জ্বালানি আমদানিতে ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবি বিজিএমইএ’র
জ্বালানি আমদানিতে এক বছরের জন্য আমদানি পর্যায়ে ডিউটিসহ সব ধরনের ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। একইসঙ্গে গ্যাসের দর নির্ধারণে আমদানি ও স্থানীয় উৎস থেকে সংগৃহীত মূল্যের সমন্বয়ে দাম নির্ধারণ এবং নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
এ দাবিতে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। একই দাবিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েও চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
অবশ্য যে কোন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে (গ্যাসসহ) ট্যাক্সের ভার খুব একটা বেশি নয় বলে দাবি করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "গ্যাসের ক্ষেত্রে নয়, যে কোন ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখা হয় ডিউটি ট্যাক্সকে। কিন্তু ইনইফিসিয়েন্সি, সিন্ডিকেট বা অপচয় আছে কিনা, তা দেখতে চায় না।"
"কিন্তু আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি, বর্ধিত পণ্যমূল্যে করের ভার অতটা বেশি পড়ে না।"
আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, জ্বালানি আমদানিতে শুল্ককর মিলিয়ে বর্তমানে তা প্রায় ৪০ শতাংশ। অবশ্য কেউ কেউ বলছেন এর চেয়েও বেশি।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, "তিন হাত ঘুরে ফাইনাল কনজ্যুমারের কাছে যাওয়া পর্যন্ত এই ট্যাক্সের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৫১ শতাংশ।"
গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি না করে সিস্টেম লস, মিটার রিডিং, অবৈধ সংযোগ, লুজ কানেকশন ইত্যাদি বন্ধ করার দাবি জানায় বিজিএমইএ।
একইসঙ্গে বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে একসাথে এতো মূল্য বৃদ্ধি না করে ক্রমান্বয়ে সহনীয় পর্যায়ে বৃদ্ধি করা হলে এ পরিস্থিতি সামাল দেয়া যেতে পারে বলে মনে করছে সংগঠনটি।
এছাড়া চিঠিতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করার দাবিও জানান সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান।
চিঠিতে বলা হয়, "অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে ইতিমধ্যেই কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।"
সার্বিক কারণে শ্রম অসন্তোষের আশঙ্কার কথা জানিয়ে এতে বলা হয়, "মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংক ঋণের সুদের হারও বেড়ে গেছে এবং আরও বাড়বে। ফলশ্রুতিতে তৈরি পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অত্যধিক বৃদ্ধিতে শ্রমিকগণ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়বে এবং শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হবে। এতে করে সামগ্রিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।"