পিএইচডি শুরুর ৫২ বছর পর ডিগ্রি পেলেন শিক্ষার্থী
পিএইচডি শুরু করার ৫০ বছরেরও বেশি সময় পর একজন শিক্ষার্থী তার ডক্টরেট ডিগ্রি পেলেন।
৭৬ বছর বয়সী ড. নিক অ্যাক্সটেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ পিটসবার্গে ১৯৭০ সালে গাণিতিক সমাজবিজ্ঞানের ওপর গবেষণা শুরু করেছিলেন। কিন্তু পাঁচ বছর পরেই তিনি যুক্তরাজ্যে পিএইচডি শেষ না করেই ফিরে আসেন।
ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিস্টল তার স্ত্রী ক্লেয়ার অ্যাক্সটেন এবং ১১ বছর বয়সী নাতনী ফ্রেয়ার সামনে তাকে পিএইচডি ডিগ্রিতে ভূষিত করে।
তিনি মর্যাদাপুর্ণ 'ফুলব্রাইট স্কলারশিপ' পেলেও তার মতে তার গবেষণাটি 'অত্যন্ত কঠিন' ছিল। "কিছু কিছু সমস্যা এতটাই জটিল যে জীবনের বড় একটা অংশ এগুলোর সমাধান করতেই চলে যাবে। এগুলো চিন্তা করতে লম্বা সময় দরকার। আর এটি করতে আমার ৫০ বছর সময় লেগেছে," বলে জানান তিনি।
ড. অ্যাক্সটেনের গবেষণা থেকে মানুষের আচরণ বোঝার নতুন এক তত্ত্ব বেরিয়ে এসেছে। প্রত্যেকটি ব্যক্তির নিজস্ব চিন্তা-চেতনার ওপর এই তত্ত্ব দাঁড়িয়ে আছে। ড. অ্যাক্সটেনের বিশ্বাস অনুযায়ী, আচরণগত মনোবিজ্ঞান সম্পর্কে নতুনভাবে ভাবার সম্ভাবনা আছে এই তত্ত্বের।
দুই সন্তান এবং চারজন নাতি-নাতনী নিয়ে ড. অ্যাক্সটেনের পরিবার। ১৯৬৭ সালে লিডসের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিজের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট শুরু করেছিলেন তিনি।
তিনি জানান, "তখন সেখানে এক ধরনের বিপ্লবী আমেজ ছিল। তখন ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়। প্যারিস আর প্রাগের ছাত্র আন্দোলনের সময়। জ্যাক স্ট্র তখন লিডসের ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট। সমাজবিজ্ঞান আর মনোবিজ্ঞান তখন হঠাৎ করেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আমিও চলে গেলাম এগুলো পড়তে। কারণ আমি মানুষকে বুঝতে চেয়েছিলাম।"
২০১৬ থেকে ২০২২ সাল ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিস্টলে 'অ্যাডাল্ট স্টুডেন্ট' হিসেবে কাটানো ড. অ্যাক্সটেন জানান, তিনি তার বয়স্ক শিক্ষার্থীকালীন সময় বেশ উপভোগ করেছেন।
"দর্শনের গ্র্যাজুয়েট ছাত্রদের সবার বয়স ২৩-এর আশেপাশে, কিন্তু তারা আমাকে তাদের একজন হিসেবে আপন করে নিয়েছে। তাদের মাথায় প্রচুর আইডিয়া রয়েছে। আমি তাদের সাথে কথা বলতে পছন্দ করতাম, বিশেষ করে বিকালে পাবে যাওয়ার সময়।"
ড. অ্যাক্সটেন তার ক্যারিয়ারে বিভিন্ন কাজ করেছেন এবং তার জন্য পুরো যুক্তরাজ্যজুড়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। স্কুল টিচিং প্রোগ্রাম অক্সফোর্ড প্রাইমারি সায়েন্সের প্রধান লেখক তিনি।
সূত্র: বিবিসি