এলসি খোলা ছাড়া ক্রুড তেল আমদানির অনুমতি চাইল বসুন্ধরা গ্রুপ
হাইলাইটস
• এলসি না খুলে আমদানির জন্য বিদ্যমান আমদানি নীতি আদেশ সংশোধনের প্রস্তাব করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেছে বসুন্ধরা গ্রুপ
• আমদানির পরিমাণের সীমা তুলে দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছে তারা
• আমদানিকারকরা নিজস্ব কারখানায় ব্যবহারের জন্য বছরে সর্বোচ্চ ৫ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি করতে পারে
• বিদ্যমান ডলার সংকট পরিস্থিতি ভোগ্যপণ্য আমদানিকারকদের এলসি ছাড়া পণ্য আমদানিতে উৎসাহিত করছে, ফলে রিজার্ভের ওপর সাময়িকভাবে চাপ কমছে
• বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, বসুন্ধরা গ্রুপের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে
বিশ্বজুড়ে চলমান অর্থনৈতিক গতি-মন্থরতায় আমদানি কঠিন হয়ে পড়েছে। এ কারণে ঋণপত্র (এলসি) খোলা ছাড়া স্পট মার্কেট থেকে যেকোনো পরিমাণ মূল্যের ক্রুড (অপরিশোধিত) জ্বালানি তেল আমদানির অনুমতি চেয়েছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ।
এজন্য বিদ্যমান আমদানি নীতি আদেশ সংশোধনের প্রস্তাব করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেছেন গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান। বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ক্রান্তিকালে প্রচলিত ঋণপত্র পদ্ধতিতে ক্রুড তেল আমদানি অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, এর ফলে গ্রুপটির তেল পরিশোধনাগারগুলোর উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যমান আমদানি নীতিতে ঋণপত্র না খুলে ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিপত্রের মাধ্যমে শিল্প খাতের আমদানিকারকরা নিজস্ব কারখানায় ব্যবহারের জন্য বছরে সর্বোচ্চ ৫ লাখ ডলার মূল্যের কাঁচামাল, মূলধনি যন্ত্রপাতি ও ফায়ার ডোর আমদানি করতে পারে। তবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ঋণপত্র ছাড়া চাল আমদানির ক্ষেত্রে এই সীমা রহিত করা আছে।
বসুন্ধরা গ্রুপ ক্রুড তেল আমদানির ক্ষেত্রেও সরকারি ব্যবস্থাপনায় চাল আমদানির মতোই সুবিধা চেয়েছে।
১২ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বসুন্ধরা গ্রুপ বলেছে, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ক্রুড তেল আমদানির ক্ষেত্রে ঋণপত্র বাদে ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে চালানপ্রতি ও সর্বোচ্চ মূল্যসীমার শর্তাবলি রহিত করে যেকোনো মূল্যের ক্রুড তেল আমদানির ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন।
ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, জ্বালানি নিরাপত্তায় বেসরকারি খাতের অবদানের গুরুত্ব বিবেচনায় সরকার বসুন্ধরা অয়েল এন্ড গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডকে তেল পরিশোধনাগার স্থাপন ও উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছে। প্রকল্পটি ২০১৯ থেকে আমদানি করা ক্রুড তেল থেকে ডিজেল, বিটুমিন, ন্যাপথা উৎপাদন ও বাজারজাত করার মাধ্যমে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় অবদান রাখছে।
এলসি খোলা ছাড়া পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ক্রেতা-বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। ওই চুক্তিপত্রের আলোকে ব্যাংক আনুষ্ঠানিকতার জন্য একটি ঋণপত্র খুললেই আমদানি করা যায়। এক্ষেত্রে চুক্তিতে উল্লেখ করা সময় অনুযায়ী ক্রেতা বিক্রেতাকে মূল্য পরিশোধ করে। এক্ষেত্রে ব্যাংকের এলসি কনফার্মেশন করার প্রয়োজন হয় না এবং ব্যাংক রপ্তানিকারককে মূল্য পরিশোধের কোনো নিশ্চয়তা দেয় না।
বিদ্যমান ডলার সংকট পরিস্থিতি ভোগ্যপণ্য আমদানিকারকদের ঋণপত্র ছাড়া পণ্য আমদানিতে উৎসাহিত করছে। এ ধরনের আমদানির ক্ষেত্রে সাধারণত দেরিতে মূল্য পরিশোধের সুযোগ থাকে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর আপাতত চাপ কমবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করা সমীচীন হবে না।