকের সংখ্যা কম, কাঙ্ক্ষিত আয় হয়নি ব্যবসায়ীদের
ইংরেজি বছর ২০২২ এর বিদায় ও নতুন বছর ২০২৩ সালের বরণকে কেন্দ্র করে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক পর্যটকের দেখা পাননি সংশ্লিষ্টরা।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা জানান, "৩ দিনে পর্যটক খাতে কমপক্ষে ৩৬০ কোটি টাকা ব্যবসা হবে এমনটাই আশা করে প্রস্তুতি নিয়ে ছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু হয়েছে তার অর্ধেক মাত্র।"
খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, কক্সবাজারের পর্যটন খাতে নানান অব্যবস্থাপনা, নিম্নমানের সেবা, অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং সরকারি বিধিনিষেধের কারণে এবারের থার্টিফার্স্টে পর্যটকদের সমাগম ছিল কম।
কক্সবাজার আবাসিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, কক্সবাজারে এবার থার্টিফাস্ট নাইটে কোনো প্রকার আয়োজন ছিল না। আবাসিক প্রতিষ্ঠানের ভিতরে নিজস্ব অনুষ্ঠান আয়োজনেও ছিল কড়াকড়ি। ফলে সৈকতে আসেননি পর্যটকরা।
তিনি বলেন, "বর্ষবরণ ও বিদায়কে কেন্দ্র করে ৩ দিনে ছুটিতে প্রতিদিন গড়ে ১ লাখের বেশি পর্যটক আসবেন বলে আশা করা হয়েছিল। প্রতি বছর এমন দিনে গড়ে দেড় থেকে ২ লাখ করে পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আসতেন। কিন্তু এবার প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ হাজার পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছেন।"
তিনি আরও বলেন, পর্যটক বাড়লে এক শ্রেণির মৌসুমী ব্যবসায়ী অতিরিক্ত টাকা আদায় করে থাকেন। যার কারণে পর্যটকদের মধ্যে কক্সবাজার সম্পর্কে একটি নৈতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। এরসঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ্যবই বিতরণের কারণে পর্যটকের সংখ্যা ছিল উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
বিচ ব্যবসায়ী ও মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান জানান, গত কিছুদিন আগের টানা ছুটি এবং থার্টিফাস্ট নাইট উপলক্ষ্যে খোলা জায়গায় অনুষ্ঠান আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা থাকায় এবার আশানুরূপ পর্যটকের সমাগম হয়নি কক্সবাজারে।
"এখানে এমন কিছু ব্যবসায়ী রয়েছেন, যারা সেবা না দিয়ে টাকা আদায়ে বিশ্বাসী। পর্যটন ব্যবসা একটি সেবামূলক ব্যবসা। এখানে সেবার মান বাড়নো জরুরি," যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, "সমুদ্র সৈকতে খোলা জায়গায় অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা ছিল, ভিতরে অনুষ্ঠান আয়োজনেও ছিল প্রশাসনের বিধিনিষেধ; যদি উদযাপনই করতে না পারে, তাহলে কেন আসবে পর্যটকরা?"
কক্সবাজারের প্রতি পর্যটকদের অনীহা বাড়ার কারণ জানতে চাইলে আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা সমুদ্র সৈকতে অনুষ্ঠান আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা, অভ্যন্তরীণ অনুষ্ঠান আয়োজনেও বিধিনিষেধসহ পর্যটকদের কাছ থেকে ব্যবসায়ীদের মধ্যে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের প্রতিযোগিতা, মধ্যস্বত্বভোগীদের দ্বারা পর্যটক হয়রানি এবং সেন্টমার্টিনগামী জাহাজে যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরেন।
"পর্যটকরা এখন কক্সবাজারে আসতে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। পর্যটন ব্যবসায়ে দিন দিন অনিয়ম বাড়ছেই, এখানে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন," যোগ করেন তিনি।